WEST BENGAL HEAT WAVE

মরশুমী বর্ষা দুর্বল, তাপের প্রকোপ বাড়ছে দক্ষিণবঙ্গে

রাজ্য

west bengal heat wave bengali news

দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় তাপপ্রবাহ চলবে। এরই মধ্যে আবার জেলায় জেলায় বৃষ্টিও নামবে। ক্ষণিক বৃষ্টির সঙ্গে ঝড়ের দেখাও মিলবে। মরশুমী বর্ষার জেরে উত্তরবঙ্গে বৃষ্টি চলছে। আগামী সপ্তাহে মরশুমী বর্ষা দক্ষিণবঙ্গকে ছুঁতে পারে। কিন্তু এরই মধ্যে বর্ষা দুর্বল হতে পারে বলে বৃহস্পতিবার আশঙ্কা প্রকাশ করল আবহাওয়া দপ্তর। আর তা যদি হয়, তাহলে উত্তর-পশ্চিম ও পূর্ব ভারতে তাপপ্রবাহের মেয়াদ বেড়ে যাবে। দুর্বল বর্ষার জেরে ৬ থেকে ৮ দিন উত্তর ভারতে বৃষ্টিপাতের তেমন সম্ভাবনা নেই। উত্তর-পশ্চিম ভারতে বর্ষার আকাল চলবে।
বৃহস্পতিবার দক্ষিণবঙ্গে সবচেয়ে বেশি পারদ চড়েছে পুরুলিয়ায়। দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা পুরুলিয়ায় পৌঁছে গেছে ৪৩.৩ ডিগ্রিতে। আর এরই জেরে পুরুলিয়ায় জারি হয়েছে কমলা সতর্কতা। প্রবল তাপপ্রবাহের মধ্যে পড়তে পারে বাঁকুড়া-পুরুলিয়া। তাপপ্রবাহ চলবে ঝাড়গ্রাম এবং পশ্চিম মেদিনীপুরে। শুক্রবার নতুন করে পুরুলিয়া, পশ্চিম বর্ধমান এবং পশ্চিম মেদিনীপুরের কয়েকটি জায়গায় তাপপ্রবাহ মারাত্মক চেহারা নিতে পারে। তার জন্য এদিন ওই তিন জেলার উদ্দেশে একইভাবে জারি হয়েছে কমলা সতর্কতা। তাপপ্রবাহ চলবে ঝাড়গ্রাম, বাঁকুড়া, বীরভূম এবং পূর্ব বর্ধমানে। এই চার জেলাতেও জারি হয়েছে হলুদ সতর্কতা।
বুধবার রাতে কলকাতা সহ দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন এলাকায় ক্ষণিকের বৃষ্টির দেখা মিলেছিল। কিছু সময়ের ওই জোরালো বৃষ্টি রাতের তাপমাত্রাকে একটু নিচে নামালেও বৃহস্পতিবার সকাল হতে না হতে তা আবার ফিরে গেছে স্বমহিমায়। বৃহস্পতিবার কলকাতার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৫ ডিগ্রি। সর্বনিম্ন ২৭.৯ ডিগ্রি। দিনের তাপমাত্রা তেমন একটা বেশি না হলেও রোদের কামড় আর বাড়তি আর্দ্রতায় এদিনও মানুষকে ভুগতে হয়েছে। বিষ্ণুপুর, বাঁকুড়াতে দিনের তাপমাত্রা ছিল ৪০ ডিগ্রি। মেদিনীপুর ও বীরভূমের তাপমাত্রা ৩৯ ডিগ্রির আশপাশে।
যেভাবে দক্ষিণবঙ্গে লাগাতার তাপপ্রবাহ চলছে তা রীতিমতো উদ্বেগের। একনাগাড়ে এইভাবে তাপপ্রবাহ চলতে থাকা আগে হয়নি। এবছর দক্ষিণবঙ্গে কালবৈশাখীও হয়েছে নামমাত্র। সাধারণত বৈশাখ-জৈষ্ঠ্যতে গড়ে কমপক্ষে ১১টি কালবৈশাখী হওয়ার কথা। এবছর তা সাকুল্যে তিনটির বেশি হয়নি। এই বিষম পরিবেশের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গে আগাম ঢুকছে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌশুমি বায়ু। তার জেরে উত্তরবঙ্গে বৃষ্টি শুরু হলেও দক্ষিণবঙ্গকে ভুগে যেতে হচ্ছে বৃষ্টিহীনতায়। এই পরিস্থিতির পরিবর্তন কবে হবে তা পরিষ্কার করে বলতে পারছে না আলিপুর হাওয়া অফিস। মরশুমী বর্ষার গতি কম, থমকে গেছে— এই সব কথা বলে চললেও মরশুমী বর্ষার গতিপ্রকৃতি কিংবা এর গতিপথ নির্দিষ্ট বলতে পারছে না আবহবিদরাও।
এই সবের মধ্যে শনিবার পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, পশ্চিম বর্ধমান, পশ্চিম মেদিনীপুর এবং ঝাড়গ্রামের কয়েকটি জায়গায় তাপপ্রবাহের পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। তবে দক্ষিণবঙ্গের বাকি জেলাতে প্রবল তাপপ্রবাহের কোনও সতর্কতা জারি না হওয়ায় ক্ষণিক বৃষ্টির একটা আশা থেকেই যাচ্ছে। গা জ্বালানি গরমের মধ্যে শুক্র ও শনিবার দক্ষিণবঙ্গের সব জেলায় বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে বইতে থাকবে ঝোড়ো বাতাস। জুন মাসের শেষভাগ থেকে শুরু হয়ে যায় বর্ষা ঋতু। দেশের মূল ভূখণ্ডে এবার সময়ের আগে বর্ষা প্রবেশ করলেও উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম ভারতে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বাড়বে জুনের শেষ দিকে বলে মনে করা হচ্ছে। ১ জুন থেকেই বর্ষায় ১ শতাংশ ঘাটতি দেখা গিয়েছে উত্তর ভারতে। উত্তর-পশ্চিম ভারতে বর্ষার ঘাটতি ৪৯ শতাংশ।


 

Comments :0

Login to leave a comment