সিতাই বিধানসভা ভোটে তৃণমূল প্রার্থী সঙ্গীতা রায়ের বিরুদ্ধে এবারে হাইকোর্টে মনোনয়ন বাতিলের দাবিতে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করলেন সিতাই কেন্দ্রের ভোটার ভানু দেব রায় সরকার। গত ২ নভেম্বর মেইল করে নির্বাচন কমিশনের কাছে এই প্রার্থীর মনোনয়নের সময়ে জমা দেওয়া হলফনামায় একাধিক অসঙ্গতির জবাব চেয়েও উত্তর না মেলায় তিনি জনস্বার্থ মামলা করতে বাধ্য হয়েছেন বলে সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন।
অভিযোগকারি মঙ্গলবার সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘তৃণমূল প্রার্থী সঙ্গীতা রায় তপসীলদের জন্য এই আসনে লড়াই করতে তার হলফনামায় নিজেকে তপসীলি জাতির বলে দাবি করে একটি সংশাপত্র নির্বাচন কমিশনের কাছে জমা দিয়েছেন। সংশাপত্র কেউ পেলে নিয়ম অনুযায়ী অনগ্রসর শ্রেণি কল্যান দপ্তরের ওয়েবসাইটে তালিকাভূক্ত হবার কথা। কিন্তু ওয়েবসাইটে সার্চ করলে সঙ্গীতা রায়ের নামে কোন সংশাপত্র দেবার প্রমান মিলছে না। সঙ্গীতা রায় তপসীলি জাতির নন বলেও অভিযোগকারি দাবি করেছেন।’’
এদিন তিনি আরো বলেন,‘‘ তৃণমূলের প্রার্থী সঙ্গীতা রায় কোন সাধারণ নাগরিক নন। তিনি সিতাই পঞ্চায়েত সমিতর সভাপতি। গত পঞ্চায়েত ভোটে তিনি যখন তৃণমূলের হয়ে লড়েছিলেন তখন তিনি নিজের নাম লিখেছিলেন সঙ্গীতা রায় বসুনীয়া। স্বামী জগদীশ চন্দ্র রায় বসুনীয়া। সম্পত্তির যে হলফনামা জমা দিয়েছিলেন সেখানে স্বামীর সম্পত্তির উল্লেখ করেছিলেন। উল্লেখ্য প্রার্থী স্বামী জগদীশ চন্দ্র রায় বসুনীয়া লোকসভার কোচবিহার কেন্দ্রের সাংসদও। মাত্র দু বছর আগে পঞ্চায়েত ভোটে জিতে সঙ্গীতা রায় বসুনীয়া পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি হলেও বিধানসভা ভোটে লড়ার জন্য মনোনয়ন পত্র জমা দেবার সময় পদবী বদলে ফেললেন ভোটার তালিকায়। স্বামীর নামের পরিবর্তে মৃত পিতার নাম উঠে গেল। সবটাই সন্দেহজনক।’’
এদিন অভিযোগকারি ভানু দেব রায় সরকার বলেন,গত ২ রা নভেম্বর ভারতের নির্বাচন কমিশনের কাছে মেইল করে সিতাই বিধানসভা কেন্দ্রের উপ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দি তৃণমূল প্রার্থী সঙ্গীতা রায়ের মনোনয়ন বাতিলের দাবি জানিয়েছিলাম। সেই মেইল রিটার্নিং অফিসার, জেলা ইলেলশন অফিসার তথা জেলাশাসক অতিরিক্ত জেলাশাসক, সিতাই কেন্দ্রের অবজারভার ও দিনহাটা মহকুমা শাসককেও পাঠিয়েছিলাম। ওই মেইলে সঙ্গীতা রায়ের মনোনয়ন পত্র ও হলফনামায় অসঙ্গতির বিষয় উল্লেখ করলেও। কেউই আমার মেইলের উত্তর দেয় নি। বাধ্য হয়েই আমি আদালতের দ্বারস্থ হয়েছি।
এদিকে সিতাই কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থীর মনোনয়ন পত্র ও হলফনামায় অসঙ্গতি এবং তার তপসীলি জাতির সংশাপত্র নিয়ে আরটিআই করলেও জেলা প্রশাসন সেই আরটিআইয়ের জবাব দেয় নি। বামফ্রন্ট মনোনীত ফরওয়ার্ডব্লক প্রার্থী অরুন কুমার বর্মা অভিযোগ করে বলেন, ‘‘জেলা প্রশাসন শাসক দলের হয়ে কাজ করতেই আরটিআইয়ের জবাব দিচ্ছে না।’’
অন্যদিকে সিতাই কেন্দ্রের কংগ্রেস প্রার্থীও একই অভিযোগে হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেছেন। সেই মামলার শুনানি হবে হাইকোর্টের জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চে।
কার্যত আইনি জটিলতায় ফেঁসে রয়েছেন তৃণমূল প্রার্থী সঙ্গীতা রায়।
Sitai
ফের সিতাইয়ের তৃণমূল প্রার্থীর বিরুদ্ধে হাইকোর্টে মামলা দায়ের
×
Comments :0