প্রতীম দে
দক্ষিণ ২৪ পরগনার আমতলা এলাকায় সিপিআই(এম) দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা ২৬তম সম্মেলন উপলক্ষে প্রকাশ্য সমাবেশের ডাক দেওয়া হয়েছিল। আমতলার সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সিপিআই(এম) কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবতী ,শমীক লাহিড়ী, যুব নেত্রী মীনাক্ষী মুখাৰ্জী সিপিআইএম নেতা প্রতিকুর রহমান। এই সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা সম্পাদক রতন বাগচী।
সমাবেশে মীনাক্ষী বলেন, "এই সমাবেশ কোন ভাইপোর মডেলের নয়। মানুষের সমাবেশ। লড়াই হবে জেলা জুড়ে, কী ভেবেছে পুলিশ আছে বলে চমকাবে, পুলিশ না থাকলে ভাইপোকে কেউ চিনবে না। এই মাটি বাতাসি, অহল্যাদের মাটি, কোনো মতে পিছু হাঁটবো না। রাস্তার দখল নেবে এই রাজ্যের মানুষ। ভয়কে জয় করে বুথে দাঁড়াতে হবে।"
আরজি কর প্রসঙ্গ টেনে মীনাক্ষী বলেন, "কারা মর্গে শব দেহের সাথে সহবাস করেছে, কারা আরজি করের ঘটনা ঘটিয়েছে মানুষ জানে, যেই সন্দীপ ঘোষ এই কাজ করেছে তাকে বাঁচাতে এত চেষ্টা সরকারের, লজ্জা করে না তাদের?"
রাজ্যে বেড়ে চলা শিশু শ্রমিক সম্পর্কে মীনাক্ষী বলেন, "এই রাজ্যে শিশু শ্রমিক বাড়ছে। কিন্তু সরকারের কাছে কোনও তথ্য নেই। ওরা বলছে ২০২০ সালে নাকি মাত্র ১৪ টা শিশু শ্রমিক ছিল। এখন নাকি কোনও শিশু শ্রমিক নেই। এই জেলার একের পর এক যুবরা পিঠে ব্যাগ নিয়ে অন্য রাজ্যে চলে যাচ্ছে।" তাঁর কথায় সম্মেলনে দাবি উঠেছে এই ছেলেদের রাজ্যে ফেরাতে হবে।
তিনি আরও বলেন, "মোদী দেশ বিক্রি করছে আর মমতা মৃতদেহ বেচে দিল সন্দীপকে সাথে নিয়ে।"
মীনাক্ষী বলেন, "এক বছর আগে এই রাজ্যেই ইনসাফ যাত্রা শেষ হয়েছিল। এই লড়াই দীর্ঘ। আমরা নতুন বাংলার সপ্ন দেখছি। এই স্বপ্নকে সত্যি করতে হবে, বাস্তবায়িত করতে হবে। এই লড়াই রুটি রুজির, জাত পাতের নয়। দেশ বাঁচানোর লড়াই।"
শমীক লাহিড়ী বলেন, "ভারত বহু ভাষার, বহু ধর্মের দেশ। সেই দেশে এক ভাষা এক ধর্ম চাপাতে গেলে দেশ ভেঙে যাবে। স্বাধীনতার সময় সবাই ঠিক করেছিল এই দেশের কোন ধর্ম হবে না। সব ধর্মের মানুষ এই দেশে স্বাধীন ভাবে থাকবে। এই বৈচিত্র্য কোথাও নেই। আমাদের সংবিধানকে বাঁচাতে হবে।"
লাহিড়ীর কথায়, বিজেপি এখন বলছে 'এক দেশ, এক ভোট'। মানুষ কি এক বিষয় মাথায় রেখে ভোট দেয়? ১৯৯৬ সালে লোকসভা ভোটের পর আবার ১৯৯৮, ৯৯ তে ভোট হয়েছিল এটাই গণতন্ত্র। ওরা বলছে এই সব হবে না।তিনি বলেন, "সংবিধান সরকারের জন্য নয়, সংবিধান চলে দেশের মানুষের জন্য।"
তৃণমূলকে আক্রমণ করে তিনি বলেন, "বামফ্রন্টের আমলে জোকা থেকে ফলতা অবধি ভর্তি কারখানা ছিল, এখন নেই। চটকল বন্ধ, শ্রমিক বেতন পায়নি। হামলা হোক, মামলা হোক ভাইপোর তোলাবাজির বিরুদ্ধ ডায়মন্ড হারবারের মানুষ লড়াই করবে।"
Comments :0