Southern Approach

দক্ষিণপন্থার সাদৃশ্য ভারত-ব্রাজিলে

সম্পাদকীয় বিভাগ

প্রতিষ্ঠিত তথ্য হয় সরকার অস্বীকার করে, নয়তো অবজ্ঞা করে। এই উক্তি আরএসএস’র সাধারণ সম্পাদক দত্তাত্রেয় হোসাবালের। ২ অক্টোবর আরএসএস’র সংগঠনদ স্বদেশী জাগরণ মঞ্চের অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করে এই শীর্ষনেতা ২ অক্টোবর একথা বলেছেন। বিরোধীপ‍‌‍‌ক্ষের কেউ বললে মোদী-শাহ তাঁকে দেশবিরোধী, জাতিয়তাবিরোধী এবং ভারতের ভালো কিছু দেখতে পায় না, দেশের শত্রুদের চক্রান্ত— এ ধরনের পালটা আক্রমণ নির্ঘাত করতেন, যা মোদী সরকারের অনুসৃত কৌশল। মিডিয়া ফলাও করে সরকারি প্রচারে মেতে ওঠে। ভারত কিভাবে এগিয়ে যাচ্ছে, আট বছরে পাঁচ হাজার কোটি টাকারও বেশি বিজ্ঞাপনে সেটা অবিশ্রান্ত প্রচার করছে আবার তার ঢাক বাজানোর জন্য মিডিয়াও নিয়োজিত। সাধারণ মানুষের অসহনীয় অবস্থা বা বিরোধী কোনও সমালোচনা বা বক্তব্য মিডিয়ায় তেমন আমল পায় না।
উত্তরহীন প্রশ্ন
আরএসএস নেতার বক্তব্যও এই মিডিয়ার প্রচারে উপেক্ষিত। দু’-একটি সংবাদপত্রে গৌণ আকারে প্রকাশিত আরএসএস-এ ক্ষমতাশালী মোহন ভাগবতের পর দ্বিতীয় পদমর্যাদার নেতা বলেছেন, ‘দারিদ্র দৈত্য আকারে দেশের সামনে দাঁড়িয়ে আছে। এই দৈত্যকে তাড়াতে হবে। ২০ কোটি মানুষ দারিদ্রসীমার নিচে, ২৩ কোটি লোকের দৈনিক আয় ৩৭৫ টাকার কমও দেশের এক বিরাট অংশে পানীয় জ‍‌লের ব্যবস্থা নেই, পুষ্টিকর খাদ্য নেই, শিক্ষার মান নিম্ন, পরিসংখ্যান অনুযায়ী সেরা অর্থনীতির বিচারে ভারত দুনিয়ায় দু’নম্বরে। এই পরিসংখ্যান দিয়েই কী ভালো অবস্থা বলা যায়! নিচের দিকের ৫০ শতাংশ মানুষ মোট জাতীয় আয়ের মাত্র ১৩ শতাংশ পায়। অন্যদিকে ওপরের ১ শতাংশের হাতে জাতীয় আয়ের ২০ শতাংশ। দেশের চার কোটি বেকার, সরকার সবটা অস্বীকার করে বা অবজ্ঞায় উড়িয়ে দেয়। যেমন ২০১৯ সালের গোডায় সরকারেরই নিজস্ব সমীক্ষায় বলা হয়, ২০১৭-১৮ সালে যা বেকারি, তা ৪৫ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। সরকারই তার এই সমীক্ষা বিপোর্ট মেনে নিতে রাজি হয়নি। ২০১৯ সালের শেষে সরকার এই রিপোর্ট আর খণ্ডন করেনি, মেনে নিয়েছিল। বোঝা যায়, উন্ন‌য়ন  হচ্ছে কিন্তু কর্মসংস্থান বাড়ছে না। আর্থিক অসাম্য নিয়ে বিশ্ব অসাম্য রিপোর্টে বলা হয়েছে, ক্রমবর্ধমান অসাম্যের সবচেয়ে খারাপ দেশগুলির মধ্যে ভারত অন্যতম। এই রিপোর্টের‍‌ বিশ্বস্ততা সম্পর্কেই সরকার প্রশ্ন তোলার রাস্তা বেচে নিয়েছে। বিশ্ব ক্ষুধা সূচকে ১১৬টি দে‍‌শের মধ্যে ভারতের স্থান ১০১। মহিলা ও শিশু উন্নয়ন মন্ত্রক থেকে বলা হয়েছে, এই হিসাব অবৈজ্ঞানিক। সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী হয়ে তাদের দেশ পরিচালনায় কেন এই দশা? উত্তর কোথায়!
