মেয়ের ইচ্ছা অনুযায়ী পুজোর পরেই বিয়ের ব্যবস্থা করার কথা ছিলো। এখন অপরাধীদের বিচারের খবর দেখার আশা নিয়ে সারাক্ষণ টিভির দিকে তাকিয়ে বাবা মা।
আরজি করে রাতে ধর্ষণ ও খুন হয়ে যাওয়া কর্তব্যরত মহিলা চিকিৎসকের বাড়িতে গিয়ে শনিবার ব্যক্তিগত ভাবে দেখা করেন ও কথা বলেন জাতীয় কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরী। তাঁকে একথা জানান মৃতার বাবা - মা। সংবাদ মাধ্যমে একথা জানিয়ে অধীর চৌধুরী বলেন, মৃতার বাবা - মা যখন বিচার পাওয়ার অপেক্ষায়, মুখ্যমন্ত্রী তখন সরকারের ভাবমূর্তি বাঁচাতে তথ্য ঢাকতে ব্যাস্ত। তিনি বলেন, একজন নাগরিক হিসাবে আবেগের তাড়নায় কংগ্রেসের চিকিৎসক সেলের কর্মীদের সাথে তিনি মৃতার বাবা - মার সাথে দেখা করতে এসেছেন।
সিবিআইকে তদন্ত করতে দিয়ে বিচারে জল ঢেলে দেওয়া হয়েছে বলে মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য প্রসঙ্গে অধীর চৌধুরী বলেন, মিথ্যাচার করছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি নিজেই তদন্ত সিবিআইকে দিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ছিলেন। এখন আদালতের তত্বাবধনে সিবিআই তদন্ত হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী যদি মনে করেন, সিবিআই তদন্ত বিপথে যাচ্ছে তাহলে মুখ্যমন্ত্রী, পুলিশ এবং সিআইডি ' মারফত পাওয়া আরো কোনো তথ্য থাকলে বা তথ্য সংগ্রহ করে সেটা আদালত বা সিবিআই’য়ের কাছে জমা দিয়ে তদন্তে সহযোগিতা করছেন না কেনো ? সেটাই তো সরকারের দায়িত্ব। সিবিআই কোনো গাফিলতি করলে সরকার বা রাজ্য পুলিশ সেটা আদালতকে জানিয়ে হস্তক্ষেপ করার আবেদন জানালে সদিচ্ছা বোঝা যেতো।
সদিচ্ছা থাকলে সেটাই হতো। সেটা না করে, অপরাধীদের রক্ষা করে সরকারের ভাবমূর্তি রক্ষা করতে এবং আরজি করের অপরাধ চক্রকে রক্ষা করতে তথ্য প্রমাণ লোপাট করা হচ্ছে। অপরদিকে সিবিআই এর নামে দায় চাপিয়ে নিজেকে রক্ষা করার জন্যে ভাঁওতা দেওয়া হচ্ছে। ফাঁসির আইনের জন্য প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি ও বিল আনার প্রসঙ্গে অধীর চৌধুরী বলেন, এসব করে আরো একটা ধোঁকা দিতে চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী। এসব করে উনি বোঝাতে চাইছেন, দেখো আমি কতো কড়া!
ধর্ষকদের ফাঁসির আইন দেশে আছে এবং বহুক্ষেত্রে ফাঁসির আদেশ কার্যকর করা হয়েছে। ফাঁসির আদেশ দিতে গেলে তথ্য প্রমাণ দরকার হয়, অথচ প্রমাণ লোপাট করে ধোঁকা দেওয়ার জন্যে এসব বলা হচ্ছে। তিনি বলেন,মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূল সরকারের নৃশংসতা বাংলার আবেগকে বিদ্ধ করেছে।
বিচারের দাবির আন্দোলনকে ঠেকাতে মুখ্যমন্ত্রী এখন তৃণমূল - বিজেপি গন্ডগোলকে ব্যবহার করতে চাইছেন। অপরদিকে উনার ফোঁস করার ইশারাতে বিভিন্ন জেলাতে আন্দোলনরত চিকিৎসক ও বিচারের আন্দোলনের উপরে আক্রমণ নামিয়ে আনা হয়েছে।
শনিবার দুপুরে স্থানীয় এবং রাজ্য কংগ্রেস নেতৃত্বের কয়েক জনকে নিয়ে প্রথমে নিহত চিকিৎসকের বাড়িতে যান অধীর। এরপর সেখান থেকে সরাসরি আর জি কর হাসপাতালে পৌঁছান তিনি। কিন্তু গেটের সামনেই কংগ্রেস নেতাকে আটকে দেয়। হাসপাতালের গেটের বাইরে দাঁড়িয়েই তিনি জুনিয়র চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলেন। পুলিশ এবং রাজ্য প্রশাসনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়ে তিনি বলেন, বজ্র আঁটুনি ফস্কা গেরো। সব ঘটনা ঘটে গেল। ঘরের মেয়েটা অকালে চলে গেল। আর এখন এত পুলিশ, এত ব্যারিকেড। এই কাজগুলি আগে হলে অপরাধের ঘটনা ঘটত না।
Adhir Chowdhury
নিহত চিকিৎসকের বাড়িতে অধীর চৌধুরী
×
Comments :0