নতুনপাতা
জানা অজানা
কবি সাহিত্যিক গায়ক হলেন শ্রেষ্ঠ বিজ্ঞানী
তপন কুমার বৈরাগ্য
যে ছেলেটা ছোটবেলা থেকে খাতারপাতা ভরে তুলেছিলেন কবিতা গল্পে সেই ছেলেটার
ভারতের শ্রেষ্ঠ বিজ্ঞানী হওয়ার পিছনে এক অভূতপূর্ব সত্য কাহিনি
আছে।ছেলেটার জন্ম মুম্বাই-তে। ষোলো বছর বয়েসে পর্যন্ত মারাঠী ভাষায়
সুন্দর সুন্দর কবিতা লিখলেন।সেগুলো বিদ্যালয়ের ম্যাগাজিনে একের
পর এক প্রকাশিত হতে লাগলো। সাহিত্যের শিক্ষকেরা তাঁর কবিতা পড়ে
প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়ে উঠলেন। ছোটবেলা থেকে রং তুলি নিয়ে বসে
পড়লেন।আঁকলেন গাছ , পাখি পশুর অজস্র চিত্র।প্রতিটা চিত্রই ছিলো
জীবন্ত। বসে আঁকো প্রতিযোগিতায় সর্বত্রই তিনি প্রথম হতেন।
বাবা মা তাঁর জন্য ছিলেন গর্বিত। তাঁর সবচেয়ে বড় দক্ষতা ছিলো
শাস্ত্রীয় সংগীতে স্বমহিমায় উজ্জ্বল হয়ে ওঠা। তাঁর প্রিয় রাগ ছিলো
ভৈরবী।যে রাগ তিনি প্রতি ভোরবেলা তানপুরা দিয়ে গায়তেন।
তাঁর সুরেলা কণ্ঠস্বর ভোরবেলাকে মনোরম করে তুলতো।
আশপাশের লোকেরা ভোরবেলায় উঠে তাঁর গান শুনে মোহিত হয়ে
যেতেন। তিনি কয়েকবার উচ্চাঙ্গ সংগীত প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহণ
করেন এবং সর্বক্ষেত্রেই প্রথম হন। একবার তিনি শাস্ত্রীয় সংগীতে
প্রথম হয়ে সোনার মেডেল পর্যন্ত অর্জন করেছিলেন। ১৯২৭ খ্রিস্টাব্দ থেকে
তাঁর বিজ্ঞানের প্রতি আগ্রহ বেড়ে গেল।ভর্তি হলেন কেমব্রিজে।এই সময়
তিনি বিখ্যাত বিজ্ঞানী ডিয়াকের সংস্পর্শে এলেন।ডিয়াক ১৯৩৩খ্রিস্টাব্দে নোবেল পুরস্কার পান। ১৯২৮ খ্রিস্টাব্দে তিনি একটা তত্ত্ব প্রকাশ করলেন। সেটা হলো
পদার্থ বিজ্ঞানের আপেক্ষিকতা তত্ত্বীয় কোয়াটাম বলবিদ্যাজাত একটা
তরঙ্গ সমীকরণ। যা ইলেকট্রনের আচরণের পূর্ণাঙ্গ ব্যাখ্যা দেয়।
তাঁর এই সূত্র ধরে পজিট্রনের আবিষ্কার আধুনিক তত্ত্বীয় পদার্থ বিজ্ঞানের
সবচেয়ে বড় সাফল্য। ডিরাক তাঁর পথপ্রদর্শক হলেন। ভারতের এই ছেলেটা
বিদ্যুৎকণার বর্ষণের মধ্যে নতুন এক পারমাণবিক বস্তু কণার সন্ধান
পেলেন।যা আইনস্টাইনের আপেক্ষিকতাবাদ মেনে চলে।তিনি ওই
কণাগুলির নাম দেন মেসন।১৯৪০ খ্রিস্টাব্দে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের জন্য দেশে
ফিরে এলেন।গবেষণা থেমে থাকলো না।তাঁর চেষ্টায় প্রতিষ্ঠিত হলো ১৯৬৩
খ্রিস্টাব্দে মুম্বাইয়ের নিকট তারাপুরে ভারতের প্রথম পরমাণু শক্তি চুল্লি।
জীবনের শেষদিন পর্যন্ত আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি কমিশনের
বিজ্ঞান বিষয়ক কমিটির উপদেষ্টা ছিলেন। ইনি হলেন আমাদের দেশের শ্রেষ্ঠ
বিজ্ঞানী মহাজাগতিক রশ্মিতে মেসন কণার আবিষ্কারক হোমি জাহাঙ্গীর ভাবা।
Comments :0