মুক্তধারা | বই
কবি যখন কথাকার,
মন্দ তবু নয় সে মন্দ
সন্দীপ জানা
চোখের সামনে বয়ে চলা জীবন, মানুষজন, জীবন্ত চরিত্রগুলিকে মানসলোকেকক কল্পনার জাদুকাঠির ছোঁয়া দিয়ে লেখক অমলেন্দু বেরা তাঁর “মন্দ রুপসীর গল্প” গ্রন্থের নায়ক করে তুলেছেন; সাধারণ ছাপোষা মানুষের জীবন থেকে গভীর জীবনবোধ, সামাজিক ভাবনা ও মানবিক চেতনার জন্ম দিয়েছেন। অবসরে আনমনে স্মৃতি হাতড়াতে গিয়ে লেখক হঠাৎ খুঁজে পান বহুকাল আগে পেছনে ফেলে আসা এক বৃদ্ধার মুখ যাকে ডাইনি অপবাদ দিয়ে জঙ্গলে নির্বাসনে বাধ্য করা হয়েছিল এবং লেখক পরে তাঁকে নতুন করে আবিষ্কার করেন। ডাইনি অপবাদের আড়ালে সামাজিক নিষ্ঠুরতা একদিকে এবং ডাইনির আড়ালে এক মানুষের দরদি মন _এই দুয়ের দ্বন্দ্ব লেখক এক বিশেষ দাবি নিয়ে তুলে ধরতে চেয়েছেন।
“ এক মন্দ রুপসীর গল্প” শিরোনামের গল্পটি মূল গল্পগ্রন্থের নাম হয়ে উঠেছে তা হয়তো লেখকের কোনো বিশেষ দায়বদ্ধতা থেকে।
লেখকের এই গ্রন্থের গল্পগুলি কোনো সুনির্দিষ্ট চিত্রপটের ওপর নির্মিত নয়, বরং
পথঘাট বস্তি থেকে রাজপথ কিংবা এক হাজার বছর পরের সময়কালে পৌঁছে গিয়ে কাহিনিগুলিকে ব্যাপ্তি দিয়েছে। নারী পুরুষ সম্পর্কের উত্থান-পতন , নবীন-প্রবীণের দ্বন্দ্ব, কারও জীবনের প্রতি চূড়ান্ত টান আবার কিঞ্চিৎ অবহেলা, কোথাও অনেক আকুতি এবং যৎসামান্য প্রাপ্তি _সব মিলিয়ে এক-একটি গল্প ও তার চরিত্ররা সমাজ, জীবনের এক-একটি প্রেক্ষাপট ও বাস্তবতার ছায়াচিত্র রচনা করেছে।
কিছু মুদ্রণ প্রমাদ রয়েছে এবং সেদিকে একটু নজর দেওয়া প্রয়োজন। কিছু গল্পে চরিত্রের যথাযথ উপস্থাপনা এবং সংলাপের অনুপস্থিতিতে তা যথেষ্ট প্রাণবন্ত নয় বলে মনে হয়েছে এবং পাঠক হিসেবে কিছুটা অতৃপ্তি থেকে যায়।
চলনসই প্রচ্ছদ।তবুও সার্বিকভাবে দেখতে গেলে গ্রন্থটি অবশ্যই সমসময়ের সমাজের সাক্ষর।
“মন্দ রুপসীর গল্প”
অমলেন্দু বেরা
প্রচ্ছদ- মনোজিৎ নন্দী
প্রকাশক- পরিচয় প্রকাশন
Comments :0