আরএসএস উদারীকরণ, বিশ্বায়নের বিরোধিতা ও ‘স্বাবলম্বী ভারত’ গড়ার প্রচারের জন্য ১৯৯১ সালের শেষে আরএসএস নাগপুরে এই সংগঠনের জন্ম দেয়। বাজপেয়ী সরকার (১৯৯৮-২০০৪) কংগ্রেসের চেয়েও আগ্রাসীভাবে চালায় নয়া উদারীকরণ, বেসরকারিকরণ। এই সংগঠন তধন মুখ ঢেকে বলে, অজুহাত দিল কোয়ালিশন সরকার স্বাবলম্বী ভারত অভিযান করতে পারছে না! মোদী সরকারের আট বছরে উন্নয়নের একতরফা ফিরিস্তি মোদীরা দিয়ে চলেছেন, আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত মন্দির নির্মাণ সহ উন্নয়নকে প্রশংসাই করে চলেছেন, দত্তাত্রেয় বক্তৃতা খণ্ডনও করেননি।
বেকারি, দারিদ্র, মূল্যবৃদ্ধি, ক্রমবর্ধমান আয়-বৈষম্য সঙ্ঘ পরিবারের আর্থিক নীতির পরিণামেই। আরএসএস’র আজ্ঞাবহ মোদী সরকারের বেপরোয়া উদারীকরণ, বেসরকারিকরণে যে ধ্বংস অনিবার্য, তা-ই ঘটছে। আরএসএস বা স্বদেশি জাগরণ মঞ্চ তা খুব ভালো করেই জানে। তথ্য অস্বীকার করা শুধু নয়, তথ্য বিকৃতিতেও মোদী ও তার সরকার অদ্বিতীয়, প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ ও উন্নয়নের গল্প বানাতেও অদ্বিতীয়। পেট্রোল, ডিলেজ ইত্যাদির ওপর ট্যাক্স বাড়ি‍‌য়ে মোদী সরকার ৪ লক্ষ কোটি টাকা সংগ্রহ করেছে। সরকার কর্পোরেট ও বৃহৎ ধনীদের বিরাট সম্পত্তি বৃদ্ধির ওপর কোনও ট্যাক্স বসাচ্ছে না, বাড়াচ্ছেও না, বরং কমিয়ে দিয়েছে। বছরে কর্মপ্রার্থী নতুন কর্মপ্রার্থী বেকারদের মাইনে যুক্ত হচ্ছে ১.২০ কোটি। স্তূপীকৃত বেকার সমস্যার কোনও সুরাহা নেই। এ সময়ে কর্মরতদের কাজ ধ্বংস করে সরকারও ৩.৬৩ লক্ষ কোটি টাকার জাতীয় সম্পত্তি বিক্রি করেছে। আরএসএস, স্বদেশি মঞ্চর কোনও উত্তর নেই, ধর্মীয় উসকানি দিয়ে প্রত্যন্ত অঞ্চলে গিয়ে অসত্য প্রচারই করছে। আবার ‘ন্যাশনাল মনিটাইজেশন পাইপলাইনে’ দেশের যাবতীয় পরিকাঠামোও বিক্রি করে দেওয়া হচ্ছে ৬ লক্ষ কোটি টাকার অমূল্য জাতীয় সম্পদ। সর্বস্বান্ত কৃষক, খেতমজুরদের দেওয়া প্রতিশ্রুতি সরকারই ভঙ্গ করছে। উপরন্তু ট্রেড ইউনিয়ন ভাঙার ও কৃষক আন্দোলন ভাঙার বিপুল আয়োজন। স্বাস্থ্য পরিষেবায় ও সরকারি চিকিৎসা ব্যয়ে ১৯৬টি দেশের মধ্যে ভারতের স্থান ১৮৪তম। এটাই ভয়াবহ আর্থিক হাল এবং দেশের কর্মপ্রার্থী ও কোটি কোটি গ্রাম-শহরের শ্রমজীবীদের বাস্তব দুর্দশা। উন্নয়ন? পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম ধনিতে পরিণত হয়েছে গৌতম আদানি, এই দশ বছরে বি‍‌ষেশত ৮ বছরে আদানির সম্পত্তি বেড়েছে ১৮গুণ। আম্বানির ৪গুণ। 
