Md Salim at Howrah

খেটে খাওয়া ও শিক্ষার অধিকার কাড়ছে রাজ্য আর রাজভবন: সেলিম

রাজ্য

ক্যাপশান- সাঁকরাইলের সারেঙ্গা পোলের সভায় বলছেন মহম্মদ সেলিম। ছবি – মনিরুল হক।

শুভাশিস দেব সরকার

রাজ্য সরকার ও রাজভবন যৌথ পরিকল্পনা করেই রাজ্যের সরকারি উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি তুলে দিতে চাইছে। বিশ্ববিদ্যালয় তুলে দিতে চাইছে। যাতে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সুবিধা হয়। গরিব খেটে খাওয়া পরিবারের ছেলেমেয়েরা যাতে উচ্চ শিক্ষার সুযোগ না পায়, একসঙ্গে সে দিকেই যেতে চাইছে বিজেপি এবং তৃণমূল।
বুধবার হাওড়ার সাঁকরাইলে এক জনসভায় এ কথা বলেছেন সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। পুলিশ প্রশাসনের সহযোগিতায় পঞ্চায়েতে ভোট লুটের প্রতিবাদে হয়েছে এই সমাবেশ। সেলিম বলেন, ‘‘সাধারণ মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে লড়াই গড়ে লুটেরাদের হাত থেকে পঞ্চায়েতকে মুক্ত করতে হবে।’’ 
হাওড়ার সাঁকরাইল সারেঙ্গা পোলে মানিকপুর ও সারেঙ্গা পঞ্চায়েতের ১৫ টি আসনে ফের নির্বাচনের দাবি তুলেছে এই সমাবেশ। বক্তব্য রাখেন সিপিআই(এম) কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শ্রীদীপ ভট্টাচার্য, হাওড়া জেলা সম্পাদক দিলীপ ঘোষ ও সাঁকরাইল দক্ষিণ এরিয়া কমিটির সম্পাদক সমীর মালিক। সভাপতিত্ব করেন নন্দলাল মুখার্জি। সভায় সাঁকরাইল দক্ষিণ এরিয়া কমিটির অন্তর্গত আটটি গ্রাম পঞ্চায়েতে বামপন্থী, কংগ্রেস ও আইএসএফ প্রার্থীদের সম্বর্ধনা জানানো হয়। সঙ্গীত পরিবেশন করেন বানীপুর গণনাট্য সংঘের শিল্পীরা। 
সেলিম বলেন, ‘‘রাজ্যের গরিব খেটে খাওয়া পরিবারের ছেলে মেয়েরা যাতে উচ্চ শিক্ষার সুযোগ নিতে না পারে, বিজেপি’র সেই পরিকল্পনাকে রাজ্যে বাস্তবায়িত করতে চায় তৃণমূল কংগ্রেস। লোক দেখানো বিরোধিতা করলেও রাজ্যপাল ও রাজ্য সরকার একত্রিত হয়েই কাজ করছে।’’  


সেলিম বলেন, ‘‘বিজেপি ও তৃণমূল কংগ্রেস ধর্মের ভিত্তিতে, ভাষার ভিত্তিতে মানুষের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করতে চাইছে। খেটে খাওয়া গরিব মানুষের অর্জিত অধিকার কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। আমাদের রাজ্যে এই লুট বন্ধ করার কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না রাজ্যের অপদার্থ পুলিশ। রাজ্যে দুর্নীতির প্রতিবাদে মানুষকে নিয়ে লড়াই  করছেন বামপন্থীরাই। তাই মিথ্যা মামলা, হামলা করে লাল ঝান্ডাকে শেষ করতে পারেনি তৃণমূল কংগ্রেস।’’ 
কেন্দ্র ও রাজ্য দুই সরকারই রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলি বেসরকারি মালিকদের হাতে তুলে দিতে চাইছে। সেলিম বলেন, ‘‘রাজ্যে প্রায় আট হাজার স্কুল বন্ধ হয়ে গেছে। রাজ্যপাল ও রাজ্য সরকার চক্রান্ত করে সংঘাতে বন্ধ করে দিতে চায় কলেজ, বিশ্ব বিদ্যালয়গুলি। ইতিমধ্যে এসসি, এসটি, ওবিসি  ছাত্রদের ভাতা বন্ধ করে দিয়েছে সরকার।’’ 
সেলিম বলেন, ‘‘রাজ্যে সমস্ত নিয়োগে দুর্নীতি হয়েছে। লক্ষ লক্ষ টাকার বিনিময়ে অযোগ্য লোকেরা চাকরি পেয়েছেন আর যোগ্য প্রার্থীরা বঞ্চিত হয়েছেন। রাজ্যের সমস্ত দুর্নীতির টাকা এ ঘাট ও ঘাট ঘুরে কালীঘাটে জমা হয়েছে। এদের বিরুদ্ধে জনতাকে এককাট্টা করতে হবে।’’ 


শ্রীদীপ ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিধায়কের নেতৃত্বে প্রশাসনের সহযোগিতায় সাঁকরাইল বিধানসভার অন্তর্গত পঞ্চায়েতে ভোট লুট করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। এমনকি ভোট গণনা কেন্দ্রেও বিরোধী দলের এজেন্টদের উপর হামলা করা হয়েছে। তারই প্রতিবাদে এলাকার সাধারণ মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়ে নতুন করে আত্মবিশ্বাস নিয়ে উঠে দাঁড়িয়েছেন।’’ 
ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘জোর করে পঞ্চায়েত দখল নিয়েছে শাসক দল। পঞ্চায়েতের বিভিন্ন দুর্নীতির সাথে প্রত্যক্ষ ভাবে জড়িয়ে আছে শাসক দলের নেতা কর্মীরা। জনগণের পঞ্চায়েত গঠন করতে বামপন্থীরা সাধারণ মানুষকে সাথে নিয়ে লড়াই করবে।’’ 
ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘দেশে সাম্প্রদায়িক মেরুকরণের রাজনীতি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়েরউপর আক্রমণ হচ্ছে। ধর্মের ভিত্তিতে, ভাষার ভিত্তিতে মানুষের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করতে চায় সরকার। এর বিরুদ্ধেও সাধারণ মানুষকে সাথে নিয়ে লাগাতার লড়াই আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে বামপন্থীরা।’’

Comments :0

Login to leave a comment