SUJAN CHAKRABORTY

বিরোধীশূন্য ব্যবস্থা চায় তৃণমূল-বিজেপি, স্পষ্ট করছে সংসদ থেকে পঞ্চায়েত

রাজ্য

ছবি সংগ্রহ থেকে।

বিরোধীশূন্য রাজনীতি চায় এ রাজ্যে তৃণমূল আর দেশে বিজেপি। জবাবদিহি এড়াতে চায় দু’দলই। সেই কারণেই সংসদে মণিপুর নিয়ে আলোচনা এড়াতে মরিয়া বিজেপি। আর রাজ্যে পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠনের আগে অপহরণ করা হচ্ছে জয়ী বিরোধী প্রার্থীদের।

তৃণমূল এবং বিজেপি’র অগণতান্ত্রিক মনোভাবের তুলনা টেনে এই ভাষাতেই সরব হয়েছেন সিপিআই(এম) কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী। মঙ্গলবারই কলকাতা হাইকোর্ট বোর্ড গঠনের আগে দক্ষিণ ২৪ পরগনার মথুরাপুরের মতো একাধিক জায়গায় বিরোধী প্রার্থীদের নিরাপত্তা দিতে বলেছে পুলিশকে। তার মধ্যেই বিরোধী প্রার্থী ভাঙিয়ে বোর্ড দখল চালিয়ে যাচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেস।

তিনি বলেছেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী চাননি কেউ বিরোধীদের হয়ে দাঁড়ান। এরপরও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন জয়ী হয়েছেন। যাঁরা জয়ী হলেন তাঁদের সার্টিফিকেট কেড়ে নেওয়া হয়েছে। তাতেও না পেরে বোর্ড গঠনের আগে বিরোদীদের অপহরণ করা হচ্ছে। জবরদস্তি চলছে বোর্ড দখলের জন্য।’’ 

এদিন মুর্শিদাবাদেও একাধিক পঞ্চায়েতে জয়ী বিরোধী প্রার্থীদের নিরাপত্তা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। এর মধ্যে কোলাঘাটে ভোগপুর পঞ্চায়েতে বিরোধী দুই জয়ো সদস্যকে দল বদলে তৃণমূলে যোগ দেন। তৃণমূলের নেতা সৌমেন মহাপাত্র নিজে হাজির ছিলেন দলবদল পর্বে। তিনি বলেছেন আদর্শের জন্য এসেছেন। রাজ্যজুড়ে প্রশ্ন উঠছে এই বক্তব্যে। বামফ্রন্ট, আইএসএফ, কংগ্রেস নেতারা বলেছেন দু’দিন আগেও যাঁরা ভয়াবহ সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়লেন তাঁরা দর্শের জন্য কেন যাবেন এখন। ভয় দেখিয়ে, প্রভাব খাটিয়ে তৃণমূল বোর্ড দখল করছে জয়ীদের ভাঙিয়ে। 

চক্রবর্তী বলেছেন, ‘‘জবরদস্তি করে মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার, মানুষের রায়দানের মর্যাদা কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। রাজ্যের মানুষ তা মেনে নেবেন না। দেশের মানুষ যেমন বিজেপি’র জবরদস্তি মানছেন না। মণিপুর নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য সংসদে দাবি করেছিলেন বিরোধীরা। প্রধানমন্ত্রী তা করবেন না বলে অনস্থা প্রস্তাব আনতে হলো বিরোধীদের।’’

চক্রবর্তী তুলনা টেনে বলেন, ‘‘দুই দলই গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে, মানুষের অধিকারের বিরুদ্ধে। প্রতিদিনের ঘটনা তা প্রমাণ করে দিচ্ছে।’’ 

এদিন পুরুলিয়া, বাঁকুড়া থেকেও বিরোধী ভাঙিয়ে বোর্ড দখলের খবর এসেছে। চক্রবর্তী বোর্ড গঠন প্রক্রিয়ার আইনি স্বীকৃতি নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। আদালতে মামলা চলছে। হাইকোর্ট জানিয়েছে যে ফলাফল রায়ের ওপর নির্ভর করবে। ভোট লুট, জালিয়াতির বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ জমা পড়েছে। চক্রবর্তী বলেন, ‘‘১৭ তারিখ মামলার শুনানি। আর তার আগেই বোর্ড গঠনে বিজ্ঞপ্তি জারি করল রাজ্য। মতলব বোর্ড দখল করার। এই মানসিকতা নিয়েই ভাঙড়ে ১৪৪ ধারা জারি করেছে প্রশাসন। বোর্ড গঠনে যাতে বিরোধী জয়ী প্রার্থীরা অংশ নিতে না পারেন। আর তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা প্রশাসনের মদতে যাতে দাপিয়ে বেড়াতে পারে।’’ 

মঙ্গলবারই সিবিআই টাকা দিয়ে চাকরিতে ঢোকার দায়ে বাঁকুড়ার সাত শিক্ষককে তলব করেছে। সোমবার চার শিক্ষককে জেলে পাঠিয়েছে আদালত। ব্যবস্থা না নেওয়ায় সিবিআই’র কড়া সমালোচনা করেছে আদালতই। চক্রবর্তী বলেন, ‘‘মহান পেশাকে কলুষিত করছে যারা শাস্তি তাদের হবেই। জয়ী হবেন যোগ্যরা, যাঁরা অধিকারের জন্য রাস্তায় থেকে লড়ছেন। তৃণমূল সরকার এবং মুখ্যমন্ত্রী অপরাধীদের পক্ষে, চাকরি বিক্রির পক্ষে।’’    

Comments :0

Login to leave a comment