বিলিওনিয়ার ও তাদের সম্পত্তি গগণচুম্বী। গত পাঁচ বছরে প্রতিদিন নতুন কোটিপতি তৈরি হয়েছেন ৭০জন। ১০ বছরে ১০০ কোটি টাকার সম্পদের মালিক বা বিলিওনেয়ারদের সম্পদ বেড়েছে ১০গুণ। এগুলিও আন্তর্জাতিক স্বীকৃত প্রতিষ্ঠানের রিপোর্ট। এই দেশপ্রেমিক লুটেরারাই সঙ্ঘ পরিবার, আরএসএস এবং মোদী সরকারের প্রধান অবলম্বন, মূল সম্পদ, ওদের জন্মের সময় থেকেই। গরিবদের জন্য যাদের ‘অশ্রুপাত’, কিন্তু এই লুটেরা সম্পদশালীদের জন্য সবেরাচ্চ মর্যাদা বর্ষিত হয় তাদেরই। এরাই বিজেপি-আরএসএস’র ভিত্তি, যেমন বিদেশি কর্পোরেটরাও। ‘স্বদেশী’, ‘আত্মনির্ভর ভারত’ নিয়ে চলতে থাকবে উদ্দাম প্রচার। মজুত রয়েছে মিডিয়া, হাজার হাজার কোটি টাকা খরচে প্রচারক ট্রোল বাহিনী, যারা যে কোনও বিদ্বেষ, কুৎসা ও সংবাদ বিকৃত অহরহ ঘটিয়ে যায়। এ নিয়ে বিতর্ক, আলোচনা- সমালোচনা হলে অঙ্গুলিহেলনে বেসরকারি তাণ্ডববাহিনী ও কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থাগুলির কোপ নেমে আসে। তথ্য ও সত্যকে ওলটানোর রাজত্বই ভারতে চলছে। তাতে গণতন্ত্র ও আইন, সুবিচার-নির্মূল করা বিভাজন-বিদ্বেষে দেশকে ডুবিয়ে রেখে হিন্দুরাষ্ট্রের জয়গানই যাদের একমাত্র ধ্যানজ্ঞান ও মুখ্য কাজ। মুখে যাই বলুক ক্রমবর্ধমান দারিদ্র, অসাম্য, কর্মহীনতা, তাদের কাছে নির্বিষ আলোচনা।
ব্রাজিলের নির্বাচন
প্রায় সব জনমত সমীক্ষায় বলা হয়েছিল প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বামপন্থী ওয়ার্কাস পার্টির প্রার্থী লুলা’র জনপ্রিয়তা দ্রুত বাড়ছে, যা ৯জন প্রার্থীর মধ্যে প্রথম রাউন্ডের ভোটে লুইজ লুলা দা সিলভা বড় ব্যবধানে ৫০ শতাংশের বেশি ভোট পেতে পারেন, তাহলে দ্বিতীয় দফার নির্বাচন হবে না। এবং বর্তমান প্রেসিডেন্ট জায়ার বোলসোরানো দ্বিতীয় বারের জন্য নির্বাচিত হতে পারবেন না। কিন্তু ২ অদ্টোবরের প্রথম দফার নির্বাচনে লুলা ৪৮ শতাংশ ও জায়ার ৪৩ শতাংশ ভোট পেলে মিডিয়ায় প্রচার শুরু হয়ে গেল যে, লুলা পরাস্ত হয়েছেন এবং জায়ার ভোটের হার অনেক বাড়িয়েছে ও বাড়াবেন। ফলে ৩০ অক্টোবর দ্বিতীয় দফার নির্বাচনে এই দুই প্রার্থীর প্রতিদ্বন্দ্বিতায় প্রেসিডেন্ট জায়ারের পক্ষে শুরু হয়েছে মিডিয়ার তুমুল প্রচার।
