নতুনপাতা
বইকথা
মায়া ঘোষ দসতিদার সমগ্র
প্রদোষকুমার বাগচী
তোমাদের মনের মতো বই
ছড়া কবিতা আর গল্পের মজা
এবার তোমাদের জন্য একটা নতুন বইয়ের কথা বলব। এই বইটি শিশু সাহিত্যিক মায়া ঘোষ দস্তিদারের লেখার সংকলন। তোমরা অনেকেই হয়তো সাহিত্যিক সুনির্মল বসুর নাম শুনে থাকবে। তাঁরই সবচেয়ে ছোট বোন এই মায়া ঘোষ দস্তিদার। পারিবারিকভাবেই হয়তো তাঁর মনে সাহিত্যের ভাব স্ফূরিত হয়েছিল। তিনি আবার বরেণ্য সাহিত্যিক বুদ্ধদেব গুহ’র মাসিমা ছিলেন। বহুদিন ধরে মায়া ঘোষ দস্তিদার কবিতা ও গল্প লিখেছেন। এখানে তাঁর সেই সব লেখাগুলোই সংকলিত হয়েছে। লেখা গুলির মধ্যে এমন কিছু ছড়া কবিতা আছে যা তোমাদের ভালো লাগবে। এখানে তোমাদের জন্য ‘ছোট্ট কালো মেয়ে’ নামের ছড়াটি থেকে প্রথম চার লাইন তুলে ধরছি—
হাতে বাজে রূপোর কাঁকন / পায় বাজে মল
সাঁওতালদের কালো মেয়ে / ভরতে এল জল।
এরকমই মজার ভালো লাগার ছড়া ও কবিতার কয়েকটি নাম বলছি, যেমন— ছড়া, হ্যাংলা পুষর, গোরুর গাড়ি, তুতুন, চামেলি, মানিক , কাঁচা আমের খোঁজে এই রকম সুন্দর ও মজাদার সব নাম। সঙ্গে রয়েছে মন ভোলানো ছবি। গল্পও রয়েছে মেলা। সাত-বেড়ালের ধর্মশালা, বেগিং ইজ এ ক্রাইম, কাল্লু সর্দার, গণেশের কি ট্যাকশাল আছে ইত্যাদি। আমার কিন্তু হনুমতীর বিয়ে গল্পটা বেশ লেগেছে। লাগবে নাই বা কেন? হনুমানের ছোট মেয়ে হনুমতীর বিয়েতে সে কি কাণ্ডটাই না হলো। হনুমতীর বাবা ও কাকা খুব আয়োজন করেছে। ওরা তো রামের ভক্ত তাই রান্না বান্না যা হবে সব নিরামিষ করতে হবে।সবাইকে নেমতন্ন করতে হবে। নাহলে আবার যে বাদ যাবে সে রেগে যাবে। এদিকে খাওয়ার দাওয়ার সব এসেছে। কলা, কাঁঠালের ছড়াছড়ি। গানের আসর বসেছে। কেউ হনুমতীকে সাজাচ্ছে। কেউ বরযাত্রীদের নিয়ে ব্যস্ত। এদিকে বিয়ে শুরু হয়েছে। হঠাৎ হালুম করে কান ফাটানো শব্দ। তখন হনুমতীর বাড়ির হনুমানদের মনে পড়ল এই, যাঃ বাঘমশাইকেই তো নেমতন্ন করা হয়নি। এদিকে বাঘের ডাক শুনে সব যে যেভাবে পেরেছে পালিয়েছে। চোঁ চাঁ দৌড়ে পালিয়েছে খরগোসের দল। হনুমানরা গাছের ডালে ডালে ঝুলে পড়েছে। এদিকে বাঘ বলছে, হালুম হুলুম, হালুম হুলুম/ খাবার গন্ধ পেলুম পেলুম/ খিদের জ্বালায় গেলুম গেলুম।
বুঝতেই পারছো এর পর বিয়েবাড়িতে কি হতে পারে। তোমরা ভাবতে থাকো। আর বইটা নিয়ে পড়ে দেখো যে তোমরা যা ভাবছো তাই ওই গল্পের সঙ্গে মিলে যাচ্ছে কিনা। এবার তাহলে বইটার নাম ধাম বলে দিই।
মায়া ঘোষ দস্তিদার সমগ্র
ভুমিকা বুদ্ধদেব গুহ। ঋত প্রকাশন। ২৮/১/১এ/১ ঝামাপুকুর লেন, কলকাতা—৭০০ ০৭৩। ৩০০ টাকা।
Comments :0