SALIM BANGLADESH

সাম্প্রদায়িক রাজনীতিতেই সংখ্যালঘুর অধিকার বিপন্ন বাংলাদেশে: সেলিম

রাজ্য

ছবি সংগ্রহ থেকে।

বাংলাদেশে যা ঘটছে তাতে আমরা খুশি নই। শান্তি ও সম্প্রীতির জন্যই গণতান্ত্রিক এবং ধর্মনিরপেক্ষ কাঠামো গুরুত্বপূর্ণ। ধর্মাশ্রিত রাজনীতি সংখ্যালঘুদের, প্রান্তিক অংশের ওপর অত্যাচার চাপিয়ে দেয়। সাম্প্রদায়িক দৃষ্টিকোণ থেকে কোথাও সংখ্যালঘুর অধিকার প্রতিষ্ঠা করা যায় না।  
বাংলাদেশের পরিস্থিতি সম্পর্কে এক প্রশ্নে বৃহস্পতিবার এই মন্তব্য করেছেন সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। 
এদিনই বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার দাবি তুলেছে সিপিআই(এম) পলিট ব্যুরো। 
এদিনই কলকাতায় মিছিল করে বাংলাদেশে ধৃত চিন্ময়ানন্দ দাশের মুক্তির দাবিতে মিছিল করেছে হিন্দু জাগরণ মঞ্চ। রাজ্যের অন্যত্রও আরএসএস’র সহযোগী হিসেবে পরিচিত এই সংগঠন মিছিল করেছে। ‘জিহাদিদের চামড়া গুটিয়ে দেওয়ার’ মতো স্লোগান দিয়েছে। রাজনৈতিক প্রচারে মুসলিমদের লক্ষ্যবস্তু করতে বিভিন্ন সময়েই যা শোনা যায় বিজেপি এবং আরএসএস’র অনুগামীদের মুখে।
সেলিম বলেছেন, ‘‘কমিউনিস্ট হিসেবে, বামপন্থী হিসেবে, প্রগতিশীল হিসেবে আমাদের বলতে হয় যে ধর্মাশ্রিত রাজনীতি করবেন না। তাতে প্রান্তিক মানুষ, দুর্বল অংশ, সংখ্যালঘু তাদের ওপর অত্যাচার হয়।’’ 
সিপিআই(এম) পলিট ব্যুরোর এই সদস্যের সংযোজন, ‘‘আমাদের রাজ্যে যারা গণতন্ত্র এবং ধর্মনিরপেক্ষতাকে শেষ করতে চাইছে তারাই একই পদ্ধতিতে হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ বলে এরাজ্যে ‘হিন্দু খতরে মে হ্যায়’ বলে হিন্দু জাগরণের স্লোগান তুলছে। আসলে আধিপত্যবাদ হচ্ছে।’’ 
সেলিম বলেছেন, ‘‘আমরা চাই ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক কাঠামো যেখানে শান্তি এবং সম্প্রীতি থাকবে।’’
বাংলাদেশে যা ঘটছে তাতে আমরা কেউই খুশি নই। ধর্মের সঙ্গে রাজনীতি মেশানো হলে, বাংলাদেশ হোক বা পাকিস্তানে বা ভারতে,  ‘অন্ধ সে জন মারে আর শুধু মরে।‘ আফগানিস্তান তার উদাহরণ হয়েছে। আমরা রোহিঙ্গাদের ওপর আক্রমণ দেখেছি (বার্মায়)।
বিজেপি এবং আরএসএস’র মতো ধর্মীয় সাম্প্রদায়িক সংখ্যাধিক্যবাদী রাজনীতির দ্বিচারিতা স্পষ্ট করেন সেলিম। তিনি বলেন, ‘‘এখানে আমরা সংখ্যালঘুদের অধিকারের কথা বললে এরাই বলে মুসলিম তোষণ হচ্ছে। বাস্তবে সংখ্যালঘুর অধিকার বলতে কিন্তু কোনও একটি ধর্ম বা অংশকে বোঝায় না। যেমন ইউরোপে বা পশ্চিমে যে এশীয় বংশোদ্ভূতরা যান তাঁরা সংখ্যালঘু, তাঁদের অধিকারের দাবি তোলাও গুরুত্বপূর্ণ। আবার বাংলাদেশে যাঁরা সংখ্যালঘু ধর্মের বিচারে তাঁরা হিন্দু। তাঁদের অধিকার এবং সুরক্ষার কথাও আমাদের বলতে হবে। ফলে সংখ্যালঘু অধিকারের কথা বলতে হয় ধর্মনিরপেক্ষতার দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে। তোমার হিংসা খারাপ, আমার হিংসা ভালো- এই রাজনীতিকে পরিত্যাগ করতে হবে।’’   
সংখ্যাধিক্যবাদের ব্যাখ্যায় সেলিম বলেন, ‘‘ধর্ম নিয়ে কেন ক’রে? এটাকে বলে সংখ্যাধিক্যবাদ। যে যেখানে বেশি সংখ্যায় রয়েছে তার আধিপত্য তৈরি করতে হবে। পাকিস্তানে মুসলমান বেশি আছে। সেখানে ‘ইসলাম খতরে মে’ বলে নামলে সেখানে আদিবাসী, খ্রীস্টান, শিখ, হিন্দুদের তার ওপর আক্রমণ হবে। বাংলাদেশে এখন তাই হচ্ছে।’’
সাম্প্রদায়িক রাজনীতির চেহারা তুলে ধরে সেলিম বলেন, ‘‘মন্দির-মসজিদ নিয়ে যদি রাজনীতি হয়, তা (উত্তর প্রদেশের সম্ভাল বা আফগানিস্তান বা ইসলামাবাদ বা বার্মা, সব ক্ষেত্রেই, কমিউনিস্ট হিসেবে, বামপন্থী হিসেবে, প্রগতিশীল হিসেবে আমাদের বলতে হয় ধর্মাশ্রিত রাজনীতি করবেন না। তাতে প্রান্তিক মানুষ, দুর্বল অংশ, সংখ্যালঘু তাদের ওপর অত্যাচার হয়।’’

Comments :0

Login to leave a comment