ব্রাজিলের লোকসংখ্যা ২১ কোটির বেশি। ১৫ কোটি ভোটারের মধ্যে ১২.৩০ কোটি ভোট দিলেও অনেকে ভোট নষ্ট করেছেন। জায়ার বোলসোরানোর সমর্থনের ভিত্তি হলো, সামরিক বাহিনীর লোকজন, বর্ণবিদ্রেষী বলে শ্বেতাঙ্গদের মধ্যে একটা অংশের সমর্থন পায়, আবার উগ্র খ্রিস্টানপন্থী সম্প্রদায়কে গত পাঁচ বছরের জায়ার সব সহায়তা দিয়েছে ভোটের অঙ্ক বাড়াতে। এমনকি তাদের একজনকে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিও করা হয়েছে। অন্যদিকে ক্যাথলিক চার্চের বড় অংশের বক্তব্য, এই উগ্রশক্তি ক্ষমতায় এলে ব্রাজিলের সেকুলার গণতান্ত্রিক সংবিধান ধ্বংস হবে এবং স্বৈরতান্ত্রিক একনায়তন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে। এক বড় অংশের মিডিয়া নেমেছে জঙ্গি বাহিনীর প্রার্থী জায়ারের সমর্থনে।
বামপন্থী ছাড়া অন্য মধ্যপন্থী ও এমনকি কিছু দক্ষিণপন্থীদেরও সমর্থন নতুন করে পাচ্ছেন লুলা। মহিলা, গরিব, শ্রমজীবী এবং সংখ্যালঘু জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে লুলার পক্ষে সমর্থন বেশি। উল্লেখ্য, বিচারবিভাগের নিকৃষ্ট ষড়যন্ত্র, মিডিয়ার ভূমিকা ছাড়াও আমেরিকান প্রশাসনের গোপন হস্তক্ষেপ ২০১৮ সালে বোলসোরানোকে ক্ষমতায় বসায়। ফেসবুক ও হোয়াইট অ্যাপকে তখন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে রেখে জায়ার নির্বাচনে লড়েছিল আমেরিকার কেন্দ্র ও ব্রাজিলের পারিবারিক কেন্দ্রের সম্মিলিত অভিযানের মধ্য দিয়ে, ব্রাজিলে সামরিক শাসনের কৃতিত্ব প্রচার করে এবং বামপন্থী ও গণতান্ত্রিক শক্তিকে দমনের হুঙ্কার দিয়ে।
লুলার শাসন গোটা লাতিন আমেরিকার জনগণকে উদ্দীপ্ত করেছিল, দারিদ্র দূরীকরণ ও এত সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা ব্রাজিল আগে কখনও দেখেনি। তখন ৯ বছর ধরে প্রেসিডেন্ট লুলার বিরুদ্ধে দেশের ও পশ্চিমী মিডিয়া প্রায় প্রতিদিন নানা গল্প বানিয়ে ও মিথ্যা প্রচারে মাধ্যমে লুলার চরিত্রহননে নেমেছিল। এমনকি ‘গার্ডিয়ান’ পত্রিকা এবং বামঘেঁষা বলে পরিচিত ‘জ্যাকোবিন’ সংবাদমাধ্যমও এই কুৎসা প্রচারে এবং পরবর্তী প্রেসিডেন্ট দিলমা রোউসেফের বিরুদ্রেও চরম দক্ষিণপন্থার প্রচারে মদত জোগায়। ষড়যন্ত্র বিচারবিভাগেও হয় যা পরবর্তীকালে ফাঁস হয়ে যায় এবং ৫৮০ দিন জেলে থাকার পর সব অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হলে বিজয়ীর মতো রাজনৈতিক আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে প‍‌‍ড়েন। ২০১৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তাঁকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে দেওয়া হয়নি, প্রমাণ হয় এটাই ছিল বোলসোরানো এবং