BOLPUR PROTEST PANCHAYAT

প্রার্থীপদ তুলতে রাতভর হামলা, চড়া মেজাজে পালটা অবরোধ বোলপুরে

রাজ্য জেলা

বোলপুর থেকে ইলামবাজার যাওয়ার রাস্তায় রায়পুর-সুপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের সামনে পথ অবরোধ।

রণদীপ মিত্র

বিরোধীদের তুলে নিতে হবে মনোনয়ন পত্র। প্রার্থী হওয়া চলবে না। তৃণমূলের বাইকবাহিনী শনিবার সারারাত এই হুমকি দিয়েছে গ্রাম ঘিরে। তবে মির্জাপুরের মতো একাধিক গ্রামের বাসিন্দারা ভয়ে ঘরে ঢুকে যাচ্ছেন না। আর রবিবার গ্রামের বাসিন্দারা প্রতিবাদে অবরোধ করেছেন রাজ্য সড়ক। 

প্রতিবাদের উত্তাপ টের পাচ্ছে বোলপুর। এখানেই রায়পুর-সুপুর পঞ্চায়েতে প্রার্থী পদ তোলার জন্য হুমকি চলেছে। সিপিআই(এম) প্রার্থীদের বাড়ি তো বটেই, পরিজনদেরও শাসানো হয়েছে। মনোনয়ন জমার পর থেকেই চলেছে। তবে শনিবার রাতে হুমকি হামলার চেহারা নেয় বলে জানিয়েছেন গ্রামবাসীরা। আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে চড়াও হয়ে সিপিআই(এম) এবং কংগ্রেস প্রার্থীদের মনোনয়ন প্রত্যাহারের হুমকি চলে। গ্রামবাসীদের অভিযোগ সরাসরি তৃণমূলের বিরুদ্ধে। 

স্থানীয় মানুষ জানাচ্ছেন, তৃণমূলের বাহিনী শাসিয়ে বলে সোমবার বেলা বারোটার মধ্যে মনোনয়ন তুলে না নিলে প্রাণে মেরে দেওয়া হবে। তাঁরা বলেছেন, মাতব্বরী বরদাস্ত করা হবে না। গুণ্ডাবাহিনীকে গ্রেপ্তার করতে হবে। 

মির্জাপুরের বাসিন্দারা রবিবার হাতের কাছে যা পেয়েছেন নিয়ে নেমে এসেছে রাজ্য সড়কে। এই অঞ্চলে বাস বহু আদিবাসী মানুষের। প্রতিবাদে বোলপুর-ইলামবাজার রাস্তায় আগুন জ্বালিয়ে তীর-ধনুক হাতে নিয়ে পথ অবরোধ চলছে। অবরোধে সামিল হয়েছেন আদিবাসী মানুষজনও।

রবিবারও সকাল থেকে বহিরাগত তৃণমূলের লোকজন গ্রামে ঢুকে পড়ে৷ বন্দুক দেখিয়ে সিপিআইএম ও কংগ্রেস প্রার্থীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভয় দেখায়। মনোনয়ন প্রত্যাহার না করলে গুলি করে দেওয়ার হুমকিও দেয়। 


বামপন্থীরা বলেছেন, হারের ভয়ে এমন বেপরোয়া আচরণ করছে তৃণমূল কংগ্রেস। বীরভূমে গত কয়েক মাসে একটি পর একটি আন্দোলনে মানুষ অভূতপূর্ব সাড়া দিয়েছেন। সব ভয়কে হারিয়ে নেমে পড়েছেন রাস্তায়। জেলায় কয়লা পাচার, গরু পাচার চক্র চালিয়ে তৃণমূলের মাথাদের কোটি কোটি টাকা কামানোর বৃত্তান্ত জানেন সারা রাজ্যের মানুষ। বারবার বিস্ফোরণ হয়েছে মজুত করে রাখা বোমায়। পুলিশ পুরোপুরি নিষ্ক্রিয়। খাকি উর্দি পরে তৃণমূলের গৃহভৃত্যের মতো আচরণ করছে। ফলে ভোট দাঁড়ানোর অধিকার পেতে জনতাই নেমেছেন রাস্তায়। 

রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় এমন হামলা-হুমকি চালাচ্ছে তৃণমূল। সম্মিলিত প্রতিরোধে তৃণমূল এবং বিজেপি বিরোধী শক্তি হয়ে মনোনয়ন জমা সংখ্যার বিচারে ২০১৮’র তুলনায় অনেক বেশি। বামপন্থীরা বলেছেন, প্রায় ৫০টি ব্লকে জোর করে মনোনয়ন জমা দিতে বাধা দিয়েছে তৃণমূলের দুষ্কৃতীবাহিনী। এবার চলছে নাম তোলানোর চেষ্টা। হামলা করতে এসে প্রতিরোধের মুখে পড়ছে তৃণমূল। ৮ জুলাই ভোটের আগে প্রতিরোধ আরও বাড়বে। 

রবিবার রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে হাতে তীর-ধনুক নিয়ে চলে অবরোধ। 

Comments :0

Login to leave a comment