Cultivation

বৃষ্টি কম, আমন ধান চাষে ক্ষতির আশঙ্কা

জেলা

আষাঢ় মাস শেষ হতে চলল। এখনো সেভাবে বৃষ্টির দেখা নেই। জুন মাসে বৃষ্টির ঘাটতি ছিল ৬৪ শতাংশ। জুলাইয়ে সে ঘাটতির পরিমাণ আরো বাড়বে বলেই জেলা কৃষি দপ্তরের অভিমত। বর্ষার মরশুমে ১ জুন থেকে ৯ জুলাই পর্যন্ত জেলায় বৃষ্টিপাত হওয়ার কথা ছিল ৩৩৯ মিলিমিটার। কিন্তু বৃষ্টি হয়েছে মাত্র ১৮২ মিলিমিটার অর্থাৎ এখানেও ঘাটতি রয়েছে। জেলার অধিকাংশ ব্লকে চাষিরা কার্যত হাত গুটিয়ে বসে আছেন। চেয়ে আছেন আকাশের দিকে। কখনো বৃষ্টি আসবে। দু এক জায়গায় কৃষকরা জলাধারের জল দিয়েই কৃষিকাজ শুরু করেছেন। সেই জলেই চলছে ধান রোপনের কাজ। কিন্তু জেলার বৃহৎ অংশের কৃষকরা উৎকন্ঠায় রয়েছেন। বিলম্বিত বর্ষায় বীজতলা তৈরি হয়নি। কৃষি দপ্তর স্বীকার করে নিয়েছেন এখনো এই জেলায় ধান রোপণের কাজ সেভাবে শুরুই হয়নি। বিচ্ছিন্নভাবে দু এক জায়গায় হয়েছে। বৃষ্টির এই ধাক্কাতে আমন চাষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে জেলার কৃষকদের অভিমত।
পুরুলিয়া জেলায় গত বছর আমন ধানের লক্ষ্যমাত্রা ছিল তিন লক্ষ আটচল্লিশ হাজার হেক্টর জমি। চাষ হয়েছিল মাত্র ২ লক্ষ ১ হাজার ৯৪০ হেক্টর জমিতে। এ বছরও লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে তিন লক্ষ আটচল্লিশ হাজার হেক্টর জমিতে। কিন্তু জুলাইয়ের মাঝ বরাবর বৃষ্টির পরিমান যথেষ্ট পরিমাণে কম। যার ছাপ পড়বে আমন চাষে। এই জেলার গ্রামীণ মানুষদের জীবন ও জীবিকার ক্ষেত্রে একমাত্র ভরসা হচ্ছে চাষবাস। রোজগারের বিকল্প কোন পথ নাই। কাজ নাই বলেই কাজের সন্ধানে জেলার বহু ছেলেকে ভিন রাজ্যে পরিযায়ী শ্রমিক হিসেবে কাজ করতে চলে যেতে হচ্ছে। এ বছর বৃষ্টি না হলে গত বছরের মতো অধিকাংশ জমি থেকে যাবে চাষহীন অবস্থায়। 
শুক্রবার জেলায় যতটুকু বৃষ্টি হয়েছে তাতে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে বরাবাজার ব্লকে ৫৮ মিলিমিটার। তারপরে রয়েছে কাশিপুর ৫৬ মিলিমিটার। যেখানে বৃষ্টি হয়েছে সেখানে চাষীরা ধান চাষ করতে মাঠে নেমে পড়েছেন। কিন্তু জেলার অন্যান্য ব্লক গুলিতে বৃষ্টির পরিমাণ এতটাই কম যে সেখানে চাষিরা জলের অভাবে বীজতলা তৈরি করতে পারেনি। অনেক জায়গায় এবছর চাষিরা বীজতলার জন্য জমিতে বীজ ছড়িয়েছিলেন। কিন্তু বৃষ্টির অভাবে চারা আর বেরোয়নি। বৃষ্টি হলে ফের একবার আবার চারা তৈরি করতে হবে। জেলার জলাধার গুলিতেও পর্যাপ্ত জল নেই। কারণ দীর্ঘদিন ধরে সে জলাধার গুলি কোনরকম সংস্কার করা হয় না। দুই একটি জলাধারে যতটুকু পরিমাণ জল আছে সেই জল দিয়ে চাষিরা এখন ধান রোপনের কাজ করছেন। সবে মিলে জেলার বৃহৎ অংশের চাষীরা আশঙ্কায় রয়েছেন।

Comments :0

Login to leave a comment