Kalyani Blast

গোটা রাজ্যকে মৃত্যুপুরীতে পরিণত করছেন মুখ্যমন্ত্রী: সেলিম

রাজ্য জেলা

একের পর এক বেআইনি বাজি কারখানার বিস্ফোরণে মৃত্যুর ঘটনায় স্পষ্ট হচ্ছে যে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি রাজ্যটাকে মৃত্যুপুরীতে পরিণত করছেন। শুক্রবার কল্যাণীতে বাজি কারখানায় বিস্ফোরণের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে সিপিআই(এম)’র রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম একথা বলেছেন সাংবাদিকদের। তিনি বলেছেন, স্থানীয় তৃণমূল নেতা থেকে সরকারের ওপরতলা পর্যন্ত তোলাবাজির ভাগ বণ্টন করে রাজ্যজুড়ে বেআইনি বাজির কারবার চালাচ্ছে। কোনটা বাজি, কোনটা বোমা, তার কোনও তফাতই থাকছে না। গোটা রাজ্যকে মৃত্যুপুরীতে পরিণত করছেন মুখ্যমন্ত্রী। 
এদিন বারাসতে সাংবাদিকরা সেলিমকে বিস্ফোরণের ঘটনা নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেছেন, কেন পুলিশ এগুলি বন্ধ করতে পারে না? এর আগে নীলগঞ্জে বিস্ফোরণের পর আমি ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। রাজ্যে একের পর এক এই ধরনের বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটছে, কোনটা বাজি কোনটা বোমা তার কোনও ফারাক থাকছে না।  যেখানেই বিস্ফোরণ হয়েছে মুখ্যমন্ত্রী বিয়েবাড়ির বাজি তৈরি হচ্ছিল বলে ধামাচাপা দিয়েছেন। বেআইনিভাবে বাজিই বা তৈরি হচ্ছে কী করে? দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ, পৌরসভা, পুলিশ সবাই তোলাবাজির ভাগ নিচ্ছে স্থানীয় তৃণমূলের নেতাদের অংশগ্রহণে। মৃত্যুর কারবার চলছে, সাধারণ মানুষের কোনও নিরাপত্তা নেই, তাঁদের প্রাণ যাচ্ছে।  
এই প্রসঙ্গে সিপিআই(এম)’র কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বলেছেন, এগরা, পিংলা, বজবজ, নীলগঞ্জ, মালদহ, মুর্শিদাবাদ একের পর এক বিস্ফোরণ হয়েছে। বাজির ব্যবসা বিজ্ঞানসম্মতভাবে আইন মেনে করাতে রাজ্য সরকার আগ্রহী নয় কেন? বামফ্রন্ট সরকার এরজন্যই বাজি তৈরির ক্ষেত্রে ক্লাস্টার ইন্ডাস্ট্রির উদ্যোগ নিয়েছিল। কিন্তু গত চোদ্দ বছরে তৃণমূল সরকার তার কিছুই করল না। আইনি ব্যবস্থা না করায় বেআইনি ব্যবস্থা বাড়ছে। সরকারের অপদার্থতায় মানুষ বিপদে পড়ছেন।  
এদিকে যোগ্য শিক্ষকদের চাকরি রক্ষার আন্দোলন দমাতে পুলিশের নির্যাতনের বিরুদ্ধেও সরব হয়েছেন মহম্মদ সেলিম। সাংবাদিকদের তিনি বলেছেন, আন্দোলনকারীদের মেজাজ চড়া হচ্ছে, এটা সাধারণভাবে রাজ্যের পরিবেশ পরিবর্তনের ইঙ্গিত। আমরা তাদের আন্দোলনকে স্বাগত জানাচ্ছি। এর আগে তৃণমূল আন্দোলনকারীদের মধ্যে দালাল ঢুকিয়ে আন্দোলনকে অন্যদিকে প্রবাহিত করার চেষ্টা করেছিল। কেন গতকাল মুখ্যমন্ত্রী আন্দোলনকারীদের সঙ্গে দেখা করেননি? কেন পুলিশ দিয়ে তাঁদের আক্রমণ করে থানায় আটকে রাখা হয়েছিল? যুবআন্দোলনের নেতৃত্ব মীনাক্ষী ধ্রুবরা ওঁদের পাশে দাঁড়াতে গিয়েছিলেন, আমাদের আইনজীবীরাও থাকবেন ন্যায্য দাবিতে সব প্রতিবাদীদের আন্দোলনের পাশে। টাকা খেয়ে, বিদেশে টাকা পাঠিয়ে মমতা ব্যানার্জির পরিবার এরাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থাকে চৌপাট করেছেন। সমস্যার সমাধান করতে আদালত তথ্য চাইলেও এখন রাজ্য সরকার ও শিক্ষা দপ্তর তথ্য দিচ্ছে না। মুখ্যমন্ত্রী সহ গোটা শিক্ষা দপ্তর যুক্ত বলেই ‘কে যোগ্য, কে অযোগ্য’ তা বাছাই করা যাচ্ছে না। শিক্ষাকে বাঁচাতে হলে এই অপদার্থ তৃণমূল সরকারকে ছুঁড়ে ফেলতে হবে। 
আর জি কর আন্দোলনেও প্রতিবাদ আবারও তীব্র হবে বলে জানিয়েছেন সেলিম। কেবল সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয়কে ফাঁসি দেওয়ার জন্য রাজ্য সরকারের সক্রিয়তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেছেন, রাজ্য সরকার আদালতে গেছিল কেন? মমতা ব্যানার্জি আর অভিষেক ব্যানার্জি শুরু থেকে একজনকে শিখণ্ডী সাজিয়ে ফাঁসিতে কিংবা এনকাউন্টারে মেরে দিতে চেয়েছে যাতে সাক্ষিসাবুদ আর না থাকে, সত্য ধামাচাপা দেওয়া যায়।
 

Comments :0

Login to leave a comment