অন্ধ্র প্রদেশের ও তেলেঙ্গানা জুড়ে রবিবার ভয়াবহ বৃষ্টি হয়। চলতি সপ্তাহের মাঝামাঝি থেকে শুরু হওয়া বৃষ্টির পরিমাণ বৃহস্পতিবার থেকে বাড়তে থাকে। যার ফলে বেশ কয়েকটি এলাকায় ব্যপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, বাড়িঘর ডুবে গেছে, রাস্তায় গাড়ি চলাচল বন্ধ । অবিরাম বৃষ্টির কারণে দক্ষিণ মধ্য রেলওয়ে ২০টিরও বেশি ট্রেন বাতিল করেছে এবং ৩০টিরও বেশি ট্রেনকে অন্য পথে ঘুরিয়ে দিয়েছে। জানা যাচ্ছে এখনো পর্যন্ত বৃষ্টিতে ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে।
অন্ধ্রপ্রদেশের বিজয়ওয়াড়া গ্রামীণ এলাকার আম্বাপুরম, নৈনাভারম, নুন্না এবং পাথাপাদু গ্রামগুলি সম্পূর্ণরূপে জলে তলিয়ে গেছে। পুলিশ এবং এনডিআরএফের দলগুলি উদ্ধার ও ত্রাণের কাজ তৎপরতা সঙ্গে শুরু করেছে। ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দাদের বিভিন্ন ত্রাণ শিবিরে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। আবহাওয়া অফিস সতর্কতা জারি করে জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড় ‘আসনা’ আরব সাগরের উপর একটি গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে যা আগামী ২৪ ঘন্টায় ভারতের উপকূল থেকে পশ্চিম, উত্তর-পশ্চিম দিকে সরে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে।
সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, উত্তর অন্ধ্রপ্রদেশ এবং দক্ষিণ ওডিশা উপকূলের উপর গভীর নিম্নচাপ অক্ষরেখা বিস্তৃত থাকার কারণে গত দুই দিন ধরে এই দুই রাজ্যে ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। এই অক্ষরেখা রবিবার ভোর রাতে কলিঙ্গাপত্তনমের কাছে অন্ধ্র উপকূল অতিক্রম করতে উত্তর-পশ্চিম দিকে চলে গেছে। আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে খবর, পরবর্তী ২৪ ঘন্টায় এই নিম্নচাপ দুর্বল হয়ে যেতে পারে।
রবিবার অন্ধ্রের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডু বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে জরুরি ভিত্তিতে বৈঠক করেন। বন্যায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ণয় ও ত্রাণের কাজ পরিকল্পনা করতে ড্রোন ব্যবহারের কথাও এদিন তিনি বলেন। অন্ধ্র প্রদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ভাঙ্গালাপুদি আনিথা জানিয়েছেন, ‘‘পাঁচটি জেলার ২৯৪টি গ্রাম থেকে ১৩,২২৭ জনকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এখনও পর্যন্ত প্রবল বৃষ্টির কারণে নয় জন মারা গেছে। পুলিশ, এনডিআরএফ এবং এসডিআরএফের দলগুলি ৬০০ জনকে বন্যা কবলিত জায়গা থেকে উদ্ধার করেছে। সাতটি জেলার ২২টি জলমগ্ন স্থানে ১৭টি এনডিআরএফ এবং এসডিআরএফ দল উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছে’’।
অন্ধ্রপ্রদেশের প্রবল বৃষ্টিপাতের প্রভাব পড়েছে তেলেঙ্গানায়। স্বাভাবিক জীবনযাত্রা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। বিভিন্ন জনপদ জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। বন্যা পরিস্থিতির ফলে সড়ক সংযোগ বিপর্যস্ত। শনিবার থেকে নালগোন্ডা এবং সূর্যপেট জেলায় ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে নিচু এলাকা প্লাবিত হয়েছে এবং কিছু গ্রামের সাথে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। খম্মাম ও নালগোন্ডা জেলাতেও প্রভাব পড়েছে।
Comments :0