প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে পঞ্চায়েতে প্রার্থী হয়েছেন তৃণমূল এবং বিজেপি’র বিরুদ্ধে। ভোট লুট, ব্যালট লুট রুখতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন বহু। নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন নিয়মিত। এমন প্রত্যেকের কাছে পৌঁছাবে সিপিআই(এম)।
দু’দিনের রাজ্য কমিটির বৈঠকের পর সাংবাদিক সম্মেলনে এই সিদ্ধান্ত জানালেন সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। তিনি বলেছেন, রাজ্য নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটের পেজ আর জেলার পেজে ফলাফল মিলছে না। ভোট পড়া আর গণনার সময় ব্যালটের সংখ্যায় বিশাল ফারাক। প্রতিটি তথ্য নথিভুক্ত করছে সিপিআই(এম)।
রাজ্য কমিটি বৈঠকে পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রাথমিক পর্যালোচনা হয়েছে। সংগঠনের সব স্তরে বিশদ পর্যালোচনা হবে। সেলিম জানিয়েছেন, রাজ্যে লুট আর দুর্নীতির বিরুদ্ধে ১ কোটির বেশি সই সংগ্রহ করেছিল সিপিআই(এম)। সইয়ের নথি শুক্রবার তুলে দেওয়া হবে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির কাছে।
তিনি জানিয়েছেন জাল সার্টিফিকেট, ভোট লুট করে জনতার রায় বদলে দেওয়া হচ্ছে। সিলমোহর বা সার্টিফিকেটই সব নয়। গ্রাম পুনর্গঠন এবং জনতার পঞ্চায়েত গড়তে তৃণমূল-বিজেপি বিরোধী সংগ্রাম হবে মানুষকে নিয়ে। প্রকল্প রূপায়নে দুর্নীতি রুখে গঠনমূলক ভূমিকা নেবে সিপিআই(এম)। লুটেরা-দুষ্কৃতী-পুলিশ যোগ রুখে সামাজিক সম্পদ রক্ষা করা হবে। লড়াই চলবে ভাগাভাগির রাজনীতির বিরুদ্ধেও।
এদিনই লোকসভায় অনাস্থা প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়েছে। সেলিম বলেন, বিজেপি সরকার কোনও বড় আলোচনা সংসদে করতে দেয়নি। বিরোধীদের টানা ধরনা, প্রতিবাদের জেরে এই প্রস্তাব গ্রহণ করতে হয়েছে। এটি বড় জয়। আলোচনায় তোলা হবে কেন মণিপুরে মে’র গোড়া থেকে হিংসা চললেও চুপ থেকেছেন প্রধানমন্ত্রী। দীর্ঘ নীরবতার পর মুখ খুললেও অন্য রাজ্যের হিংসার তুলনা টানলেন। একটি অপরাধ দিয়ে অন্য অপরাধ ঢাকা যায় না। তাতে অপরাধ বাড়ে।
বেঙ্গালুরুতে বিরোধী বৈঠক প্রসঙ্গে সেলিম বলেন, দেশ বাঁচানোর লড়াইয়ের লক্ষ্যে সেখানে প্রস্তাব নেওয়া হয়েছে। প্রস্তাবে দেশের জন্য যে যে বিপদের কথা বলা রয়েছে আমাদের বাংলার জন্যও তা খাটে। তাই বিজেপি এবং তৃণমূল দু’দলের বিরুদ্ধেই লড়াই করবে সিপিআই(এম)।
৫ আগস্ট কমরেড মুজফ্ফর আহমদের জন্মদিন পালন করা হবে মহাজাতি সদনে। ১৫ আগস্ট স্বাধীনতা দিবস পালনে দেশের ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক, যুক্তরাষ্ট্রীয়, অর্থনৈতিক সার্বভৌম এবং সামাজিক ন্যায়ের চরিত্র নিয়ে প্রচার চলবে।
সেলিম বলেন, ভারতচেতনার এই পাঁচ উপাদান স্বাধীনতার লড়াইয়েরই ফসল। যে লড়াইয়ে বাংলার ভূমিকা অনবদ্য। যে আরএসএস কোনও দিন ব্রিটিশে বিরুদ্ধে লড়েনি, তারাই এখন ভারতের এই চরিত্র ভেঙে দিতে চাইছে। বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্য ভারতভাবনার মর্মবস্তু, তাকে ধ্বংস করতে নেমেছে সংখ্যাগরিষ্ঠ আধিপত্যবাদী বিচারধারা দিয়ে। সিপিআই(এম) এই প্রয়াসকে রুখবে।
৩১ আগস্ট খাদ্য শহীদ দিবস। সিপিআই(এম) সারা মাস ধরেই নির্মম মূল্যবৃদ্ধি, খাদ্য থেকে জ্বালানি বা ওষুধ, সব ক্ষেত্রে, তার বিরুদ্ধে প্রচার জনতার কাছে নিয়ে যাবে।
Comments :0