এগতে দিতে হবে বেন্টিঙ্ক স্ট্রিট পর্যন্ত। তারপর যেতে পারে প্রতিনিধিদল। নয়তো কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলকেই আসতে হবে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কথা বলতে। এই দাবিতে সোমবার রাত আটটাতেও বিবি গাঙ্গুলি স্ট্রিটে ফিয়ার্স লেনের সামনে অবস্থান চালাচ্ছেন জুনিয়র ডাক্তাররা।
সোমবার রাতে, এই আন্দোলনের মাঝে, জানা গিয়ে সিজি কমপ্লেক্স থেকে আরজি কর হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে গাড়িতে তুলে রওনা হয়েছে সিবিআই। কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থার আধিকারিকদের গন্তব্য নিজার প্যালেস কিনা, তা নিয়ে চলছে চর্চা। সন্দীপ ঘোষকে রাজ্য সরকার সাসপেন্ড করেনি কেন, প্রতিটি প্রতিবাদে এই প্রশ্নেও সোচ্চার হচ্ছেন চিকিৎসকরা। কিছু পরেই সন্দীপ ঘোষকে সিবিআই গ্রেপ্তার করেছে বলে জানা গিয়েছে।
আর জি করে চিকিৎসক ছাত্রীর ধর্ষণ এবং হত্যার বিচার চেয়ে আন্দোলনে টানা রয়েছে চিকিৎসকরা। শনিবার জয়েন্ট প্ল্যাটফর্ম অব ডক্টরস সিবিআই দপ্তর সিজিও কমপ্লেক্স অভিযান চালায়। সোমবার জুনিয়র ডাক্তাররা লালবাজার অভিযান করেন বিনীত গোয়েলের পদত্যাগের মুখ্য দাবিটিকে সামনে রেখে। স্লোগান ওঠে: ‘প্রমাণ লোপাটে দায় কার, জবাব চাইতে লালবাজার’। মিছিলে স্লোগান উঠেছে, ‘ছিনিয়ে নিতে দিদির বিচার/ আজকে সবাই লালবাজার’।
কলেজ স্ট্রিট থেকে মিছিল শুরু হয় দুপুরে। বিবি গাঙ্গুলি স্ট্রিটের কাছে পুলিশ আগে থেকেই তিনটি ব্যারিকেড করে রাখে। মিছিল সেখানে পৌঁছালে আন্দোলনকারী ডাক্তারদের সাথে দফায় দফায় পুলিশের সাথে কথা কাটাকাটি হয়। চিকিৎসকরা প্রশ্ন তোলে খানিকটা এগিয়ে লালবাজারের মুখে কেন যেতে পারবেন না তাঁরা?
আরজি কর হাসপাতালের নির্মম কান্ডে আসল দোষীদের ধরার দাবিতে জুনিয়ার চিকিৎসকরা টানা আন্দোলন করে যাচ্ছেন। প্রধান ৫টি দাবি নিয়ে তাঁরা আন্দোলনে নেমেছেন। তাঁরা বলেছেন, হাইকোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে তদন্তে পুলিশ পুরোপুরি ব্যর্থ। ব্যর্থতার দায় নিয়ে কলকাতা পুলিশের কমিশনার বিনীত গোয়েলকে পদত্যাগ করতে হবে।
এদিন হাতে লাল গোলাপ নিয়ে আন্দোলনকারী জুনিয়ার চিকিৎসকরা লালবাজারের অভিমুখে মিছিল শুরু করেন। এই মিছিলকে আটকানোর জন্য পুলিশের তরফে আটোসাটো নিরপত্তার বলয় তৈরি করা হয়। বি বি গাঙ্গুলি স্ট্রীটে তিনটি ব্যারিকেড করে পুলিশ। কয়েকশো পুলিশ র্যাফ তৈরি রাখা হয়। আন্দোলনকারী জুনিয়ার চিকিৎসক অনিকেত মাহাতো জানান, " আমাদের আন্দোলন শান্তিপুর্ণ ও ন্যায় সঙ্গত। ন্যায় সঙ্গত দাবিতে আন্দোলন হচ্ছে, সেই আন্দোলনকে কোনও ব্যারিকেড প্রতিরোধ করতে পারে না বলেই আমার মনে করি। গণতান্ত্রিক পরিসরে পুলিশের সদর্থক ভূমিকা থাকা উচিৎ। পুলিশ আমাদের সাথে সহযোগিতা করবে বলে আমার আশা রাখছি। বাকিটা আমার পুলিশের উপর ছাড়লাম। আমাদের ২০ জনের একটি প্রতিনিধি দল যাবে কমিশনারের সাথে দেখা করতে।’’
রাতে পুলিশের আধিকারিকরা বলেন যে ওই ব্যারিকেডের সামনে থেকে ২০ জনের প্রতিনিধি দলকে লালবাজার যেতে দেওয়া হবে। কিন্তু আন্দোলনকারী জুনিয়ার চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন মিছিলকে বেন্টিং স্ট্রিট অর্থাৎ লালবাজার ১০০ মিটার আগে অবধি যাওয়ার অনুমতি দিতে হবে। জুনিয়ার চিকিৎসকরা রাতে বলছেন, যদি তাদের দাবি অনুযায়ী কমিশনার পদত্যাগ না করেন তা’হলে তাঁরা এখানে ২৪ ঘন্টা ৪৮ ঘন্টা ৭২ ঘন্টা টানা অবস্থান করবেন। এবার পরিস্থিতি কোন দিকে যায় এখন সেটাই দেখার।
Comments :0