MD SALIM BAHRAMPUR

মিথ্যা মামলা চাপালে হাইকোর্টে যেতে হবে পুলিশকেও: হুঁশিয়ারি সেলিমের

রাজ্য

MD SALIM BAHRAMPUR শনিবার বহরমপুরে সাংবাদিক সম্মেলনে মহম্মদ সেলিম।

তৃণমূল ভয় দেখাচ্ছে। তবু মনোনয়ন তোলাতে পারছে না। পুলিশকে কাজে লাগানো হচ্ছে। মিথ্যা মামলা চাপানো হচ্ছে তৃণমূল এবং বিজেপি বিরোধী শক্তিগুলির প্রার্থীদের বিরুদ্ধে। এখন এই চক্রান্তের বিরুদ্ধে লড়াই হচ্ছে। 

পঞ্চায়েত ভোটের চলতি পর্বের বামফ্রন্ট লড়াইকে এই মর্মে ব্যাখ্যা করেছেন মহম্মদ সেলিম। পুলিশকে হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেছেন, ‘‘মিথ্যা মামলা চাপানোয় জড়িত পুলিশ আধিকারিক এবং পুলিশ কর্মীদেরও হাইকোর্টে যেতে হবে। কেউ পার পাবে না।’’ 

শনিবার বহরমপুরে সিপিআই(এম) মুর্শিদাবাদ জেলা দপ্তরে সাংবাদিক সম্মেলন করেন সেলিম। সঙ্গে ছিলেন পার্টির জেলা সম্পাদক জামির মোল্লা। মুর্শিদাবাদে রানিনগর, ডোমকলের মতো একাধিক জায়গায় তৃণমূলের সশস্ত্র বাহিনী মনোনয়ন জমা দিতে বাধা দেয়। তাকে উপেক্ষা করে সিপিআই(এম) এবং কংগ্রেস প্রার্থীরা মনোনয়ন জমা দেন। সেলিম অভিবাদন জানিয়েছেন মুর্শিদাবাদের জনতাকে।

চলতি নির্বাচনে পুলিশের সক্রিয়তা বারবার কড়া প্রতিবাদের মুখে পড়েছে। ব্লক দপ্তরে তৃণমূলের দুষ্কৃতীবাহিনী আক্রমণ করেছে বামফ্রন্ট, কংগ্রেস এবং আইএসএফ’র প্রার্থীদের। তখন পুলিশ নীরব। আবার প্রার্থীদের মনোনয়ন তোলাতে সক্রিয় হয়ে উঠেছে পুলিশ। যার অন্যতম দাসপুর। সেখানে সিপিআই(এম) প্রার্থীকে মনোনয়ন তোলাতে ব্লক দপ্তরে টেনে নিয়ে যায় পুলিশ। পশ্চিম মেদিনীপুরেরই চন্দ্রকোণায় প্রার্থী সহ সিপিআই(এম) এবং আইএসএফ কর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা দেওয়ার অভিযোগ তীব্র। 

বীরভূম প্রসঙ্গে সংবাদমাধ্যমের এক প্রশ্নে সেলিম বলেন, ‘‘সিউড়ি-২, লাভপুর, নানুরের মতো ব্লকে মনোনয়ন পর্বে বাড়ি ঘিরে রেখেছিল তৃণমূলের বাহিনী। মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির ফর্মুলা মেনে কাজ হয়েছে- তিনি বলেছিলেন ‘সব আগের মতো চলবে’। মানে কয়লা, বালি পাচার চলবে। আবার প্রতিবাদীদের গাঁজা কেস, মিথ্যা মামলা চাপানো চলবে। তার মধ্যেও অন্যান্য ব্লকে বামফ্রন্ট এবং কংগ্রেস একযোগে প্রার্থী দিয়েছে।’’

সেলিম বলেছেন, ‘‘একদিকে তৃণমূলে নকল মনোনয়ন নেওয়া হয়েছে। ব্লক দপ্তরে না গিয়ে, এমনকি বিদেশে থাকা ব্যক্তির নামে মনোনয়ন গৃহীত হয়েছে। আরেকদিকে প্রশাসন ব্লক দপ্তরে বিরোধী প্রার্থীদের মনোনয়ন পত্র বিকৃত করেছে।’’ এই প্রসঙ্গেই সেলিম বলেন, ‘‘আসলে ওরা মানুষকে ভয় পাচ্ছে, ভোটকে ভয় পাচ্ছে।’’। 

বিজেপি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘বীরভূমে দেখা গিয়েছে একযোগে মনোনয়ন জমা করছে তৃণমূল এবং বিজেপি। আবার তৃণমূলের প্রার্থী নেই বলে বিজেপি দাঁড়িয়ে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছে।’’ সেলিম বলেন, ‘‘হাইকোর্টের নির্দেশের জেরে বেশি কেন্দ্রীয় বাহিনীর অনুরোধ পাঠাতে বাধ্য হলো রাজ্য নির্বাচন কমিশন। এখন কেন্দ্রের বিজেপি সরকার বলছে, অত কোম্পানি বাহিনী একসঙ্গে পাঠানো যাবে না। তৃণমূল-বিজেপি’র যোগসাজশ ধরা পড়ে যাচ্ছে।’’ 

বেলডাঙায় বিস্ফোরণের ঘটনা তুলে সেলিম দাবি তুলেছেন, পুলিশ এবং প্রশাসনকে সব মজুত বোমা উদ্ধার করতে হবে, বোমা কারখানা বন্ধ করতে হবে। বন্ধ করতে হবে অস্ত্র কারখানা। তিনি বলেন, ‘‘বারবরাই দেখা গিয়েছে আহতদের সরিয়ে দিয়েছে তৃণমূল। বেলডাঙাতেও তাই হচ্ছে।’’ 

নির্বাচনে সন্ত্রাস প্রসঙ্গেই তিনি বলেন, ‘‘মানুষকেই ঐক্যবদ্ধ হতে হবে, সংঘবদ্ধ হতে হবে। মুর্শিদাবাদের জনতা তা হয়েছেন, একাধিক জেলায় তা দেখা গিয়েছে। মানুষকেই শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে হবে। পুলিশ কেবল নিরপেক্ষ থাকুক, তা’হলেই হবে।’’ 

রাজ্য নির্বাচন কমিশন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘মানুষের মেজাজ বুঝুন নির্বাচন কমিশনার। মানুষ চাইছেন চোর, দুষ্কৃতী সরিয়ে পঞ্চায়েত নিজেদের হাতে পেতে। কমিশনকে নিরপেক্ষ ভূমিকা নিতে হবে। গণনাকেন্দ্র সরানো হচ্ছে জনমানবহীন এলাকায়। যাতে ভোট লুট করতে না পারলে গণনা লুট করা যায়। কমিশন তৃণমূলের কথামতো চলছে বলেই মানুষের গালাগাল খাচ্ছে। নিরপেক্ষ ভূমিকা নিতে হবে কমিশনকে। ভোট কর্মী, ভোটদাতা, প্রার্থী সবাইকে নিরাপত্তা দেওয়ার দায়িত্ব কমিশনকেই নিতে হবে।’’ 

 

Comments :0

Login to leave a comment