মুখ্যমন্ত্রী এবং বিরোধী দলনেতা একসঙ্গেই কলুষিত করছেন বিধানসভাকে। ধর্ম নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী এবং বিরোধী দলনেতার প্রতিযোগিতাকে কড়া ভর্ৎসনা করে এই মন্তব্য করেছেন সিপিআই(এম) কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী।
তিনি বলেছেন, ‘‘শুভেন্দু ‘হিন্দু’ হিন্দু’ করে বেড়াচ্ছে আর মুখ্যমন্ত্রী কোনদিকে মাথা দেন আর সেদিকে কোন ঠাকুর আছে এসব বলে গেলেন! নিজের ধর্মীয় পরিচয় বোঝাতে পদবীর উল্লেখ করলেন! পশ্চিমবাংলার রাজনীতিকে মানুষের ইস্যু থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ধর্মকে ব্যবহার করা হচ্ছে রাজনীতিতে। ধিক্কার জানাই মুখ্যমন্ত্রী এবং বিরোধী দলনেতাকে।’’
মঙ্গলবার বিধানসভায় বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারির বহিষ্কার নিয়ে চলেছে এই পর্ব। বিধানসভার বাইরে বিজেপি বিধায়করা ‘আমি হিন্দু, আমি গর্বিত’ লেখা গেঞ্জি পরে প্রতিবাদ জানান। আর মুখ্যমন্ত্রী তার পালটা নিজের হিন্দুত্ব বোঝানোর প্রয়াস চালাতে থাকেন বিধানসভার ভেতর।
চক্রবর্তী বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী বলছেন তিনি আছেন বলে পশ্চিমবঙ্গ বাংলাদেশ হয়ে যায়নি। ২০১১’র আগে তো উনি মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন না, পশ্চিমবঙ্গ বাংলাদেশ হয়ে গিয়েছিল নাকি? বরং এটা ঠিক হিন্দু মহাসভা এবং মুসলিম লিগের শক্তি ক্ষয় হয়েছে।’’ তিনি বলেন, ‘‘আজকের মতো অতীতে কখনও বিধানসভাকে ব্যবহার করে ধর্মকে নিয়ে রাজনীতি হয়নি যা তাঁর আমলে হয়েছে।’’
তিনি বলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা যা দেখল তা বাংলার সমাজজীবনের পক্ষে লজ্জার। বিরোধী দলনেতা একের পর এক মিথ্যা বলে যাচ্ছেন। অসত্য শুধু না অসভ্যের মতো বলছেন। বাংলায় হিন্দুদের হয়ে কথা বলার সুযোগ নেই, এমন সব কথা বলে গেলেন। তৃণমূলকে বিঁধবার জন্য ধর্মকে ব্যবহার করলেন। উনি রাজনীতিতে সুবিধা পাওয়ার জন্য ধর্মকে ব্যবহার করছেন। ’’
চক্রবর্তী বলেন, ‘‘আবার উলটোদিকে মুখ্যমন্ত্রী ধর্মকে ব্যবহার করছেন। তাঁকে পদবি ব্যবহার করে বলছেন যে তিনি হিন্দু! তিনি বলতে পারলেন না যে হিন্দু মুসলিম নির্বিশেষে তিনি মানুষ। ভোটের জন্য যখন সুবিধা নিতে হবে মুসলমান মুসলমান করে রেড রোডে বসে পড়েন। এর আগে কোনও মুখ্যমন্ত্রী তো করেননি। আবার কখনও হিন্দু-হিন্দু করেন ভোটের জন্য।’’
চক্রবর্তী মনে করিয়ে দেন যে বিধানসভার এই অধিবেশন আসলে বাজেট পেশ এবং তা নিয়ে আলোচনার। বিরোধী দল বিজেপি রাজ্যের মানুষের সঙ্কটের কথা বলতে নারাজ। তিনি বলেন, ‘‘ঋণ ৭ লক্ষ কোটি। কাজ নেই, শিক্ষা-স্বাস্থ্যে ভয়ঙ্কর অবস্থা। শিল্প নেই। বিরোধী দলের কাজ তো মানুষের হয়ে কতা বলা। সরকার যে যে মিথ্যা করছে তা তো বলার কথা। উলটে গোটা বাজেট অধিবেশনে দুই দল মিলে মানুষের স্বার্থ নিয়ে আলোচনাকে বন্ধ করে দিল। দুই দলই ব্যস্ত ধর্ম নিয়ে আলোচনায়।’’
Sujan Chakrabarty on Assembly
কলুষিত বিধানসভা, ধর্ম নিয়ে মাতামাতিতে বাদ মানুষের কথা, ক্ষোভ সুজন চক্রবর্তীর
×
Comments :0