Kaliaganj violence

দায় মুখ্যমন্ত্রীরই, কালিয়াগঞ্জে দুই পরিবারের সঙ্গেও দেখা করে সিপিআই(এম) নেতৃবৃন্দ

রাজ্য

Kaliaganj violence

 


বিশ্বনাথ সিংহ


কালিয়াগঞ্জ কাণ্ডে মৃত নাবালিকা ছাত্রী এবং পুলিশের গুলিতে নিহত মৃত্যুঞ্জয় বর্মনের পরিবারের সঙ্গে দেখা করলেন সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য পলাশ দাস, উত্তর দিনাজপুর জেলা সম্পাদক আনোয়ারুল হক, সিপিআই (এম) রাজ্য কমিটির সদস্য শতরূপ ঘোষ সহ অনান্য নেতৃবৃন্দ।

সোমবার তাঁরা দুই পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন। সর্বোতভাবে পাশে থাকার আশ্বাস দেন। 

কালিয়াগঞ্জ ব্লকের বাংলাদেশ সীমান্তে রাধিকাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের চাঁদগাও গ্রামে পুলিশের গুলিতে নিহত মৃত্যুঞ্জয় বর্মনের বাড়িতে যান।

পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস সব নিহত মৃত্যুঞ্জয়ের খুনিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়ে কবরস্থ এলাকায় শ্রদ্ধা জানান নেতৃবৃন্দ।

এদিন প্রথমে নিহত নাবালিকার পরিবারের সদস্যদের সাথে কথা বলেন। নাবালিকা মৃত্যুর জন্যে বিচারবিভাগীয় তদন্তের দাবি তোলেন নেতৃবৃন্দ। সেখানেও কবরস্থ এলাকায় ফুল মালা দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। 

এলাকার পরিস্থিতি এখনো যথেষ্ট থমথমে। থানা ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগের ঘটনার পর অযথা পুলিশ গভীর রাতে সাধারণ গ্রামের মানুষের বাড়িতে গিয়ে হুমকি ধমকি দিচ্ছে, অভিযোগ স্থানীয়দের। কালিয়াগঞ্জের অনেক গ্রামে পুলিশের অত্যাচারে পুরুষশূন্য, এমনই মানুষের অভিযোগ শুনলেন নেতৃবৃন্দ। 

মৃত্যুঞ্জয় বর্মনের মৃত্যু প্রসঙ্গে শতরূপ ঘোষ সাংবাদিকদের বলেন, ‘ইউনিফর্ম পরা কিছু মানুষ এ ধরনের মতো কাজ করতে পারে তা আমাদের সভ্য সমাজে অকল্পনীয়। তল্লাশির নামে এক জলজ্যান্ত ছেলেকে কীভাবে মেরে ফেলা হয়েছে তা গোটা বাংলার মানুষ জানে। পুলিশ কেন গুলি করল তা এখনও স্পষ্ট নয়। এখনও পর্যন্ত পুলিশ এই ঘটনার কোনও ব্যাখ্যা দেয়নি। এমনকি মৃত্যুর দায় নেয়নি'। 

তাঁর দাবি, ‘যদি পুলিশ আত্মরক্ষার্থে গুলি চালাতে বাধ্যই হয়েছে তাহলে ওইদিন কয়েকজন পুলিশ আহত হওয়ার কথা। পুলিশ আজ পর্যন্ত এতটুকু বলতে পারেনি যে তল্লাশি করতে যাওয়ায় সাধারণ মানুষ তাদের অন্তত জামার একটা বোতাম ছিঁড়ে ফেলেছে!' 

ঘোষ বলেন, পুলিশের গুলি লাগার পরেও গ্রামের নিরীহ যুবক মৃত্যুঞ্জয় বেঁচে ছিলেন।  পুলিশ চাইলে গুলিবিদ্ধ মৃত্যুঞ্জয়কে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে প্রাণ বাঁচাতে পারত। তা না করে পুলিশ পালিয়ে গেল। এই ঘটনার দায় রাজ্যের পুলিশমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জিকেই দিতে হবে।’

গত ২১ এপ্রিল কালিয়াগঞ্জে বাড়ির কাছের একটি পুকুর ধার থেকে ওই কিশোরীর দেহ উদ্ধার হয়। তাঁকে ধর্ষণ করে খুন করার অভিযোগ ওঠে। তারপরেই আরএসএস'র পরিকল্পনায় বিভাজনের রাজনীতি শুরু হয়। পুলিশ ছাত্রীর দেহ নেয় টেনে হিঁচড়ে।

 

এই ঘটনায় তেতে ওঠে কালিয়াগঞ্জ। দফায় দফায় চলে পথ অবরোধ। দোকান ভাঙ্গচুর। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছোলে জনতার রোষের মুখে। তারপর থানা ঘেরাও  হয়। এমনকি, থানায় আগুনও ধরিয়ে দেওয়া হয়। মারধর করা হয় পুলিশকর্মীদের। থানা জ্বালানো কাণ্ডে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করতে গিয়ে রাধিকাপুরে পুলিশের গুলিতে মৃত্যুঞ্জয় বর্মন নামে এক যুবকের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে তোলপাড় শুরু হয় রাজ্যজুড়ে। রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা কোথায় পৌছেছে তার নমুনা এই এলাকা। 

দুই পরিবার সিবিআই তদন্ত চাইছে।

পুলিশের গুলিতে যুবকের মৃত্যুতে সিআইডি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য সরকার। 

পার্টি নেতৃবৃন্দ বলেন, স্কুলে শিক্ষক চেয়ে দাড়িভিটে নিহত দুই ছাত্র তাপস ও রাজেশ দের পরিবার সুবিচার পাননি। কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার সিবিআই ও সিআইডি'কে এখন নিজস্ব এজেন্সিতে পরিণত করেছে। জেলা বামফ্রন্ট ফের একবার দুই ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি তুলছে।

Comments :0

Login to leave a comment