মণ্ডা মিঠাই
শান্তিনিকেতনের কথা
সৌম্যদীপ জানা
শান্তিনিকেতনের নাম শুনলেই আমাদের চোখে ভেসে ওঠে; লাল কাঁকর বিছানো মাটি, উঁচু উঁচু ছাতিম গাছ, সুন্দর শান্ত আশ্রমিক পরিবেশ ও সর্বোপরি রবীন্দ্রনাথের কথা। এই শান্তিনিকেতনে রবীন্দ্রনাথ কাটিয়েছেন দীর্ঘদিন, লিখেছেন অজস্র কবিতা, স্থাপন করেছেন প্রকৃতির কোলে পঠন পাঠান। রবীন্দ্রনাথ নিজেই বলেছেন শান্তিনিকেতন তার সব থেকে পছন্দের স্থান। রবীন্দ্রনাথের এই ১৬২ তম জন্মদিনে এই শান্তিনিকেতনেই আমার এই ছোট লেখা
শান্তিনিকেতনের ইতিহাস
সময়টা ১৮৬২ খ্রিস্টাব্দ, কবিগুরুর পিতা মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর একটি শান্ত সুন্দর স্থান খুঁজে পেয়েছিলেন যেখানে তিনি তার আধ্যাত্মিক চিন্তা সাধন ভজন ইত্যাদি করতে পারবেন ।সেটি ছিল বীরভূম জেলার একটি শান্ত সুন্দর এলাকা। সেখানে তিনি অপার প্রাকৃতিক শান্তির খোঁজ পেয়ে তার নাম রাখেন শান্তিনিকেতন। এরপর থেকেই সাধারণ মানুষ এই জায়গাটিকে একটি আধ্যাত্মিক কেন্দ্র হিসেবে মনে করতে শুরু করে এবং কলকাতার অনেকেই গতানুগতিক সময় বাধা জীবন থেকে মুক্তি পেতে এখানে এসে আধ্যাত্বিক চিন্তায় মগ্ন হতে। এরপর 1863 খ্রিস্টাব্দে মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর এখানে একটি আশ্রমের স্থাপনা করেন। এরপর ১৯০১ খ্রিস্টাব্দে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একটি আশ্রমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন।কিন্তু সেই বিদ্যালয়ের সাধারণ বিদ্যালয় এর মত চার দেয়ালের মধ্যে বদ্ধ নয়, রবীন্দ্রনাথের মতে মানুষের শিক্ষা প্রকৃতিরই কোলে সুতরা…
শান্তিনিকেতনের দর্শনীয় স্থান
ঠাকুরের আশ্রম
১৮৬৩ খ্রিস্টাব্দে মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর এই আশ্রমটির প্রতিষ্ঠা করেন। তার নাম অনুসারেই এই আশ্রম টির নাম হয় ঠাকুরের আশ্রম। প্রথমদিকে তিনি এই আশ্রমে আধ্যাত্মিক চিন্তা, সাধনা ইত্যাদি করতেন। পরবর্তীকালে রবীন্দ্রনাথের সময় এখানে সাংস্কৃতিক শিক্ষা, যেমন, সঙ্গীত ,নৃত্য, চিত্র অংকন ,আবৃত্তি ইত্যাদির প্রশিক্ষণ দেওয়া হতো। বর্তমানে এটি বিশ্বভারতীর উত্তরায়ন কমপ্লেক্সের অবস্থিত।
উপাসনা ঘর
মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর শান্তিনিকেতনে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে বেলজিয়াম গ্লাস দিয়ে একটি কাঁচের বিস্ময়কর উপাসনাগার তৈরি করেন ।এর অপর নাম কাঁচ মন্দির। এটি শান্তিনিকেতনের সবথেকে বিস্ময়কর ভবন
কলা ভবন
রবীন্দ্রনাথ পরবর্তীকালে অধিক ছাত্রের কলার প্রতি অনুরাগ দেখে কলা ভবন নির্মাণ করেন। এখানে বিভিন্ন রকম শিল্পকলা প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এর সব থেকে আকর্ষণীয় ব্যাপার হল এর দেওয়ালের অসাধারণ সাদা কালো ভিজুয়াল অ্যাজটেক প্যাটার্ন যা দর্শকের দর্শকের মনে অবাধ বিস্ময়ের সৃষ্টি করে।
ছাতিমতলা
মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর শান্তিনিকেতনের নিবিড় ছাতিম বনের একটি সুউচ্চ ছাতিম গাছের তলায় বসে ধ্যান করতেন। পরে রবীন্দ্রনাথ সেই ছাতিম তলায় বসে ছাত্রদের শিল্পকলার প্রশিক্ষণ দিতেন ও নিজে অজস্র কবিতা লিখতেন। সেই ছাতিমতলায় রবীন্দ্রনাথের স্মৃতিতে মুখরিত
পৌষ মেলা
মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর যখন তার বারো জন সহ সাধককে নিয়ে এই শান্তিনিকেতনে আসেন এবং ব্রাহ্ম সমাজ প্রতিষ্ঠা করেন তারপর থেকে প্রতি পৌষ মাসে তারা আশেপাশের গ্রামের মানুষদের সাথে মিলে একটি সাংস্কৃতিক হস্তশিল্প মেলার স্থাপন করেন পরবর্তীকালে এই মেলায় বাউল, নৃত্য কবিতার শান্তিনিকেতর বিখ্যাত হস্তশিল্পের প্রসার ঘটে । শীতকালে শান্তিনিকেতনে পৌষমেলা মূল আকর্ষণ ।
সৌম্যদীপ জানা
সপ্তম শ্রেণী, কল্যাননগর বিদ্যাপীঠ, খরদা,
উত্তর পাড়া ,রহড়া , উত্তর চব্বিশ পরগনা
৮৬৯৭১৬৯৪৭০
Comments :0