MONDA MITHAI \ ATO BHUT KATHA – KRISHANU BHATTACHARJEE \ NATUNPATA \ 2 NOVEMBER 2024

মণ্ডা মিঠাই \ অত ভূত ভাবনা – কৃশানু ভট্টাচার্য \ নতুনপাতা \ ২ নভেম্বর ২০২৪

ছোটদের বিভাগ

MONDA MITHAI  ATO BHUT KATHA  KRISHANU BHATTACHARJEE  NATUNPATA  2 NOVEMBER 2024

মণ্ডা মিঠাই

অত ভূত ভাবনা 
কৃশানু ভট্টাচার্য্য

নতুনপাতা

ত্রৈলোক্যনাথ মুখোপাধ্যায় বলেছিলেন, 'মানুষ মরিয়া ভূত হয় আর ভূত মরিয়া মার্বেল হয়'। এইতো সদ্য ভূত চতুর্দশী গেল। তারপর আবার পশ্চিমে কায়দায় হ্যালোইনের উৎসবও ছিল। কাজেই এ সময়টায় ভূতদের ব্যস্ততা ছিল তুঙ্গে।
এমনিতে ভূতেরা খুব পরিশ্রমী। ভূত কখনো এক জায়গায় বসে থাকতে পারে না ।‌একটা না একটা কাজ তার করা চাইই চাই। ভূত নিজের লাভ নেই এমন কাজ করতেও ভালোবাসে। সেই কারণেই তো ওই 'ভূতের বেগার খাটা' প্রবাদের জন্ম। আর যে বোঝা সাধারণ মানুষ তুলতে পারে না,  ভূতেরা অনায়াসেই বোঝা তুলতে পারে। আর সেই কারণেই লোকে বলে ভূতের বোঝা।

কাজেই কাজের চাপ বাড়লে ভূতেরা খুব একটা বিরক্ত হয় না।আর ভূত তো এক রকমের নয়। কেবলমাত্র আবাগের বংশেই তো চোদ্দ রকমের ভূতের অবস্থান। আবাগে, অদ্ভুত,  কিম্ভুত,  বিচ্ছিরি, বিদঘুটে,
বিদিকিচ্ছিরি, পাজি নচ্ছার আককুটে- বাহারি রকমের ভূত।

প্রকারভেদ অনুযায়ী ভূতের চেহারাও কিন্তু নানা রকম। ‌ ভূত মানেই কদাকার নয়। সুপুরুষ ভূতও পাওয়া যায়। ভূতের নাক চ্যাপ্টা কিংবা নাক খ্যাদা -  এগুলো নিতান্তই অপপ্রচার। ভুতের চুল খোঁচা খোঁচা,তাই সে  চুলে টেরি কাটতে পারে না, এটা নিতান্তই অমূলক ধারণা।
ব্রহ্মদৈত্যের গলায় পৈতে সাদা ধপধপে অন্ধকারেও দেখা যায়। পিশাচদের মুখটা অনেকটা  একটা গাধার মত।‌ পেচোর রং নীল। মাথাটা দেহের তুলনায় একটু বড়।‌ আলেয়া অনেকটা অদৃশ্য। জলের তলায় থাকে। কন্ধকাটার আবার মুন্ডু নেই। 
প্রাণী জগতে যেমন বিপন্ন প্রাণী আছে সে রকম ভূতেদের মধ্যেও বেশ কিছু বিপন্ন ভুত আছে । যেমন ঘর দেবত্তী, ঘূর্ণি ভূত, গড়গড়ে ভুত, জাড়বুড়ো, হুতুম থুমু, সাত গেয়ে, ব্রহ্ম রাক্ষস, জটেবুড়ি সহ আরো কত কি!
অবশ্য আজকাল শহর কিংবা গ্রাম কোথায় ভূতেদের থাকার জায়গা নেই। এখন তো প্রয়োজনে ভূতকে নানা রকম উদ্ভট খাবার দাবারও খেতে হচ্ছে। চাওমিন কিংবা মোমো সবকিছুতেই ভূতদের আর অরুচি নেই। সে কারণেই ভূত চতুর্দশী আসলে ভূতেরা খুব ইমোশনাল হয়ে পড়েছে। অন্তত ৩৬৫ দিনের মধ্যে একটা দিন মানুষ ভূতকে নিয়ে ভাবছে। ‌ ভুতেদের কাছে এটা খুব একটা কম কথা নয়। ‌ আসলে প্রতিদিন 'ভূত গুলো সব গেল কোথায়? ''  হাজার এক ভূতের গল্প' , 'আজব দেশের আজব ভূত' এর মত বই ছাড়া ভূতদের আর সে রকম কোনো কদর নেই। অনেক কাল আগে, যতীন্দ্রমোহন দত্ত বলে একজন মানুষ ভৃতদের ব্যাপারে একটা একাডেমীক আলোচনা করে ছিলেন। তারপর থেকে আর ভূত নিয়ে সেরকম ভাবনা চিন্তাই বা হচ্ছে কোথায়? শুধুমাত্র ভূত সাজা নয়, ভূত নিয়ে দরকার একটু ভৌতিক ভাবনা চিন্তাও ।‌ 
( কৃতজ্ঞতা স্বীকার: যতীন্দ্রমোহন দত্ত ওরফে যম দত্ত যিনি বাংলার বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় ১৩৭০ থেকে ১৩৭৫ বঙ্গাব্দ পর্যন্ত প্রচুর পরিমাণ তথ্য সংগ্রহ করে সংকলিত করেছেন।)
 

Comments :0

Login to leave a comment