আমেরিকার শক্তিশালী তদন্ত সংস্থা এফবিআই’র যৌথ ষড়যন্ত্রের ছক। জায়ারের নয়া-নাৎসি বাহিনী তখন থেকে এখনও বিরোধীদের ওপর হামলা, হত্যার হুমকি ইত্যাদি কাজে লিপ্ত। ‍ আগ্রাসী উদারীকরণের ধান্দার অর্থনীতিতে নায়ার দেশকে ছেয়ে নিয়েছে। যে গুরুতর আর্থিক দুর্নীতি, মারাত্মক ফৌজদারি অপরাধের অভিযোগ প্রেসিডেন্ট জায়ারের বিরুদ্ধে উঠেছে, নির্বাচনে না-জিতলে তার কারাবাস অবধারিত। একারণে জায়ার আরও বেশি মরিয়া। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের মতো না-জিতলে গণনার ব্যবস্থার গলদের কথা তুলে ভোটের রায় মানবেন না, জায়ার এক বছর আগে থেকেই এই প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন।
দ্বিতীয় রাউন্ডের সমীক্ষায় একটি অগ্রণী সংস্থা রিপোর্ট দেয়, লুলা আনুমানিক ৫৪ শতাংশ এবং জায়ার ৪৬ শতাংশ ভোট পাবেন। ২৮ বছরের মধ্যে এই নির্বাচনে অনুপস্থিতি ছিল সবচেয়ে বেশি। সমীক্ষায় তাঁদের অধিকাংশ বলেছেন লুলার পক্ষেই তাঁরা থাকবেন। প্রথম দফার নির্বাচনে মহিলা প্রার্থী সীমন তেবেত ঘোষণা করেছেন, তাঁর দল লুলাকে সমর্থন করবে। তিনি ৪.১৯ শতাংশ বা ৪৯ লক্ষ ভোট পেয়ে তৃতীয় হয়েছিলেন। সিরো গোমস, চতুর্থ স্থানাধিকারী প্রার্থী ৩ শতাংশ বা ৩৫ লক্ষ ভোট পান, তিনিও লুলাকে সমর্থনের কথা ঘোষণা করেছে। এভাবে গণতন্ত্র ও সংবিধানের সংকটের সামনে বাম, উদারনৈতিক ও দক্ষিণপন্থীদের একটা অংশও লুলার পক্ষে প্রচার করছেন, যেমন প্রচার করছেন প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট (১৯৯৫-২০০২) ফার্নান্দো কারডোসো। বিপদে দিশাহারা হয়ে জায়ার শেষ মুহূর্তে দাম কমানো কিছু আর্থিক সুবিধাদান ইত্যাদি ঘোষণা করছেন, তাঁর উন্মত্ত জঙ্গি বাহিনীও নেমে পড়েছে সোশাল মিডিয়াতে কদর্য প্রচারের মাত্রাও এরা বাড়িয়েছে।
উগ্র ধর্মান্ধতা, বর্ণবিদ্বেষী, গণতন্ত্র ও সংবিধানের ওপর আক্রমণ, বিরোধীদের প্রতি প্রতিহিংসা, মিডিয়াকে বশংবদ করে তোলা, শেষ মুহূর্তে লোকরঞ্জনমুখী আর্থিক ঘোষণা ইত্যাদি অনেকক্ষেত্রে ভারতীয় পরিস্থিতিতে বিজেপি’র সঙ্গে ব্রাজিলের মিল আছে। ২ অক্টোবর বামপন্থী ভোট কাটার জন্য ভিন্ন ভূমিকার দু’জন প্রার্থীকে তৃতীয় বিকল্প বা বামঘেঁষা স্লোগান দিয়ে দাঁড় করানো হয়। মোদী রাজত্বের সঙ্গে জায়ার রাজত্বের হৃদ্যতা যথেষ্ট। এ কারণেই কায়দা-কৌশলেও মিল আছে। দুনিয়ার চরম দক্ষিণপন্থী ও নয়া ফ্যাসিস্তদের সাদৃশ্য স্বাভাবিকই।

Comments :0

Login to leave a comment