Hawker Eviction

হাবড়ায় বুলডোজারে ভাঙল গরিবের দোকান, অক্ষত তৃণমুলের অফিস

জেলা

ছবি- সুস্মিত দাস।

বৃহস্পতিবার হকার উচ্ছেদের নামে পরিকল্পিত নাটক দেখলো হাবড়াবাসী। গত কয়েকদিন আগে নবান্নের সভাঘরে রাজ্যের বিভিন্ন পৌরসভার পৌরপ্রধান ও আধিকারিকদের নিয়ে প্রশাসনিক বৈঠক করেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠকের পরেই কলকাতা সহ রাজ্যের বিভিন্ন পৌরসভা এলাকায় সরকারী জমি জবরদখল থেকে মুক্ত করবার নাম করে শুরু হয় হকার উচ্ছেদ। গরীব মানুষের রুজি-রুটি কেড়ে নেওয়ার বিরুদ্ধে রাস্তায় নামে খেটে খাওয়া মানুষ। মেহনতী মানুষের এই লড়াইয়ে শুরু থেকেই পাশে ছিলো লাল ঝান্ডা। 
বৃহস্পতিবার হাবড়াতে বুলডোজার দিয়ে চলল হকার উচ্ছেদের নামে বেশ কয়েকটি দোকান ভাঙচুরের পর্ব। হাবড়া যশোহর রোডে শুরু হয় ভাঙচুর। হাবড়া ১নং রেলগেট থেকে হাবড়া স্টেশন পর্যন্ত রাস্তার দু'দিকে বেশ কিছু বড়-ছোটো দোকানের উপরের অংশে এবং নীচের অংশে ভাঙচুর করে পৌরসভা। বিশেষ করে যে সমস্ত দোকানের সাইনবোর্ড বা উপরের অংশ রাস্তার মুল অংশকে ছুঁয়ে ফেলেছে বা নিচে ফুটপাতের উপরেই যে সব দোকানীরা ঢালাই করে নিজ দোকানের প্রবেশপথ তৈরী করেছেন, সেই সমস্ত অংশেই ভাঙচুর করে পৌর প্রশাসন। 
এই ঘটনায় যথেষ্টই বিরক্ত হাবড়াবাসী। তাদের বক্তব্য হাবড়া শহরের মুল সমস্যাই হল যানজট। প্রতিবার নির্বাচন আসলেই শাসকদলের নেতা-মন্ত্রীদের মুখ থেকে ঝরে পরে প্রতিশ্রুতির বন্যা। আশ্বাসবাণী শোনা যায় হাবড়াতে এবার উড়ালপুল হবেই। কিন্তু নির্বাচন মিটলেই আশ্চর্যজনক ভাবে সবাই সব ভুলে যান। স্থানীয় ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, এই ক্ষেত্রেও রঙ দেখে ভাঙচুর চালানো হয়েছে। যে সব দোকানীরা শাসক দলের সমালোচনা করেন বা তাদের বিরুদ্ধে কথা বলেন, সেই সমস্ত দোকানীরাই ছিলেন এই ভাঙচুরের তালিকায়। স্থানীয় ব্যবসায়ীদের আরও সুনির্দিষ্ট অভিযোগ, হাবড়া হাসপাতালে ঢোকার ঠিক মুখেই তৃণমুলের শ্রমিক সংগঠনের একটি বড় অফিস দীর্ঘদিন ধরেই হাবড়ার ফুটপাত জুড়েই বিরাজমান। হাবড়া ১নং রেলগেট থেকে হাবড়া স্টেশন পর্যন্ত বেশ কিছু দোকানের উপরের এবং নীচের অংশে ভাঙচুর চললেও একটা আঁচড় পড়েনি ওই পার্টি অফিসে। আর এই নিয়ে প্রবল ক্ষোভ হাবড়ার ব্যবসায়ীমহল থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষের।
এই প্রসঙ্গে পার্টির হাবড়া শহর এরিয়া কমিটির সম্পাদক ঋজিনন্দন বিশ্বাস বলেন, ‘‘সরকারি নির্দেশ এবং স্থানীয় পৌর প্রশাসনের নির্দেশে ঠিক কি আছে, তা জানার অধিকার সকল মানুষের আছে। হাবড়ার ক্ষেত্রে কোনো বিজ্ঞপ্তি বা পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই এই ভাঙচুর হয়েছে,যা সম্পূর্ণ অনৈতিক বলে আমি মনে করি। এই ক্ষেত্রে নীতিগত অবস্থান এবং পদক্ষেপ গত অবস্থান দুটোর মধ্যে চরম বৈষম্য লক্ষ্য করা যাচ্ছে এবং একইভাবে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা বা পক্ষপাতিত্বের ছাপও স্পষ্ট রয়েছে। আমাদের পার্টি আগামীদিনে এর বিরুদ্ধেই লড়াই করবে।’’
 

Comments :0

Login to leave a comment