MD SALIM on TMC-BJP

অধিকার কাড়ার মডেল এক, তাই লুটকে স্বীকৃতি দিচ্ছেন কেন্দ্রের মন্ত্রী

রাজ্য

ফাইল ছবি।

কেউ বিরোধিতা করলেই তাকে হেনস্তা করা হবে। সারা দেশে বিজেপি যা চালাচ্ছে বাংলায় সেই একই মডেল চালাচ্ছে তৃণমূল। সেই কারণেই দু’দলের বোঝাপড়া রয়েছে। লুটের পঞ্চায়েত ভোটকে স্বীকৃতি দিতে সে জন্যই রাজ্যে এসেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। 

শনিবার সাংবাদিক সম্মেলনে বিজেপি-তৃণমূল বোঝাপড়াকে এই ভাষায় আক্রমণ করেছেন সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। বিজেপি’র কেন্দ্রীয় পদাধিকারীদের তালিকা এদিনই প্রকাশ করেছেন বিজেপি’র জাতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা। নাম রয়েছে কেবল তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি’তে যোগ দেওয়া অনুপম হাজরার। লোকসভা ভোটের আগে দু’দলের মধ্যে ‘সাঁকো তৈরির’ ব্যবস্থার অংশ হতে পারে এই সিদ্ধান্ত, বলেছেন সেলিম। 

সেলিম বলেন, ‘‘বিজেপি এবং তৃণমূল উভয়কেই বলতে হবে যে রাজ্যের শান্তি, সম্প্রীতিকে কতটা মূল্য দিতে হবে তাদের সমঝোতার জন্য।’’ 

সেলিম বলেছেন, ‘‘বোঝাপড়া আরও স্পষ্ট হবে সামনের দিনে। এখনই দেখা যাচ্ছে বিজেপি নেতা এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ রাজ্যে এসে লোকসভা ভোটে ৩৫টি আসনের লক্ষ্য ঘোষণা করছেন। তার কিছু পরেই ইডি’র তদন্তের আওতায় থাকা তৃণমূলের নেতা পরিবারকে নিয়ে বিদেশে যাওয়ার অনুমতিও পেয়ে যাচ্ছেন। এসব এমনি এমনিই হচ্ছে না।’’ 

এদিনই রাজ্যে এসেছেন কেন্দ্রীয় ক্রীড়া এবং যুবকল্যাণ মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর। খানাকুলের মতো কয়েক জায়গায় পঞ্চায়েতে বিজয়ী প্রার্থীদের সম্বর্ধনা দেবেন তিনি। সেলিম বলেছেন, ‘‘হাইকোর্ট বলছে যে বিজয়ী বা পরাজিত এখনই ঠিক করা যাবে না। অথচ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হাজির হয়ে যাচ্ছেন বিজয়ী প্রার্থীর সম্বর্ধনায়।’’

এদিনই করণদিঘিতে মৎস্যজীবীদের জালে উঠে এসেছে ব্যালট বাস্ক। রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় কোথাও পড়ে থাকা ব্যালট বাক্স, কোথাও ব্যালট পেপার উদ্ধার হচ্ছে গোছা গোছা। সেলিম বলেছেন, ‘‘যেখানে যেখানে ব্যালট পেপার পাওয়া যাচ্ছে, কোথাও বিজেপি’র প্রতীকে ছাপ নেই।’’ এই প্রসঙ্গেই তাঁর মন্তব্য, ‘‘তৃণমূল কেবল নিজেরা জেতা জন্য ভোট লুট করেনি। বিজেপি’কে যাতে দ্বিতীয় করা যায়, লুট চালিয়েছে সেই লক্ষ্যেও।’’ তিনি বলেন, ‘‘অনুরাগ যাঁদের সম্বর্ধনা দিতে এসেছেন তাঁরা জিতেছেন তৃণমূলের বদান্যতায়।’’

অপরাধ এবং দুষ্কৃতীবাহিনীকে মদতে বিজেপি এবং তৃণমূলের রাজনীতিতে মিলের প্রসঙ্গও তুলেছেন সেলিম। তিনি বলেছেন, ‘‘এ রাজ্যে দেখুন, মহিলাদের ওপর মারাত্মক অপরাধে জড়িতরা হয় তৃণমূল নয় বিজেপি’র সঙ্গে যুক্ত। দেশের সংসদের দিকে দেখুন। ধর্ষণ, খুনের মতো মারাত্মক ফৌজদারি অপরাধে অভিযুক্ত এত বেশি সদস্য অতীতে কোনোদিন ছিল না সংসদে।’’ 

বিজেপি’র কেন্দ্রীয় পদাধিকারীর তালিকা সংক্রান্ত এক প্রশ্নে সেলিমের প্রতিক্রিয়া, ‘‘অতীতে বিজেপি যখন কোনও আসনে জিতত না এ রাজ্যে, তখনও জাতীয় সহসভাপতি করা হতো রাজ্যের নেতাদের। অথচ এবার কোনও সহসভাপতি নেই। এমন একজনকে করা হয়েছে অন্যতম সম্পাদক করা হয়েছে যিনি আধা বিজেপি আধা তৃণমূল। মুকুল রায় পন্থীদের জায়গা করে দেওয়া হচ্ছে লোকসভা ভোটের আগে তৃণমূলের সঙ্গে সাঁকো তৈরির জন্য। এই সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়ার নয়।’’ 

দেশে এবং রাজ্যে আক্রমণের চরিত্র প্রসঙ্গে সেলিম বলেছেন, ‘‘কেউ বিরোধিতা করলেই দুষ্কৃতী হানা হবে , পুলিশ আক্রান্তকে ধরবে। রাজ্য এবং কেন্দ্রে এক সঙ্গেই চলছে এই মডেল। বাংলায় যা চলছে তেমনই বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে একই কায়দায় আক্রমণ। অধিকারের ওপর আক্রমণ চলছে। এ রাজ্যে যেমন পঞ্চায়েতে প্রার্থী হওয়া থেকে ভোট দেওয়ার অধিকারের ওপর চলল আক্রমণ।’’ 

শনিবার কলকাতায় মুজফ্‌ফর আহমদ ভবনে সাংবাদিক সম্মেলন করেন সেলিম।

Comments :0

Login to leave a comment