MD SALIM

দুর্নীতির বিরুদ্ধে রাজ্যে এক কোটির বেশি
সই সংগ্রহ, ঘোষণা সেলিমের

রাজ্য

MD SALIM বুধবার কলকাতায় মুজফ্‌ফর আহমেদ ভবনে সাংবাদিক সম্মেলনে মহম্মদ সেলিম।

সর্বগ্রাসী রূপ নেওয়া দুর্নীতির বিরুদ্ধে এরাজ্যের এক কোটির বেশি মানুষের সই সংগ্রহের কর্মসূচী ঘোষণা করলো সিপিআই(এম)। সেই লক্ষ্যে মে মাস জুড়ে মানুষের কাছে যাবেন সিপিআই(এম) কর্মীরা। 

বুধবার সিপিআই(এম)র রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম সাংবাদিক বৈঠক করে ঘোষণা করেছেন, মে মাস জুড়ে রাজ্যবাসীর কাছে গিয়ে এক কোটির বেশি সই সংগ্রহ করা হবে এবং এই মাস পিটিশন দেওয়া হবে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির কাছে। বাংলার মানুষ ন্যায়বিচার আদায় করেই ছাড়বে। 

সেলিম বলেছেন, পশ্চিমবঙ্গে দুর্নীতি এবং দুষ্কৃতীতন্ত্র সর্বগ্রাসী রূপ নিয়েছে। শুধু স্কুলের শিক্ষক নিয়োগ নয়, গত এক দশকে কোনো নিয়োগ প্রক্রিয়াই এখানে সুষ্ঠুভাবে হয়নি। রাজ্যের পুলিশ এবং তদন্তকারী এজেন্সিগুলি কত অপদার্থ দলদাসে পরিণত হয়েছে তাও স্পষ্ট হয়ে গেছে। তারা দুর্নীতির কোনো তদন্ত করেনি, কোনো অপরাধীকে ধরেনি, বরং দুর্নীতিতন্ত্রের বিরুদ্ধে কেউ যাতে মুখ খুলতে না পারে তার জন্য ব্যস্ত থেকেছে। ক্ষমতায় বসেই মুখ্যমন্ত্রী শিলাদিত্যর মুখ বন্ধ করতে বলেছিলেন। পুলিশ প্রশাসন সেই পথেই চলছে। এমনকি তৃণমূল সাংসদ দেবের ভাই যেই মাত্র দুর্নীতি ও কাটমানির অভিযোগ করেছেন তখনই তাঁর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেছেন তৃণমূল বিধায়ক শিউলি সাহা। পুলিশ এরাজ্যে অপরাধীদের নয়, অভিযোগকারীকে ধরতে ছোটে। আর সরকার কোটি কোটি টাকা খরচ করে তদন্ত আটকাতে হাইকোর্টে সুপ্রিম কোর্টে ছোটে। এ রাজ্যে সব উলটো। 

এরাজ্যের নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় শেষপর্যন্ত সিবিআই ইডির তদন্ত হচ্ছে আদালতের নির্দেশে এবং তাতে একের পর এক তৃণমূল নেতা মন্ত্রীরা জালে পড়ছেন। এই পরিপ্রেক্ষিতের উল্লেখ করে সেলিম বলেছেন, দুর্নীতি তো কেবল একটি নিয়োগ প্রক্রিয়ায় হয়নি, এরাজ্যে দুর্নীতি সর্বগ্রাসী, সব নিয়োগে সব প্রকল্পে হয়েছে। আদালতের নির্দেশে সিবিআই ইডি তদন্ত শুরু হলেও সেই তদন্তকে বিলম্বিত করা হচ্ছে। তাই আমরা ঠিক করেছি মে মাস জুড়ে রাজ্যের মানুষের কাছে গিয়ে দুর্নীতির বিরুদ্ধে অন্তত এক কোটি সই সংগ্রহ করা হবে। সংখ্যাটা আরও বেশি হবে। শুধু বামপন্থীদের কাছে নয়, যারাই দুর্নীতির বিরুদ্ধে সেই সব অংশের মানুষের কাছে আমরা যাবো এবং সই সংগ্রহ করবো। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে যারা ভাইপো ছাড় পেয়ে গেছে বলে উল্লাস করছে তারা ভুল করছে। রাজ্যের মানুষ ন্যায়বিচার আদায় করেই ছাড়বে। 

সেলিম বলেন, মানুষের এই মেজাজ বুঝতে পারছে বলেই সরকার এখন পঞ্চায়েত নির্বাচন করতে চাইছে না। খালি পিছোচ্ছে। আমরা বলেছি, ‘চ্যালেঞ্জ দিচ্ছি, চ্যালেঞ্জ নাও। পঞ্চায়েত নির্বাচনের তারিখ দাও।গ্রামের মানুষের অধিকার আছে দুর্নীতিমুক্ত পঞ্চায়েত ফিরে পাওয়ার। কোনো কসমেটিক সার্জারিতে সেটা হবে না, তৃণমূল এবং বিজেপিকে উৎখাত করেই মানুষের হাতে পঞ্চায়েতকে ফেরাতে হবে। 

বাঁচার মরিয়া চেষ্টায় তৃণমূল সাংসদ অভিষেক ব্যানার্জি যেভাবে উত্তরবঙ্গ থেকে কর্মসূচি শুরু করেছেন তাতে ফল মিলবে না বলে জানিয়েছেন সেলিম। তিনি বলেন, তাঁবু নিয়ে সার্কাস করে মিডিয়াতে হইচই ফেলে বাঁচা যাবে না। মুখ্যমন্ত্রী ভাইপোকে দিয়ে জল মাপাচ্ছিলেন, দেখলেন যে ভাইপোকে দিয়ে হচ্ছে না। তাই এবার মমতা ব্যানার্জিকেই মাঠে নামতে হচ্ছে। কিন্তু মানুষ দুর্নীতি ও দুষ্কৃতীরাজ খতম করতে মনস্থির করে ফেলেছেন। তাঁরা দলে দলে তৃণমূলকে সমর্থন করা ছেড়ে বাম অথবা কংগ্রেসকে সমর্থনে নামছেন।

Comments :0

Login to leave a comment