MONDA MITHI — NATUNPATA / ANABADHYA AUGUST

মণ্ডা মিঠাই / অনবদ্য আগস্ট - দুই — পল্লব মুখোপাধ্যায় / ২৬ আগস্ট

ছোটদের বিভাগ

MONDA MITHI  NATUNPATA   ANABADHYA AUGUST

মণ্ডা মিঠাই

অনবদ্য আগস্ট — দুই
পল্লব মুখোপাধ্যায়

১৯৪৬ সালের ১৬ আগস্ট কলকাতায় ঘটে ভয়াবহ সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা | এর প্রতিক্রিয়ায়
নোয়াখালী ও বিহারে দাঙ্গার আগুন ছড়িয়ে যায় | দাঙ্গাপীড়িত কলকাতায় ট্রাম শ্রমিক ইউনিয়ন-
এর কর্মীরা বেরিয়ে পড়েন রাস্তায় শান্তি মিছিলে | কমিউনিস্ট কর্মীরা দলে দলে স্কোয়াড করে
শান্তির আবেদন প্রচার করেন এবং দাঙ্গাবিধ্বস্ত এলাকা থেকে দুর্গতদের উদ্ধারে সহযোগিতা
করেন | ভাইসরয় মাউন্টব্যাটেন ঘোষণা করলেন, ১৯৪৮ সালের জুনের আগেই তিনি ভারত
বিভাগ করে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে চান | দিন স্থির হয় ১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্ট |

 ১৫ আগস্ট,১৯৪৭-এর মধ্যরাতে দিল্লিতে ক্ষমতা হস্তান্তর পর্ব অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ভারতের স্বাধীনতা ঘোষিত
হয় | কিন্তু ক্ষমতা হস্তান্তরের সেই ঐতিহাসিক মুহূর্তে গান্ধীজী রইলেন কলকাতায় | দাঙ্গাবিদ্ধস্ত
বেলেঘাটায় তিনি ছিলেন অনশনরত, শান্তিস্থাপনের উদ্দেশ্যে | বিভাজিত ভারতের স্বাধীনতার
কিছুদিনের মধ্যেই শুরু হয়ে গেল লক্ষ লক্ষ উদ্বাস্তুর আগমন | বাংলা ও পাঞ্জাব তার বেদনার ভার
বহন করে | প্রায় দুশো বছরের ঔপনিবেশিক শাসন ও শোষণে ভারতকে শুধু রিক্ত, নিঃস্ব করেই
সাধ মেটেনি ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের, যাবার সময় বিভক্ত, রক্তাক্ত করে দিয়ে গেছে | ১৯৪৭-এর
১৫ আগস্ট মধ্যরাত থেকে নতুন ভারতের নতুন যাত্রা শুরু হয় | জন্ম নিল স্বাধীন ভারত |
 

এই আগস্ট আরও নানাবিধ কারণে স্মরণীয় যার মধ্যে অন্যতম কিছু মনীষীর জন্ম, কিছু 'প্রবল
প্রাণ' -এর জন্ম | এমনই এক বিজ্ঞানসাধক, দরদী শিক্ষক, স্বদেশী ও সমাজসেবী আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র
রায় যিনি ১৮৬১ সালের ২ আগস্ট যশোহর জেলার অন্তর্গত রাডুলি-কাটিপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ
করেন | আচার্য প্রফুল্লচন্দ্রের বহুমুখী প্রতিভা দুর্লভ গুণের সমন্বয়ে উজ্জ্বল | ত্যাগ, তিতিক্ষা, প্রজ্ঞা,
মহানুভবতা ছিল তাঁর চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য | অনায়াসলব্ধ অর্থ-খ্যাতি-প্রতিষ্ঠা উপেক্ষা করে দেশ
জাতি ও সমাজের কল্যাণে তিনি মেধা, শ্রম ও সম্পদ দান করেছিলেন | আমৃত্যু বাংলা ও বাঙালির
সুখী, সমৃদ্ধময় জীবন কামনা করেছেন | দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নাৎসি বাহিনীর সোভিয়েত আক্রমণের
বিরুদ্ধে প্রতিবাদের প্রস্তাবে প্রথম স্বাক্ষর করেন তিনি | পরাধীন ভারতের গরিব, মেরুদণ্ডহীন
জাতির অসুখ সম্পর্কে তিনি অবহিত ছিলেন | আজীবনব্যাপী যে নব্যবাংলার স্বপ্ন তিনি
দেখেছিলেন, তাকে হাতে-কলমে রূপ দেওয়ার প্রচেষ্টা ও দৃষ্টান্ত তিনি রেখে গেছেন | চাকরির থেকে
ব্যবসা-বাণিজ্যে স্বনির্ভরতা অর্জনের ওপর তিনি বেশি গুরুত্ব দিতেন | স্বনিযুক্তি কর্মোদ্যোগ ও

প্রকল্পের বীজ বপন করেছিলেন দেশের মাটিতে | আচার্য প্রফুল্লচন্দ্রের জীবনদর্শন আমাদের চলার
পথের দিশা দেখাতে পারে বিশেষত এই 'মোহময় দুঃসময়ে' |

Comments :0

Login to leave a comment