MD SALIM MANTESHWAR

দুর্নীতিবাজ আর দাঙ্গাবাজ, দুই জঞ্জালই হটাবে লাল ঝান্ডা: সেলিম

রাজ্য জেলা

সোমবার বর্ধমানে মহম্মদ সেলিম।

শঙ্কর ঘোষাল

‘‘আমাদের কর্মীদের খুন করে লাল ঝান্ডাকে তুলে দেবে বলেছিল। কিন্তু লাল ঝান্ডাকে দমানো যায়নি। লাল ঝান্ডা আছে, থাকবেও।’’ সোমবার পূর্ব বর্ধমানের মন্তেশ্বরের কুসুমগ্রামের জনসভায় এ কথা বলেছেন সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। 

এদিন বৃষ্টির মধ্যেও হয়েছে জনসভা। সেলিম বলেছেন, রাজনীতিতে যে দুর্নীতির নামে যে জঞ্জাল হয়েছে তার অপসারণ হবে। আর দেশের সাম্প্রদায়িকতার নামে ফ্যাসিবাদ কায়েম করার যে চেষ্টা চলছে তারও অপসারণ হবে। 

সোমবারই রাজ্যে একাধিক জনসভা করেছেন বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারীও। বিধানসভার বিরোধী দলনেতা দাবি করেছিলেন, প্রকৃত বিরোধী ভূমিকা নিয়ে বিজেপি। বামপন্থীরা বা কংগ্রেস রাজ্যের তৃণমূল সরকারের বিরোধী ভূমিকা নিতে পারেনি। বিজেপি এবং শুভেন্দু অধিকারীর ভূমিকা আসলে কী, জনসভায় ব্যাখ্যা করেছেন সেলিম।

সেলিম বলেছেন‘‘শুভেন্দু যখন তৃণমূলের নেতা ছিলেন তখন তিনিই বলেছিলেন লাল ঝান্ডা কেন লাল ন্যাকড়াও রাজ্যে দেখা যাবে না। এখন সেই শুভেন্দু তৃণমূলের ঝান্ডা দিয়ে নরেন্দ্র মোদীঅমিত শাহের পা মুছছেন।’’ তিনি বলেছেন, ‘‘এত অন্যায়, জেল, জরিমানা দিয়েও লালঝাণ্ডাকে রুখে দেওয়া যায়নি। রোখা যাবে না।’’

তৃণমূল এবং বিজেপি’র পারস্পরিক বিরোধিতার চেহারা চিনিয়েছেন সেলিম। তিনি বলেছেন, ‘‘কিছু লোকজন বোঝানোর চেষ্টা করেছিল যে নবান্নের এত দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়তে হলে ছাপ্পান্ন ইঞ্চি বুকের ছাতি দরকার। তিনি বলেন,ছাপ্পান্ন ইঞ্চি ছাতি কখনো কোন মানুষের হয়? কিছু মিডিয়া বলেছিল সিপিআই(এম)-কে নাকি দেখা যাচ্ছে না। এই সব দালাল মিডিয়া সত্যকে মিথ্যা আর মিথ্যাকে সত্য বলে প্রচার করেছিল। ওরা মানুষকে ভাগ করতে চেয়েছিল। কিন্তু  লাল ঝান্ডা থাকলে মানুষকে ভাগ করা যায় না। ৩৪ বছরে এত আরএসএস বিজেপিদাঙ্গাবাজদের দেখা যায়নি।’’ 

সেলিম বলেন, ‘‘দেশ বাঁচাতে হলে লাল ঝান্ডাকেই শক্তিশালী করতে হবে। সেই কাজই মানুষ করছেন। লুটের রাজ কায়েমের জন্য আমাদের কর্মীদের খুন করা হয়েছিল। কিন্তু লাল ঝান্ডাকে দমানো যায়নি।’’ তিনি বলেন, মণিপুরের দিকে তাকিয়ে দেখুন কিভাবে জ্বলছে। সেখানে তো বিজেপি’র ডবল ইঞ্জিন সরকার, সবই ওদের। তাহলে গির্জা পুড়ছেমানুষ মারা যাচ্ছে কেন? মিলিটারিসিআরপিএফ নামিয়েও দাঙ্গা থামানো যাচ্ছে না কেন? একটা জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে আর একটা জনগোষ্ঠীকে লেলিয়ে দেওয়া হচ্ছে। গোটা দেশে হিংসার চাষ হচ্ছে। যারা গোটা দেশের জলজঙ্গলবিমান বন্দররেলখনিনিজেদের মুঠোয় এনে লুঠ করতে চায়, তারাই হিংসা ছড়াচ্ছে। এটাই দক্ষিণপন্থা। আর লাল ঝান্ডা নিয়ে এই বর্ধমানের কৃষকরা লড়েছিলেন ইংরেজের সঙ্গেজোতদার-জমিদারের বিরুদ্ধে। তেভাগা আন্দোলন হয়েছিল। বলেছিলেন লাঙ্গল যার জমি তাঁর। জমি ছিল জোতদারজমিদারের মুঠোয়যাঁরা চাষ করে তাঁদের জমি নেই। সেই মুঠো আলগা করেই কৃষকদের মধ্যে জমি বিলি করা হয়েছিল। এটাই সমতার দৃষ্টিভঙ্গি। বামপন্থীরা এভাবেই এগোয়। এখানেই ফারাক।’’ 

মহম্মদ সেলিম বলেন‘‘রাজ্যে বামফ্রন্ট সরকার আঠারো বছরের ছেলে-মেয়েদের প্রথম ভোটাধিকার দেয়। এখন তৃণমূল আঠারো বছরের ছেলে-মেয়েদের হাতে বোমা-বন্দুক তুলে দিচ্ছে পঞ্চায়েত দখল নিতে। কিন্তু মানুষ জেগে উঠেছে চোরদের উচিত শিক্ষা দেবেন ভোটাধিকার প্রয়োগ করে।’’  তিনি বলেছেন, ‘‘মন্তেশ্বরের কুসুমগ্রামে সন্ত্রাস করে সিপিআই(এম) মনোনয়ন দিতে বাধা দিয়েছে। যারা সন্ত্রাস করেছে তাদের মনে রাখা ভালো যে কালীঘাটের খুঁটি নড়বড়ে হয়ে পড়েছে। তোলাবাজলুটেরা দুর্নীতিগ্রস্তরা বিপদে পড়লে কেউ পাশে দাঁড়াবে না। মানুষ এদের উচিত শিক্ষা দেবেন।’’

এদিন সভায় সভাপতিত্ব করেন পার্টি নেতা ওসমান গনি সরকার। 

Comments :0

Login to leave a comment