MD SALIM on Suraksha Kaboch

তাড়া তৃণমূলকে, এই জনতাই সুহৃদ বামপন্থীদের: সেলিম

রাজ্য

MD SALIM মহম্মদ সেলিম: ফাইল ছবি

সুরক্ষা কবচ নিয়ে মানুষের কাছে গেলেও তাড়া খেতে হচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেসকে। বামপন্থীরাও ধারাবাহিক কর্মসূচিতে জনতার মধ্যে যাচ্ছেন। বামপন্থীদের সঙ্গে সোৎসাহে কথা বলছেন মানুষ। বাড়িয়ে দিচ্ছেন সাহায্যের হাত। 

বাংলায় একই সময়ে দুই রাজনৈতিক শক্তির কর্মসূচি ঘিরে জনতার প্রতিক্রিয়া এমনই বিপরীত। সোমবার সাংবাদিক সম্মেলনে এই ফারাক তুলে ধরেছেন সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। তিনি জানিয়েছেন, এমন কর্মসূচিতে জনতা সরাসরি এসে তৃণমূল এবং বিজেপি দুই শক্তির থেকে পরিত্রাণে বামপন্থীদের বাড়তি ভূমিকা নেওয়ার কথা বলছেন। পাশে থাকার অঙ্গীকার করছেন।

প্রধানমন্ত্রী প্রসঙ্গে অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক অমর্ত্য সেনের বক্তব্য নিয়ে প্রশ্ন করা হয় সেলিমকে। প্রশ্নে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী পদে মমতা ব্যানার্জির আসীন হওয়ার যোগ্যতা রয়েছে বলে জানিয়েছেন অধ্যাপক সেন।

তিনি বলেছেন, ‘‘অধ্যাপক সেন ঠিক কী বলেছেন তা বিবেচনায় রাখা দরকার। সংবাদমাধ্যমের ভাষ্যে তা বলা হচ্ছে না। তিনি বিরোধী বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতার কথাই বলেছেন যাঁদের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার যোগ্যতা রয়েছে। সাক্ষাৎকারে তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হয় মমতা ব্যানার্জির যোগ্যতা আছে কিনা। তিনি জানিয়েছেন মমতা ব্যানার্জিরও যোগ্যতা রয়েছে।’’ 

সেলিম মনে করিয়েছেন যে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদের এই প্রসঙ্গে বক্তব্যে আরেকটি অংশ রাজ্যের সংবাদমাধ্যমে আসছে না। তিনি বলেছেন, ‘‘অমর্ত্য সেন একইসঙ্গে বলেছেন যে বিজেপি বিরোধী শক্তিগুলিকে একজোট করার দক্ষতা তাঁর আছে কিনা তা স্পষ্ট নয়।’’ সেলিম বলেন, ‘যোগ্যতা’ আর ‘দক্ষতা’ দু’টি আলাদা। সেন তা স্পষ্ট বুঝিয়েছেন। 

সেলিম বলেন যে বিজেপি বিরোধী শক্তিকে একজোট করার প্রয়াস তো দূর। বিরোধী শক্তিকে দুর্বল করতে চেষ্টা করছে তৃণমূল কংগ্রেস। তিনি বলেছেন, ‘‘ত্রিপুরা, মেঘালয়, গোয়ায় তৃণমূল ঠিক আরএসএস’র সহযোগী হিসেবে কাজ করেছে তৃণমূল কংগ্রেস।’’ 

চ্যালেঞ্জের সুরে সেলিম বলেন, ‘‘সাম্প্রদায়িকতা, উগ্র হিন্দুত্ববাদ, ভারতচিন্তার বিকৃতি, ঘৃণা ভাষণের মতো আরএসএস’র বিভাজনকামী কোনও সক্রিয়তার বিরুদ্ধে তৃণমূল কংগ্রেস কোনও প্রতিবাদ জানায়নি। সংবাদমাধ্যম যদিও বলেই চলেছে বিজেপি-আরএসএস’র বিরুদ্ধে লড়ছে তৃণমূল কংগ্রেস।’’ সংবাদমাধ্যমে কড়া সমালোচনা করে তিনি বলেন, মমতার হয়ে ‘চিয়ারলিডারের’ ভূমিকা নিচ্ছে মিডিয়া। 

সেলিম বলেন, ‘‘বারবার দেখানো হয়েছে বিজেপি’র চলার ধরনের সঙ্গে তৃণমূলের একের পর এক মিল রয়েছে।’’ 

মেঘালয়ে তৃণমূলের গতিবিধিতে জোট সংক্রান্ত প্রশ্নে সেলিম বলেছেন, ‘‘অনুব্রত কাণ্ডের পর মেঘালয় এখন গরূপাচারের নতুন রুট হয়েছে। তৃণমূল নেতাদের ঘনঘন যেতেই হবে। ঠিক করে তদন্ত হলে সে রাজ্যে তৃণমূলের সহযোগীরা জেরার মুখে পড়বে।’’ 

সোমবার একটি অনুষ্ঠানে তৃণমূলনেত্রী মমতা ব্যানার্জি ফের অভিযোগ করেছেন যে বিজেপি এবং বামপন্থীরা একযোগে রাজ্যে কেন্দ্রের টাকা আটকাচ্ছে। সংবাদমাধ্যমের এ সংক্রান্ত প্রশ্নে সেলিম বলেন, ‘‘এখন মুর্শিদাবাদ বা মোরদাবাদ, সর্বত্র বামেদের কথা বলতে হচ্ছে মমতাকে। তিনিই বলেছেন বামেদের নাকি দেখা যাচ্ছে না।’’

রাজ্যে সিপিআই(এম) নেতৃবৃন্দ পার্টিকর্মীদের সঙ্গে সরাসরি অর্থসংগ্রহ অভিযানে শামিল রয়েছেন। অভিজ্ঞতা শুনিয়ে সেলিম বলেন, ‘‘সোৎসাহে মানুষ সহায়তা করছেন। বলছেন আরও নিয়মিত আসুন। তাঁদের কথা জানাচ্ছেন।’’ 

‘দিদির সুরক্ষা কবচ’ কর্মসূচির প্রসঙ্গও টানেন তিনি। সেলিম বলেন, ‘‘সরক্ষা কবচ কখন দরকার হয়। যুদ্ধে লাগে, আমি আক্রমণ করব। কিন্তু আমায় যেন কেউ আক্রমণ করতে না পারে। তৃণমূল নেতারাও তেমন ব্যবস্থা করছেন। দেখা গিয়েছে প্রশ্ন করে থাপ্পড়ও খেতে হচ্ছে। কিন্তু তারপরও রক্ষা পাওয়া যাচ্ছে না। মানুষ তাড়া করছেন।’’ 

সেলিম বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী নিজের কেন্দ্র, নিজের পাড়া কালীঘাটে এমন কর্মসূচি করুন না!’’ তিনি বলেন, ’সুরক্ষা কবচ তৃণমূলের রক্ষণাত্মক কর্মসূচি। চিট ফান্ড কেলেঙ্কারিতেও তৃণমূল প্রতি আক্রমণে নেমে স্লোগান দিয়েছিল, ‘আমরা সবাই চোর’। এখন আর তা পারছে না। 

নতুন তৃণমূল’ প্রসঙ্গে সেলিমের মন্তব্য, ‘‘এমন তৃণমূল যে আরও নির্লজ্জ। অভিযুক্তকে আদালত কেন বিশেষ সুবিধা দেবে এই দাবিতে সে আদালত, বিচারব্যবস্থার ওপর আক্রমণ চালাচ্ছে।’’ 

Comments :0

Login to leave a comment