নতুনপাতা
ধারাবাহিক গল্প
কালাটপে তুহিন
সৌজন্য দাস
তিন
তুহিন যখন ঘরে ফিরল তখন রাত বারোটা। পাহাড়ি অঞ্চলে তখন গভীর রাত।
ত্রিশান জিজ্ঞাসা করে - এতক্ষণ কোথায় ছিলি?
একটা খবরের খোঁজে হাঁপাতে হাঁপাতে বলে তুহিন।
- খবর? তা কি খবর?
-খবরটা হলো যে আমি জেনেছি আজ রাতে জলন্ধর থেকে ট্রাকভর্তি ড্রাগ আসবে।
- বলিস কিরে? তা কে বললো তোকে সব কথা?
-আমি একটা ক্যাফের আন্ডারগ্রাউন্ড হলের হার্ড ড্রিঙ্কস বার এ গিয়েছিলাম। সেখানেই এক কর্মচারীর কাছ থেকে জানলাম।
-সে সোজাভাবে বলে দিল?
-না ব্রাদার,দুশো টাকার বিনিময়ে বলেছে। তবে এটাও জেনেছি যে ওদের ড্রাগ সাপ্লাইর এর নাম এস বিন্দ্রা।
- তবে তুই কী করে বুঝলি যে এই এস ব্রিন্দা রুপমের কিডন্যাপার ?
-আরে বললাম না ম্যাসাজটা এস বিন্দার নাম্বার থেকে এসেছে।
ত্রিশান বলে এখন প্ল্যান?
তুহিন স্মিত হেসে জানালো জলন্ধর থেকে আসা ট্রাকে ওঠা।
বিস্ময়ের সুরে ত্রিশান জানতে চাইলো তার মানে।
তুহিন - মানে ড্রাগ পাচারের পর আমরা চুপিসারে ট্রাকে উঠে লুকাবো তারপর জায়গায় গিয়ে সিচুয়েশন বুঝে ডিসিশন নেব। যদিও ব্যাপারটা খুব একটা সোজা হবে না
ত্রিশান - কিন্তু উঠবো কিভাবে?
তুহিন - হাতে সময় কম।চল স্পটে গিয়ে সব বলবো।
এরপর ওরা চটপট বেরোলো হোটেল থেকে। যখন রেস্টুরেন্ট পৌঁছলো তখন 12:30 মত হবে, সবেমাত্র একটা ট্রাক এসে পৌঁছেছে। তুহিন রা লুকিয়ে ছিল একটা মোটা পোলের পিছনে। কিছুক্ষণ পর যখন ট্রাকটা ছাড়লো এবং যেইমাত্র পোলের কাছে এলো তখন তারা লাফ মেরে ট্রাকের একটা দড়ি ধরে ট্রাকের সাথে চললো ঝুলতে ঝুলতে। শীতের তীব্রতা যেন অবশ করে দিচ্ছিল তাদের। সঙ্গে হালকা তুষারপাত। এ অবস্থায় তুহিন ত্রিশান কে সাবধান করে দিলো ওরা যেন কোন মতেই টের না পায়। ত্রিশান কোন কথা না বলে শুধু ঘাড় নেড়ে সম্মতি জানালো।
বেশ কিছুক্ষণ ট্রাকটা চলার পর থামল একটা জায়গায়। সঙ্গে সঙ্গে ওরা লাফিয়ে নেমে গা ঢাকা দিল পাহাড়ের আড়ালে। দেখল দুজন লোক মুখে কালো কাপড় বেঁধে নামলো আর তারপর ধীরে ধীরে ড্রাম গুলো নামাতে লাগলো এবং ড্রাম মাথায় নিয়ে চলতে লাগলো। তুহিন ওদের ফলো করল। বেশ কিছুটা আশার পর হঠাৎ ত্রিশান একটু জোরে কেশে ফেললো। সঙ্গে সঙ্গেই লোক দুটো পেছনে তাকালো। মুহুর্তের মধ্যে তুহিনের এ.কে ফরটিসেভেন গর্জন করে উঠল। লোক দুটো মাটিতে লুটিয়ে পরল। তুহিন আর ত্রিশান দৌড়াতে লাগলো। ঠিক তখনই হঠাৎ অন্ধকার থেকে ছুটে এল দুই দস্যু। তাদের হাতে ছিল বিধ্বংসী আগ্নেয়াস্ত্র 'ভিক্টর'। তুহিন আবার গুলি চালাল। একটা গুলি মাথায় ঢুকে গেল একজনের। আর একটা অন্য জনের বুকে। দুজনেই লুটিয়ে পড়ল মাটিতে। তুহিন তখন নিজের প্রাণ বাঁচানোর তাগিদে সঙ্গে সঙ্গে লুকিয়ে পড়ল সামনে একটা পোড়ো বাড়িতে। সেখানে একটা অন্ধকার কোণে গুটিসুটি মেরে বসে পরলো। তুহিন দেখল একটা লোক সঙ্গে সঙ্গে ঘরে ঢুকলো,তার হাতে ছিল 'কার নাইনটিন '। লোকটা তুহিনকে জাপ্টে ধরলো মাথায় এমন মারল যে তুহিন অজ্ঞান হয়ে গেল।
( চলবে )
Comments :0