Ausgram Gang-Rape

আউশগ্রামে নাবালিকাকে দলবেঁধে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তার ৬

রাজ্য জেলা

ফের দলবদ্ধ ধর্ষেণ শিকার নাবালিকা নবম শ্রেণির ছাত্রী। তাকে জঙ্গলের নিয়ে গিয়ে দলবেঁধে ধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ। আউশগ্রাম থানার পুলিশ ছ’জনকে গ্রেপ্তার করেছে। ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রাম থানা এলাকায়। 
অভিযোগ সোমবার আদিবাসী ঘরের নবম শ্রেণির ছাত্রীকে জোর করে বাঁশবাগানে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করা  ঘটনায় জঙ্গলমহলে আদিবাসীদের মধ্যে প্রচন্ড ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। একের পর এক ধর্ষণের ঘটনায় আউশগ্রামে জঙ্গলরাজের অভিযোগ তুলেছে নির্যাতিতার পরিবারও। এই ঘটনায় আউশগ্রাম থানার পুলিশ ৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। তার মধ্যে ৪ জন নাবালক। ধর্ষণের ঘটনায় গ্রেপ্তার হয়েছে তৃণমূলের বুথ সভাপতি বুধি হেমব্রমের ছেলে রাহুল হেমব্রমও। ধর্ষণের ঘটনার ৪ দিন পর থানায় অভিযোগ হয়। পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে লজ্জা ও প্রাণে মেরে ফেলার হুমকির কারনে ধর্ষিতা নাবালিকা  কিছু বলেননি। পরে বাড়ির লোকজন ও স্কুলের শিক্ষিকারা জানতে পারলে তাঁদের উদ্যোগেই  থানায় অভিযোগ দায়ের হয়। স্থানীয় হাই স্কুলের নির্যাতিতার সহপাঠিরা সোচ্চার হয়ে থানায় এসে অভিযোগ দায়ের করেছেন বলে গ্রামের মানুষ অভিযোগ করেছেন। গ্রামবাসীরা আরও অভিযোগ করেছেন এর আগে মহিলা সংক্রান্ত সহ একাধিক অভিযোগে তৃণমূলের বুথ সভাপতি ও তার ছেলে’কে  থানায় যেতে হয়েছিল। এই আউশগ্রাম থানা এলাকায় ভাইফোটা দিতে এসে বাপের বাড়িতে এক আদিবাসী গৃহবধু ধর্ষিতা হন তৃণমূলের বুথ সভাপতির হাতে এমনটাই অভিযোগ। এলাকার মানুষের আন্দোলনের চাপে সেই শাসকদলের বুথ সভাপতিকে পুলিশ গ্রেপ্তার করতে বাধ্য হয়। 
জানাগেছে জঙ্গল ঘেরা নির্জন এই গ্রামে ৭০-৮০ ঘর আদিবাসী মানুষ বাস করেন। সেখানেই তৃণমূলের ব্লক সভাপতি লালনের দাপট আছে। আদিবাসীদের উপর অত্যাচার, দমন পীড়নের ঘটনায়  ক্ষুব্ধ এখানকার মানুষ। যেখানে সোমবার ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে তার ১০০ ফুটের মধ্যে জঙ্গল। সেই জঙ্গলের মধ্যেই তৃণমূলের দুষ্কৃতীদের আনাগোনা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তৃণমূলের এক কর্মী জানিয়েছেন, এই দলে ভালো লোক নেই। বুথ সভাপতি থেকে অঞ্চল সভাপতি, ব্লকসভাপতি সকলের বিরুদ্ধে মহিলা সংক্রান্ত অভিযোগ আছে  এমন অভিযোগ শুনিয়েছেন গ্রামের মানুষও। 
কিশোরীকে দলবেঁধে ধর্ষণ, শ্লীলতাহানি ও ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগে ছ’জনকে গ্রেফতার করেছে আউশগ্রাম থানার পুলিশ। আউশগ্রাম থানা এলাকাতেই ধৃতদের বাড়ি। বৃহস্পতিবার রাতে বাড়ি থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। ঘটনার সময়ের ধৃতদের পরনের পোশাক পুলিশ বাজেয়াপ্ত করেছে। বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কিশোরীর শারীরিক পরীক্ষা করিয়েছে পুলিশ।

ধৃত দুই যুবককে শুক্রবার বর্ধমানের পকসো আদালতে পেশ করা হয়। দু’জনকে ১০ দিন নিজেদের হেপাজতে নিতে চেয়ে আদালতে আবেদন জানায় পুলিশ। দু’জনকে ছ’দিন পুলিশি হেপাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন পকসো আদালতের বিচারক দেবশ্রী হালদার। ধৃত দু’জনের মেডিকেল পরীক্ষা করানোর জন্য আবেদন জানান তদন্তকারী অফিসার। তা মঞ্জুর করে বর্ধমান মেডিকেল কলেজের ফরেন্সিক স্টেট মেডিসিনের বিভাগীয় প্রধানকে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন পকসো আদালতের বিচারক।
পুলিশ জানিয়েছে, আউশগ্রাম থানা এলাকাতেই ওই কিশোরীর বাড়ি। সোমবার সন্ধ্যায় সে তার এক দূর সম্পের্কর আত্মীয়াকে নিয়ে পাশের বাড়ির কার্তিক পুজো দেখে বাড়ি ফিরে আসে। রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ তারা দু’জনে ফের বাড়ির বাইরে বের হয়। সেই সময় অভিযুক্ত দুই যুবক কিশোরীকে জোর করে কিছুটা দূরে বাঁশবাগানে নিয়ে যায়। সেখানে আগে থেকেই চার কিশোর ছিল। কিশোরীর আত্মীয়াকে ভয় দেখিয়ে সেখান থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। এরপর ছ’জনে মিলে কিশোরীর শ্লীলতাহানি করে। পরে দুই যুবক তাকে ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ। ঘটনার কথা কাউকে না জানানোর জন্য কিশোরীকে হুমকি দেওয়া হয়। বাড়ি ফিরে কিশোরী দু’দিন চুপচাপ ছিল। ভয়ে সে কিছু বলতে চায়নি। অনেক চাপাচাপির পর মুখ খোলে সে। ঘটনার কথা পরিবারের লোকজনকে জানায় কিশোরী। এরপর বৃহস্পতিবার কিশোরীর পরিবারের তরফে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। ধৃত চার কিশোরকে জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ডের সামনে পেশ করা হয়েছে।

Comments :0

Login to leave a comment