রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রনোদিতভাবে পুলিশী সাজানো ঘটনায় সিপিআই(এম)'র দুইজন নেতাকে গ্রেপ্তারের ঘটনার তীব্র ধিক্কার জানালো সিপিআই(এম) দার্জিলিঙ জেলা কমিটি। ডাবগ্রামের খুনের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে নার্সিংহোমে ভাঙচুর চালানো ও পরবর্তীতে স্থানীয় দুই পার্টি নেতা গ্রেপ্তার প্রসঙ্গে পুলিশ প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তোলেন সিপিআই(এম) নেতৃবৃন্দ।
মঙ্গলবার দুপুরে অনিল বিশ্বাস ভবনে এক সাংবাদিক বৈঠকে এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করে সিপিআই(এম) পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য জীবেশ সরকার ও সিপিআই(এম) দার্জিলিঙ জেলা সম্পাদক সমন পাঠক বলেন, ডাবগ্রাম এলাকায় সিপিআই(এম)'র তৎপরতা বৃদ্ধি পেয়েছে। ধৃত দুইজনই সিপিআই(এম)'র সক্রিয় আঞ্চলিক নেতা। এদের মুখ বন্ধ করার জন্যই উদ্দেশ্য প্রনোদিতভাবে শাসকদলের মদতে পুলিশ এই কাজ করেছে। শাসকদলের অন্যায় কাজের অংশীদার হয়ে পড়ছে পুলিশ প্রশাসন। শাসকদলের অনুগত হয়ে এভাবে দিনের পর দিন পুলিশ কাজ করলে এর বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক ও আইনগত আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। সাংবাদিক বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন শচীন খাতি।
উল্লেখ্য ডাবগ্রাম এলাকায় একটি খুনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে নার্সিংহোমে এলাকার সাধারণ মানুষের ক্ষোভ বিক্ষোভ ও পরবর্তীতে একটি নার্সিংহোমে ভাঙচুর চালানো হয়। উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে নার্সিংহোমে। উত্তেজনা সামলাতেই ঘটনাস্থলে সেই সময় সক্রিয় দুই পার্টি নেতা সুরেন্দ্র শর্মা ও বুলেট সিং'রা উপস্থিত হয়েছিলেন। খুন ও নার্সিংহোমে ভাঙচুরের সঙ্গে যুক্ত প্রকৃত দোষীরা অধরা থাকলেও পুলিশ গোটা বিষয়কে আড়াল করে সোমবার রাতে পার্টির ওই দুই নেতাকে গ্রেপ্তার করে। অপরাধকে লঘু করে অপরাধীদের আড়াল করতে অন্যায়ভাবে দুই পার্টি নেতাকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে গোটা ডাবগ্রাম এলাকায় সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক অসন্তোষের সৃষ্টি হয়। অবিলম্বে ধৃত দুই পার্টি নেতার মুক্তির দাবিতে এদিন সকালে এলাকার সাধারণ মানুষ ঐক্যবদ্ধভাবে ভক্তিনগর থানায় গিয়ে দীর্ঘসময় বিক্ষোভ প্রদর্শন করে।
শাসকদলের প্রত্যক্ষ মদতে শিলিগুড়ি শহর অপরাধীদের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়ে যাচ্ছে। খুন, ধর্ষণ প্রতিদিন হচ্ছে। শহর জুড়ে এই ভয়ঙ্কর পরিস্থিতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে সাংবাদিক বৈঠকে নেতৃবৃন্দ আরো বলেছেন, ডাবগ্রাম এলাকার খুনের ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত করা পুলিশের কাজ। যদিও কোনভাবেই নার্সিংহোম ভাঙচুর চালানো কাম্য নয়। ধৃত দুই পার্টি নেতা খুনি নয়। কেউই নার্সিংহোমে মারামারি করতে যাননি। প্রশ্ন তোলেন, যদি দুই পার্টি নেতা গ্রেপ্তারের এই ঘটনা মেনেও নেওয়া হয়, তাহলে কি শুধুমাত্র এই দুইজনই গোটা ঘটনার সাথে যুক্ত ছিলো। কেন অন্য কোন কাউকে গ্রেপ্তার করলো না পুলিশ। সম্প্রতি অমিয়পাল চৌধুরী স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেনীর নাবালিকা ছাত্রীকে শারিরীক অত্যাচার ও খুন করার প্রসঙ্গ তুলে বলেন, খুনীদের গ্রেপ্তার করার ক্ষেত্রে পুলিশের ভূমিকা একেবারেই সন্তোষজনক নয়।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষা না করে প্রশাসন শাসকদল রক্ষাকারী হয়ে কাজ করছে। জমির লুটেরা, সমাজবিরোধী কার্যকলাপ করা দুষ্কৃতিদের রক্ষা করতে তৎপর পুলিশ। সাধারণ মানুষ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। আসলে তৃণমূল যে কাজ করতে চাইছে পুলিশ তৃণমূলের হয়ে সেই কাজ করছে। প্রশাসনকে প্রমান দিতে হবে তারা নিরপেক্ষভাবে কাজ করছেন। এই সবের বিরুদ্ধে আন্দোলনে রাস্তায় রয়েছি আমরা। পুলিশ প্রশাসনের এই ধরনের কার্যকলাপ কোনভাবেই বরদাস্ত করা হবে না।
Comments :0