MD SALIM ALIPURDUAR

ইডি, সিবিআই না ধরলে জনতাই
ধরবে চোরদের: বললেন সেলিম

রাজ্য জেলা

MD SALIM ALIPURDUAR

তদন্তকারী সংস্থাকে চোর ধরতে হবে, জেলে ভরতে হবে। না হলে গ্রাম জাগবে, শহর জাগবে। চোর ধরবে। শুক্রবার আলিপুরদুয়ারে সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নে এই মন্তব্য করেছেন সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। 

এদিন সিপিআই(এম)’র একাধিক কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন সেলিম। বীরভূমে তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার অতিরিক্ত চার্জশিট দায়ের করেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। সেই প্রসঙ্গে প্রতিক্রিয়া চাওয়া হয় সেলিমের থেকে। 

সেলিম বলেছেন, ‘‘কালো টাকা সাদা করার নানা উপায় বের করা হয়েছে। ভরসা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। বোঝানো হয়েছে তাঁর শরণে এলে কেউ ছুঁতে পারবে না। দিল্লির সঙ্গে বন্দোবস্ত আছে। ইডি-সিবিআই ছোঁবে না, ‘সেটিং’ আছে। কিন্তু চাকরিপ্রার্থীদের লড়াই, বামপন্থীদের আন্দোলন জমায়েত এই স্লোগান তুলেছে চোরকে ধরতে হবে।’’ 

তিনি বলেন, ‘‘কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে ইডি সিবিআই’কে তদন্তে নামতে হয়েছে। এরপরও চোর না ধরলে ফের বলতে হবে ‘গ্রাম জাগাও, চোর তাড়াও’।’’ 

রাজ্যে একের পর এক দুর্নীতি সামনে এলেও নারদ, সারদা, পাচার বা নিয়োগ দুর্নীতিতে কারও শাস্তি হয়। চূড়ান্ত রায় ঘোষণার দিকে তদন্তকে নিয়ে যায়নি ইডি এবং সিবিআই। প্রতিটি ঘটনায় আদালতের নির্দেশে তদন্ত শুরু হলেই মুখ্যমন্ত্রীকে দিল্লি ছুটতে দেখা গিয়েছে। ‘দিদি-মোদী সেটিং’ ঘিরে আলোচনা তুঙ্গে উঠেছে। 

 

এর আগে সিপিআই(এম) রাজ্যের গ্রামে চোর তাড়ানোর স্লোগান তুলে একের পর এক মিছিল করেছে। রেগার টাকা থেকে আবাস দুর্নীতির বিরুদ্ধে গ্রামবাসীদের নিয়ে ঘেরাও হয়েছে পঞ্চায়েত, বিডিও দপ্তর। পুলিশ লাঠি চালিয়েছে। তবু আন্দোলন দমে যায়নি। বরং। জেলা পরিষদ অভিযান হয়েছে বামপন্থীদের। দেশের সরকারের দুর্নীতি, দুর্নীতিগ্রস্তদের তৃণমূল এবং বিজেপিতে সাবলীল যাতায়াতও এসেছে গ্রামে-শহরের প্রচারে। বিজেপি-ও কোণঠাসা হয়েছে রাজনৈতিকভাবে। যার জেরে নড়েচড়ে তল্লাশিতে নামতে হয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থাকে। 

সেলিম বলেছেন, ‘‘তদন্ত যদি ঠিকঠাক চলে তা’হলে আরও সত্য সামনে আসবে।’’ ইডি’র চার্জশিটে ডিয়ার লটারি এবং শক্তিগড়ে অনুব্রত মণ্ডলের ‘ঘরোয়া মিটিং’ প্রসঙ্গও রয়েছে। 

এই প্রসঙ্গে সেলিম বলেন, ‘‘কালো টাকা সাদা করা হয়েছে নানা উপায়ে। আমদানি-রপ্তানি সংস্থা, ব্যবসায়িক সংস্থার পাশাপাশি ডিয়ার লটারি ব্যবহার করা হয়েছে। ডিয়ার লটারিতে তৃণমূল সাংসদ এবং মুখ্যমন্ত্রীর ভাইপো অভিষেক ব্যানার্জিরও নাম রয়েছে। আর শক্তিগড়কে ল্যাংচা হাব বানাবেন বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই শক্তিগড় হয়েছে ‘ক্রিমিনাল হাব’। রাজু ঝা খুন হয়েছে এখানেই। কয়লা আর গোরু পাচারের যোগসাজশ, তৃণমূল-বিজেপি’র যোগসাজশও স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে।’’

রাজু ঝায়ের সঙ্গে একই গাড়িতে দেখা গিয়েছে অনুব্রত ঘনিষ্ঠ আবদুল লতিফ। কিন্তু লতিফ এখনও অধরা। বস্তুত সিআইডি তদন্ত ঘিরেও ধোঁয়াশা প্রচুর।  কয়লা পাচারে অভিযুক্ত রাজু, গোরু পাচারে নাম রয়েছে আবদুল লতিফের। ইডি’র চার্জশিটে বলা হয়েছে যে গোরু পাচারের কালো টাকা সাদা করার নানা কৌশল নিয়েছেন অনুব্রত। তৃণমূল নেতার তরফে এখন তাঁর সিএ’কে দায়ী করার চেষ্টা চলছে বলে খবর সূত্রের। 

এই প্রসঙ্গে এক প্রশ্নে সেলিম বলেন, ‘‘গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে সর্বোচ্চ পঞ্চায়েতে যাঁরা প্রার্থী হচ্ছে বা তৃণমূলের দোসর হয়ে কাজ করছেন, সে পুলিশ আধিকারিক বা পঞ্চায়েত প্রার্থী। সকলেরই সাবধান হওয়া উচিত। ফেঁসে গেলে কিন্তু অন্যদের ঘাড়ে দোষ চাপাবে। পঞ্চায়েতে তৃণমূলের প্রার্থী হওয়ার আগে সাবধান।’’   

Comments :0

Login to leave a comment