Sikkim Accident

গ্যাংটকের পথে বাস খাদে, নিহত অন্তত ৫

জেলা

দুর্ঘটনাস্থলের ছবি।

বাংলা—সিকিম সীমানায় সিকিমের রংপোয় ভয়াবহ দুর্ঘটনার কবলে পড়লো যাত্রীবাহী বাস। নিয়ন্ত্রন হারিয়ে সেতু থেকে অনেকটা নীচে তিস্তা নদীর পাশে খাদে গড়িয়ে পড়ে বাসটি। 
জানা গেছে, শনিবার দুপরে বেসরকারী যাত্রীবাহী বাসটি শিলিগুড়ি থেকে সিকিমের গ্যাঙটকের উদ্দেশ্য রওনা দেয়। গ্যাঙটক পৌঁছানোর আগেই মাঝপথে বাসটি রংপোর কাছাকাছি ভোটেভিরে এলাকায় নিয়ন্ত্রন হারিয়ে তিস্তা নদীর পাশে খাদে গড়িয়ে পড়ে। দুপুর প্রায় ৩টা ৫০মিনিট নাগাদ এই দুর্ঘটনা ঘটে। সিকিমের রংপোর অটল ব্রিজ থেকে সোজা নীচে খাদে গড়িয়ে পড়ে বাসটি। এই দুর্ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। এই সময় তিস্তা নদীতে জলস্তর অনেকটা কম থাকায় খাদে গড়িয়ে পড়ার পরে সেখানেই বড় বড় বোল্ডারে আছাড় খেয়ে পড়ে থাকে বাসটি। বড় ধরনের দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পায় বাস যাত্রীরা। ঘটনার পরেই উদ্ধারকারী দল পৌঁছে গিয়ে স্থানীয়দের সহযোগিতায় উদ্ধার কাজে নেমে পড়ে। 
অসমর্থিত সূত্র মারফৎ জানা যাচ্ছে, শিলিগুড়ি থেকে গ্যাঙটকগামী বাস দুর্ঘটনায় পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন কমপক্ষে প্রায় ১৫জন। হতাহতের সংখ্যা আরো বাড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। দুর্ঘটনার পরেই ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায় রংপোর পুলিশ প্রশাসন। জেসিবি দিয়ে উদ্ধার কার্য শুরু করা হয়। দুর্ঘটনাগ্রস্ত বাস থেকে ধীরে ধীরে উদ্ধার করা হয় যাত্রীদের। স্থানীয়রা ঝাঁপিয়ে পড়েন উদ্ধার কাজে। আহতদের অনেককে উদ্ধার করে স্থানীয় রংপো প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আহতদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে খবর মিলেছে। দুর্ঘটনাগ্রস্ত বাসটিকেও উদ্ধার করার চেষ্টা করছে কালিম্পঙ জেলা প্রশাসন। শিলিগুড়ি—গ্যাঙটকগামী বাসটিতে দুর্ঘটনাগ্রস্ত বাসটিতে পর্যটক সহ সিকিমের গ্যাঙটকের বাসিন্দারাও ছিলেন। তবে দুর্ঘটনায় মৃত ও আহতদের পরিচয় এখনও জানা সম্ভব হয়নি। কিভাবে ভয়াবহ দুর্ঘটনার মুখে পড়লো যাত্রীবাহী বাসটি। নদীর সেতুর ওপর চলন্ত অবস্থায় বাসের গতি ঠিক কতো ছিলো, নাকি যান্ত্রিক গোলেযোগের কারনে নিয়ন্ত্রন হারিয়ে ফেলেছিলেন চালক সমস্ত বিষয়গুলি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। দুর্ঘটনার কবলে পড়া গ্যাঙটকগামী যাত্রীবাহী বাসটিতে পর্যটকদের থাকার সম্ভাবনা থাকলেও, কালিম্পঙ জেলা প্রশাসনের দপ্তরের তরফে সেবিষয়ে নিশ্চিতভাবে এখনও পর্যন্ত কোন কিছু জানানো হয়নি। 
কালিম্পঙ জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, বেসরকারী যাত্রীবাহী বাসটিতে ২৪জন যাত্রী ছিলেন। কালিম্পঙের জেলা শাসক বালা সুব্রক্ষ্মণ্যম টি জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত চারজনের মৃত্যু হয়ে বলে নিশ্চিত করা হয়েছে। ২০জনের মতো আহত অবস্থায় রংপো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তবে মৃত ও আহতদের পরিসংখ্যান বিষয়ে এখনও নিশ্চিতভাবে কোন কিছু বলা সম্ভব হচ্ছে না। ঘটনার পরেই কালিম্পঙ ও সিকিম পুলিশের পক্ষে বিশাল পুলিশ বাহিনী পৌঁছে গিয়ে উদ্ধার কাজ শুরু করেছে। দুর্ঘটনার প্রকৃত কারন জানতে পুলিশ প্রশাসনের রিপোর্টের অপেক্ষা করা হচ্ছে। রিপোর্ট পাবার পরেই দুর্ঘটনার প্রকৃত কারন জানা সম্ভব হবে। 
আগামীকাল অর্থাৎ ১ডিসেম্বর থেকে উত্তর সিকিমের দ্বার পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া হবে বলে সিকিম পর্যটন দপ্তরের পক্ষে জানানো হয়েছিলো। শুধু তাই নয়, অনলাইনে লাচুং বেড়াতে যাবার জন্য গাড়ির পারমিটও দেওয়া শুরু হয়েছিলো পরিবহন দপ্তরের পক্ষে। তার আগেই শনিবার দুপুরে শিলিগুড়ি—গ্যাঙটকগামী যাত্রীবাহী বাস ভয়াবহ দুর্ঘটনার মুখে পড়ার ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।

Comments :0

Login to leave a comment