প্রবন্ধ — মুক্তধারা
নতুন সূর্য আলো দাও, আলো দাও
কৃশানু ভট্টাচার্য্য
এই তো সেদিন- রাতের অন্ধকার চূর্ণ-বিচূর্ণ করে উঠেছিল মানুষের গর্জন। সে গর্জনে প্রত্যয় ছিল, ছিল ধিক্কার, ছিল অদম্য সাহস, অনমনীয় মনোভাব । নিয়ন বাতির আলোর তলায় সমবেত মানুষের স্রোত আরেকবার প্রমাণ করেছিল প্রাণ আছে, প্রাণ আছে।
কখনো কখনো হতাশাকে আপন ভাবতে ভাবতে হেরে যাওয়া মানুষ বিশ্বাস করতে শুরু করে রুখে দাঁড়াতে হবে। সেই বিশ্বাস থেকেই সে রুখে দাঁড়ায়। শুরু করে উল্টো দিকে যাত্রা। অন্ধকারে ডুবতে ডুবতে হঠাৎ করে সে হয়ে যায় আলোর পথযাত্রী। বুঝে নেয় রাত্রি শেষ কথা বলে না। রাতের অনেক তারাই তাদের পথ দেখায়, পথ চেনায়।
অনেক সময় মনে হয় একক শক্তি কি পারে অন্ধকারের তীব্র কালিমাকে রুখে দিতে? হরিপদ কেরানিরা কি পারবে আকবর বাদশার বিরুদ্ধে লড়াই করতে? এ সংশয়ে কোন দোষ নেই। এ সংশয় কখনো কখনো বাস্তববোধের দ্বারা পরিচালিত। কিন্তু সে সময় যদি ওই এক- এক এক করে অনেকে পরিণত হয় তখনই সংশয়ের প্রাচীরে ফাটল ধরে। সেই প্রাচীরে তখন গজিয়ে ওঠে নবজীবনের আশা নিয়ে তরুণ সতেজ , সবুজ ডাল। সেই সবুজ ডালে ফুটে ওঠে ফুল। সেই ফুল প্রার্থীর আবেদন নিয়ে হাত বাড়ায় আকাশের দিকে। আকুল আবেদন করে নতুন সূর্যের কাছে।
অন্ধকারে নিমজ্জিত সেই হতাশ মানুষ তখন খুঁজে পায় নতুন রাস্তা। রাস্তাই রাস্তা চেনায়, রাস্তায় চিনিয়ে দেয় পথের সাথীকে।
একটা নতুন বছর নতুন আশা , নতুন উদ্দীপনার সূত্রপাত। নতুন বছর মানে নতুন করে দেখা, নতুন করে ভাবা , নতুন করে চেনা। নতুন বছরের আবেদন হোক- আধার মনের দিগন্তে আজ আলো দেখাও , আলো দেখাও।
Comments :0