College admission

প্রথম দিনই ক্র্যাশ করে গেলো কলেজে ভর্তির কেন্দ্রীয় পোর্টাল

রাজ্য

ছবি প্রতীকি

সোমবার থেকে শুরু হয়েছে রাজ্যের কলেজ গুলোয় অনলাইন ভর্তি প্রক্রিয়া। এবারে প্রথমে কলেজে ভর্তি হওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় পোর্টাল চালু করেছে রাজ্য সরকার। আর সেই কলেজ অ্যাডমিশনের কেন্দ্রীয় পোর্টাল প্রথম দিনই সকাল থেকে ক্র্যাশ করে গেলো। এসএফআই আগেই দাবি করেছিল এই পোর্টাল ছাত্র ছাত্রীদের সমস্যা আরও বাড়াবে। তাই প্রমানিত হলো সোমবার।

পোর্টাল কাজ না করায় ফর্ম ফিলাপ করতে বসে সমস্যায় পড়েছেন পড়ুয়ারা। ইতিমধ্যে বিভিন্ন সাইবার ক্যাফেতে লম্বা লাইন চোখে পড়েছে। জানা গিয়েছে ছাত্র ছাত্রীদের মেলে ওটিপি ঢুকছে না ঘন্টার পর ঘন্টা ধরে। 

এসএফআইয়ের পক্ষ থেকে বিভিন্ন জায়গায় হেল্পডেস্ক করা হয়েছে এই ভর্তি প্রক্রিয়ায় ছাত্র ছাত্রীদের সাহায্য করার জন্য। এসএফআই রাজ্য সম্পাদক দেবাঞ্জন দে বলেন, ‘‘রাজ্যের নানা প্রান্তের হেল্প ডেস্ক থেকে অভিযোগ আসছে যে পোর্টাল কাজ করছে না। পড়ুয়াদের মেলে ওটিপি আসছে না। আমরা আগেই আশঙ্কা করেছিলাম এই ধরণের কেন্দ্রীয় পোর্টালের পরিকাঠামো নেই এই সরকারের। বিশ্ববিদ্যালয় ভিত্তিক কেন্দ্রীয় পোর্টালই তাই একমাত্র বিকল্প ছিল। সেটাই প্রমাণিত হচ্ছে অ্যাডমিশনের প্রথম দিন থেকেই। বহু ছাত্রছাত্রী অসুবিধায় পড়েছে। সামগ্রিক অব্যবস্থা দেখা যাচ্ছে।’’

শনিবার সাংবাদিক সম্মেলনে এসএফআইয়ের পক্ষ থেকে এই পোর্টালকে কেন্দ্র করে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছিল। নেতৃত্বের পক্ষ থেকে বলা হয় যে, রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে এবার একটিই পোর্টাল খোলা হয়েছে কলেজে ভর্তি হওয়ার জন্য। সরকারের এই সিদ্ধান্তের ফলে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধিকার খর্ব হচ্ছে। এসএফআই বার বার দাবি করে এসেছে প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয়ভাবে অনলাইনে ভর্তির ব্যবস্থা করুক।

ছাত্র নেতৃবৃন্দের বক্তব্য, বিশ্ববিদ্যালয় স্তরে পোর্টালের মাধ্যমে ভর্তি হলে স্বচ্ছতা বেশি থাকত। উল্লেখ্য, এর আগে রাজ্যে বিভিন্ন কলেজের নিজস্ব পোর্টালের মাধ্যমে ভর্তি নেওয়া হতো। প্রতিবার ছাত্রভর্তির সময় নানা অভিযোগ উঠেছে। কলেজ কর্তৃপক্ষকে চাপ দিয়ে তৃণমূলের ছাত্র সংগঠন নানা কারসাজি চালাচ্ছে বলে সরব হয়েছে বিভিন্ন অংশ। টাকা নিয়ে ভর্তির নানা ঘটনা বারবার সামনেও এসেছে। এই ব্যবস্থা বদলাতেই বিশ্ববিদ্যালয় স্তরে কেন্দ্রীয় পোর্টালের মাধ্যমে ভর্তির দাবিতে সরব থেকেছে এসএফআইর মতো বিভিন্ন বাম ছাত্র সংগঠন।  

এসএফআই নেতৃবৃন্দের বক্তব্য, রাজ্যের শিক্ষা দপ্তর নিয়ন্ত্রিত কেন্দ্রীয় ভর্তি ব্যবস্থা তৃণমূল ছাত্র পরিষদকে ভর্তির সময় দুর্নীতি চালিয়ে যেতে সুবিধা করে দেবে। দেবাঞ্জন বলেন, ‘‘২০১১ সালের পর থেকে এই ভর্তি ব্যবস্থা ব্যবসায় পরিণত করেছে তৃণমূল। আমাদের আশঙ্কা কেন্দ্রীয় ভর্তি ব্যবস্থায় গ্রামাঞ্চলের ছাত্রছাত্রীরা শহরের কলেজগুলির ফর্ম তুলবে। যার ফলে গ্রামাঞ্চলের কলেজে আসন খালি থাকবে। আর সেই আসন টাকার বিনিময় বিক্রি করবে তৃণমূল।’’
দেবাঞ্জন বলেন, ‘‘একজন একজন পড়ুয়া ২৫টি বিষয় ২৫টি কলেজে ফর্ম ফিলাপ করতে পারবে। যদি কেউ ভর্তি হতে না পারে তাহলে কী হবে তার কোনও উত্তর নেই।’’
উল্লেখ্য, ফর্ম ফিলাপের টাকাও অনলাইনে জমা করতে হবে পড়ুয়াদের। কিন্তু সরকারি এই পোর্টালের সঙ্গে কোনও রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের চুক্তি হয়নি। বেসরকারি একটি ব্যাঙ্কের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে। কেন একটি বেসরকারি ব্যাঙ্ককে দায়িত্ব দেওয়া হলো তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে বিভিন্ন বামপন্থী ছাত্র সংগঠন। 

এসএফআই রাজ্য সম্পাদক বলেন, ‘‘এই কেন্দ্রীয় ব্যবস্থা রাজ্যের বুকে শিক্ষা ব্যবস্থায় দুর্নীতির রাস্তা আরও চওড়া করে দিল। গোটা দেশে দেখা গিয়েছে কেন্দ্রীয়ভাবে এনটিএর হাতে পরীক্ষার দায়িত্ব দিয়ে দুর্নীতি হয়েছে। পরীক্ষা বাতিল করতে হয়েছে।’’

Comments :0

Login to leave a comment