Md Salim

সই করেছেন এক কোটির বেশি, পঞ্চায়েতের প্রস্তুতিতে
সই সংগ্রহ চলবে রাজ্যে

রাজ্য

সাংবাদিক সম্মেলনে মহম্মদ সেলিম। ছবি: অমিত কর

দুর্নীতির বিচার চেয়ে প্রধান বিচারপতির কাছে আবেদনে রাজ্যের এক কোটির বেশি মানুষ সই দিয়েছেন। আরও বহু মানুষ আগ্রহী সই দিতে। ২৫ জুন পর্যন্ত বাড়ি বাড়ি ঘুরে সই সংগ্রহ চালাবে সিপিআই(এম)। পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রস্তুতিতে সই সংগ্রহও চলবে।

দুদিনের রাজ্য কমিটির বৈঠক শেষে বৃহস্পতিবার এই সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। তিনি বলেছেন, ‘‘দুর্নীতির বিচার চাইছে রাজ্য। সে কারণেই রাজ্যবাসীকে একজোট থাকতে হবে। তৃণমূল এবং বিজেপি রাজ্যবাসীর একতা ভাঙতে চাইছে। যেমন মণিপুরে কৌশল করে মানুষের ঐক্য ভাঙা হয়েছে। আমাদের রাজ্যে তা হতে দেওয়া যাবে না।’’

বৃহস্পতিবার বিকেলেই পঞ্চায়েত নির্বাচন ঘোষণা করা হয়েছে। ৮ জুলাই হবে ভোট। ঘোষণার আগে সেলিম বলেন, ‘‘সংবিধান অনুযায়ী পাঁচ বছর অন্তর ভোট করতে বাধ্য রাজ্য। পৌরসভা এবং পঞ্চায়েতের নির্দিষ্ট ভোট চালু রেখেছিল বামফ্রন্ট সরকার। মানুষের কাছে পরিষেবা পৌঁছে দেওয়া হয়েছিল এই বিকেন্দ্রীকরণের মাধ্যমে। মানুষের  হাতে পৌঁছেছিল ক্ষমতা। জেলায় জেলায় পঞ্চায়েতের দিন ঘোষণার দাবিতে আন্দোলন করেছে বামপন্থীরা।’’ 

এক প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘‘ভোট কয় দফায় হবে তা দিয়ে বোঝা যায় না শান্তিপূর্ণ হবে কিনা। ভোট ঘোষণা থেকে ফল গণনা পর্যন্ত সুষ্ঠু, অবাধ, শান্তিপূর্ণ করা হবে কিনা তার ওপর নির্ভর করে। এরাজ্যে তো পুলিশ রামনবমীর মিছিল ঘিরে অশান্তি রুখতে পারছে না।’’  

সেলিম বলেছেন, ‘‘ইতিহাসের সন্ধিক্ষণে রয়েছে রাজ্য। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতিকে সই সম্বলিত আবেদন পত্র পাঠানো হবে। যাতে দুর্নীতির বিচার ত্বরাণ্বিত হয়। এক কোটির বেশি সই সংগ্রহ করা হয়ে গিয়েছে। আরও বহু মানুষ সই দিতে আগ্রহী। সেই কারণে সই সংগ্রহের মেয়াদ বাড়ানো হচ্ছে।’’

মে মাস জুড়ে সই সংগ্রহের সিদ্ধান্ত নেয় সিপিআই(এম)। কিছু জায়গায় তৃণমূল বাধা দেয়। কিন্তু বাধা উড়িয়েই বাড়ি বাড়ি যাচ্ছেন সিপিআই(এম) কর্মী এবং নেতানেত্রীরা। ব্যাপক সাড়াও মিলছে।

সেলিম বলেছেন, ‘‘সিবিআই, ইডির মতো তদন্ত সংস্থাগুলি যাতে আরও সক্রিয় হয়, বিচারব্যবস্থা যাতে ন্যায় বিচার সময়ের মধ্যে দেয়, তা চাইছেন মানুষ।’’ তিনি বলেছেন, ‘‘দুর্নীতির সঙ্গে সরাসরি জড়িত রাজ্যের শাসকদলের মাথারা। সেই কারণেই বিচার এড়াতে এক আদালত থেকে অন্য আদালতে ঘুরছেন।’’ 

বাড়ি বাড়ি সই সংগ্রহের অভিজ্ঞতা সংক্ষেপে জানিয়ে সেলিম বলেন, ‘‘দুর্নীতির কারণে বঞ্চিত মানুষ। কারা এই বিপুল দুর্নীতির পক্ষে আর কারা চাইছে সত্য উন্মোচন হোক, দেখছেন মানুষ। কারা দিল্লিতে আম পাঠিয়ে শ্লথ করতে চাইছে তদন্ত প্রক্রিয়া, কারা তদন্ত আটকাতে মামলা করে চলেছে, তা দেখছেন। প্রতিবাদ করছেন। পৌর নিয়োগে তদন্ত আটকাতেও সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছে তৃণমূল সরকার। স্পষ্টই বোঝা যাচ্ছে ওপরতলার যোগ ছিল।’’ সেলিম স্পষ্ট বলেন, ‘‘কোনওভাবেই দুর্নীতির বিচার থেকে রেহাই মিলবে না।’’ 

এদিন ইডি দপ্তরে জেরা হয়েছে তৃণমূল সাংসদ অভিষেক ব্যানার্জির স্ত্রী রুজিরা ব্যানার্জি নারুলার। বিদেশে যাওয়ার মুখে দমদম বিমানবন্দরে তাঁকে আটকেছিল অভিবাসন দপ্তর। 

দুর্নীতির প্রশ্নে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের কড়া সমালোচনা করেন সেলিম। এর আগে অভিযুক্ত হওয়া সত্ত্বেও তৃণমূল সাংসদদের বহিষ্কার নিয়ে বসেনি দলের নেতা লালকৃষ্ণ আদবানির নেতৃত্বাধীন এথিক্স কমিটি। কেন্দ্রীয় সহায়তা প্রাপ্ত প্রকল্পে দুর্নীতির তদন্ত হয়নি। সিপিআই(এম)র ডাকে আবাস, রেগা নিয়ে গ্রামে গ্রামে প্রতিবাদ হওয়ার পর কেন্দ্র নড়াচড়া করেছে। 

সেলিম বলেন, ‘‘ওপর তলার নাম এলেই কেন্দ্রীয় সংস্থার তৎপরতা কমে যায়। নারদ, সারদার সময় আমরা দেখেছি। তা করা যাবে না।’’

Comments :0

Login to leave a comment