ইস্পাত কারখানা করবেন সৌরভ গাঙ্গুলি। বাংলার সৌরভ বাংলাতেই বিনিয়োগ করবেন। কিন্তু শুক্রবার সেই ঘোষণা করলেন সুদূর মাদ্রিদে। এই শহরেই এদিন শিল্প সম্মেলন করেছেন স্পেন সফররত মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি।
সৌরভ জানিয়েছেন এর আগে দু’টি ইস্পাত কারখানায় বিনিয়োগ করেছেন তিনি। তার একটি বিহারে, আরেকটি এ রাজ্যে। তৃতীয় কারখানা খুলবেন মেদিনীপুরে।
পশ্চিমবঙ্গে বিদেশি বিনিয়োগ আনার লক্ষ্য ঘোষণা করে বিদেশ সফরে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। দুবাই এবং স্পেনে তাঁর যাওয়ার ঘোষণা ছিল আগে থেকেই। সফরের গুরুত্বপূর্ণ প্রাপ্তি সম্পর্কে সোশাল মিডিয়ায় পোস্ট দিচ্ছেন মমতা ব্যানার্জি।
১৩ সেপ্টেম্বর জানিয়েছিলেন দুবাইয়ে হঠাৎ করেই তাঁর সঙ্গে দেখা হয়ে গিয়েছিল শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রপতি রনিল বিক্রমসিঙ্ঘের। তাঁর সঙ্গে ছবি পোস্ট করে মমতা জানিয়েছিলেন যে এ বছরে তাঁর ‘গ্লোবাল বিজনেস সামিট’-এ আমন্ত্রণ জানিয়েছেন শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রপতিকে।
আরেকটি পোস্টে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন যে পোশাক ফ্যাশন সংস্থা ‘জারা’-র এক কর্তার সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। এ বছর ডিসেম্বরের মধ্যেই শুরু হবে উৎপাদন। তার জন্য একশো একর জমির ব্যবস্থা করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন মমতা ব্যানার্জি। তবে লগ্নির অঙ্ক জানানো হয়নি পোস্টে, সম্ভাব্য কর্মসংস্থান সম্পর্কে তথ্য নেই। রাজ্যে বাজার না পেয়ে তাঁতশিল্পীদের আত্মহত্যার একাধিক ঘটনার মাঝে বিনিয়োগের এই তথ্য দিয়েছেন তিনি।
লা লিগার সভাপতি জাভিয়ের তেবাস মেদরানোর সঙ্গে বৈঠকের পর দু’হাতে মাথার ওপর ফুটবল ধরে থাকার ছবিও পোস্ট করেছেন মমতা। যার সঙ্গে ‘খেলা হবে’ স্লোগানে একাধিক ছবির মিল খুঁজে পাচ্ছেন কেউ কেউ। মেদরানো জানিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গে ফুটবল অত্যন্ত জনপ্রিয়। ভারতের এই রাজ্যে ফুটবলের প্রসারের জন্য যৌথ উদ্যোগ নেওয়া হবে।
কিন্তু প্রশ্ন উঠেই রয়েছে যে বিনিয়োগ বলতে যা বোঝায় তেমন সমঝোতা কোথায়? সঙ্কটে জর্জরিত স্পেনকে কেনই বা বাছা হয়েছে বিদেশি লগ্নি খুঁজতে, উঠেছে সেই প্রশ্নও। সাধারণভাবে শিল্প সফরের আগে প্রাথমিক কথাবার্তা হয়। তারপর সফরে সমঝোতা হয়। বিনিয়োগ সত্যিই আসবে কিনা, তা এরও পরের বিষয়। এই সফরে জানানো হয়নি কোন কোন সংস্থার সঙ্গে চুক্তি করতে যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী।
দিল্লিতে জি ২০ শীর্ষ সম্মেলনে ভারতের মুনাফা কতটা স্পষ্ট হয়নি। জলবায়ু চুক্তি অনুযায়ী এগনোর ক্ষেত্রে প্রযুক্তি দেওয়ার নির্দিষ্ট চুক্তি কী, তা-ও জানা যায়নি। কেবল পশ্চিম এশিয়া হয়ে ইুরোপে যাওয়ার সংযোগ পরিকাঠামোয় আদানি গোষ্ঠীর ফয়দার সম্ভাবনা জানা গিয়েছে। সম্মেলন নিয়ে যদিও সাফল্যের বিবিধ প্রচার চালাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী।
তার পরপরই মুখ্যমন্ত্রীর সফরও অনেকটা তেমনই কিনা উঠেছে সে প্রশ্নও। এর মধ্যেই দেশের প্রাক্তন ক্রিকেট অধিনায়কের ঘোষণা একমাত্র যেখানে নির্দিষ্ট একটি প্রকল্পের উল্লেখ রয়েছে। একই ঘোষণা যদিও বাংলাতেই করতে পারতেন সৌরভ গাঙ্গুলি। তার জন্য বিদেশ সফরেরও দরকার ছিল না।
শুক্রবারই কলকাতায় এসএফআই এবং ডিওয়াইএফআই’র সমাবেশে মুখ্যমন্ত্রীর সফর ঘিরে মন্তব্য করেছেন সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। তিনি বলেছেন, এই সফর বিদেশি বিনিয়োগ আনার জন্য নয়। দুর্নীতির অর্থ রাখতে এই ব্যবস্থা।
Comments :0