উত্তরবঙ্গের বেশ কিছু জেলায় অতিরিক্ত বৃষ্টির জেরে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হলেও দক্ষিণ দিনাজপুরে এই বছর ব্যাপক বৃষ্টির ঘাটতি। শুকিয়ে যাচ্ছে বীজ তলার বিছন। অনাবৃষ্টিতে পাট পচানোর জল জমেনি নয়ানজুলিতে। কৃষক নিজেদের চেষ্টায় অল্প কিছু ধান রোপণ করলেও জমি ফেটে চৌচির। খাল, ডোবা, বিলে জল জমেনি। আগামীতে ধানের ফলনে বিরাট ক্ষতির আশঙ্কায় কৃষকেরা। খরা ও অনাবৃষ্টিতে সহায়ক সরকারি সাহায্য পাচ্ছেনা কৃষক। জেলা কৃষি দপ্তর ও আবহাওয়া দপ্তর সুত্রে জানা গেছে, এবার বর্ষায় মাত্র চল্লিশ শতাংশ বৃষ্টি হয়েছে। জুলাই মাসে এখনো ১৫০ মিমি বৃষ্টি কম হয়েছে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায়। বৃষ্টি না হওয়ায় দিশেহারা জেলার কৃষক সহ ক্ষেত মজুররাও। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে দাঁড়িয়েছে ধান রোপণতো দুরাস্ত আমনের বীজ তলা বাঁচানোই চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে কৃষকদের। দক্ষিণ দিনাজপুরের হিলি থেকে হরিরামপুর বা কুশমন্ডি থেকে কুমারগঞ্জ সব জায়গায়তেই একই রকম খরা চলছে।
হরিরামপুরের গোকর্ন পঞ্চায়েতের কৃষক সফিউল রহমান, বংশীহারীর সুকান্ত মন্ডল, কুশমন্ডির হেমন্ত রায় বলেন, ডিজেল কিনে ধানের জমিতে সেচ দিয়ে ফসল বাঁচানো যাবে না। জেলার বেশিরভাগ কৃষকের আর্থিক অবস্থা ভাল নয়। বৃষ্টি না হওয়ায় তাঁরা এখনও চাষ শুরু করতে পারেননি। সরকার প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহণ না করলে কৃষক বাঁচবে না। বালুরঘাট ব্লকের জলঘরের কৃষক বরুণ বর্মন, অমৃত খন্ডের লাল টুডু, ভাটপাড়ার নিখিল বর্মন বলেন, জলের অভাবে কাটা পাট শুকিয়ে নষ্ট হচ্ছে। ধানের জমি চাষ করলেও আবার শুকিয়ে যাচ্ছে। তাঁরা বলেন, মেঘ করলেও যে বৃষ্টি হচ্ছে তাতে জল জমেনি। এদিকে যারা সেচ দিয়ে ধান রোপণ করেছিল তাদের মাথায় হাত। মাটি ফেটে চৌচির লাগানো ধানের জমি। খরা ও অনাবৃষ্টি প্রসঙ্গে সারা ভারত কৃষক সভার জেলা সম্পাদক সকিরুদ্দিন আহমেদ বলেন, আমরা সম্প্রতি প্রতিটি ব্লকের বিডিওকে প্রতিনিধি মূলক ডেপুটেশন দিয়েছি কৃষকদের বিশেষ সহায়তা প্রকল্পের জন্য। তিনি বলেন, আমরা দাবি রেখেছি অতি দ্রুত প্রতিটি কৃষককে ডিজেল, সার সহ চাষের অন্যান্য সহযোগি সামগ্রী ক্রয়ে ভর্তুকির ব্যাবস্থা করতে হবে। সরকারি ভাবে যেখানে সেচের জলের জন্য বিঘাপ্রতি ট্যাক্স কাটা হয় সে সব ক্ষেত্রে মুকুব করতে হবে। আরো বেশি করে ভূগর্ভস্থ জল যাতে সেচের কাজে ব্যাবহার করা যায় তার যথাযথ ব্যাবস্থা করতে হবে। এছাড়াও কৃষকদের বিশেষ অনুদানের ব্যাবস্থা করতে হবে।
Comments :0