'‘যতদিন না পর্যন্ত যোগ্য প্রার্থীরা কাজ পাচ্ছেন, ততদিন রাজ্যে উৎসবের কোনও পরিবেশ থাকতে পারে না।’’ নববর্ষের দিন বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীদের পাশে দাঁড়িয়ে একথা বললেন সিপিআই (এম)’র রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম।
বাংলার বহু উৎসবে ঘর, বাড়ি ছেড়ে রাস্তার ফুটপাতে বসে রয়েছেন বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীরা। উৎসবে তাঁরা শামিল হতে পারেনি। পয়লা বৈশাখ বাংলার সংস্কৃতির একটি উজ্জ্বল দিন। এই দিনেও বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে সময় কাটালেন মহম্মদ সেলিম। মিষ্টিমুখ করালেন চাকরিপ্রার্থীদের। এর আগেও উৎসবের দিনগুলিতে চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন তিনি।
মহম্মদ সেলিম বলেছিলেন, উৎসব, আনন্দের দিনে শিক্ষিত বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীরা রাস্তায় থাকবেন, আর আমি বাড়িতে বসে থাকতে পারব কীভাবে! শনিবার পয়লা বৈশাখে ধর্মতলায় বসে থাকা বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে সময় কাটিয়ে নিজের দেওয়া কথা রাখলেন মহম্মদ সেলিম।
এসএসসি, প্রাথমিক টেট, গ্রুপ-ডি নিয়োগের বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থী ধর্মতলায় অবস্থান চালাচ্ছেন। পাশাপাশি তাঁরা রাস্তায় নেমে বিভিন্ন ধারায় আন্দোলন করছেন। এদিন আন্দোলনকারী চাকরিপ্রার্থীদের মঞ্চে গিয়ে মহম্মদ সেলিম বলেছেন, ‘‘কলকাতা হাইকোর্টের যে বিচারপতির নির্দেশে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সিবিআই, ইডি তদন্ত চলছে, সেই বিচারপতির ঘর থেকে যদি মামলা সরিয়ে নেওয়া হয়, তাহলে তীব্র আন্দোলন হবে। তৃণমূল এবং বিজেপি নিজেদের মধ্যে বোঝাপড়া করে চলছে। তৃণমূল বিচারপতিকে ‘সিপিআই(এম)’ বলে আক্রমণ করছে। শুভেন্দু অধিকারী, অমিত শাহদের মুখে দুর্নীতির কথা মানায় না। নোটবন্দির সময় ৮০০ কোটি টাকার কেলেঙ্কারি করেছেন অমিত শাহ। শুভেন্দু যখন তৃণমূলে ছিল, তখন শিক্ষকের চাকরি দেওয়ার নাম করে, পরিবহণ দপ্তরে চাকরির নাম করে টাকা তুলেছে। কাঁথি সমবায় ব্যাঙ্কের টাকা লুট করেছে।’’
মহম্মদ সেলিমকে কাছে পেয়ে এদিন চাকরিপ্রার্থীরা নিজেদের দাবি তুলে ধরেন। তিনিও চাকরিপ্রার্থীদের আশ্বাস দিয়ে বলেন, আদালতে যেমন লড়াই চলছে, তেমন দুর্নীতির বিরুদ্ধে রাস্তায় থেকে লড়াই চালিয়ে যাওয়া হবে। দুর্নীতির সাথে যুক্ত সবাই যাতে শাস্তি পায়, সেই দাবিতে আন্দোলন আরও তীব্র হবে।
গ্রুপ-ডি চাকরিপ্রার্থীদের ধরনা মঞ্চে মহম্মদ সেলিম বলেছেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর নিজের দপ্তরের অধীনে গ্রুপ-ডি’র নিয়োগ হয়। সেই নিয়োগেই বড় দুর্নীতি হয়েছে। এর দায় মুখ্যমন্ত্রী এড়িয়ে যেতে পারেন না। মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশন, স্কুল সার্ভিস কমিশন তাঁর অধীনে নয় বলে নিজের দায় এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা তিনি করেছেন। এই ক্ষেত্রেও দায় এড়াতে পারেন না মুখ্যমন্ত্রী।’’
এদিন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মহম্মদ সেলিম বলেন, ‘‘যাঁরা টেট পাশ করেছেন, স্কুল সার্ভিস কমিশন পাশ করেছেন, তাঁরা রাস্তায় বসে আছেন। সরকার এখন প্রমাণ, সাক্ষী সব লোপাট করার চেষ্টা করছে। আমার মতে, সরকারের এখন উচিত এই সব না করে যে ফলাফল আটকে রয়েছে, তা প্রকাশ করার। সিট আপডেট করার, প্যানেল প্রকাশ করার। আমাদের সবার একটাই দাবি, আর তা হচ্ছে সুষ্ঠুভাবে নিয়োগ এবং দ্রুত নিয়োগ।’’
এদিকে, মুর্শিদাবাদের বড়ঞার তৃণমূলের বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহার বাড়িতে সিবিআই তল্লাশি চলাকালীন ঝোপের মধ্যে থেকে বস্তাভর্তি অ্যাডমিট কার্ড এবং মার্কশিট উদ্ধার নিয়ে সাংবাদিকদের করা প্রশ্নের জবাবে মহম্মদ সেলিম বলেছেন, ‘‘একজন বিধায়ক নয়। এটা একটা চুরির প্রতীক মাত্র। তৃণমূল দুর্নীতিতন্ত্র তৈরি করেছে। আমাদের একটাই দাবি, চোর, দুর্নীতিগ্রস্তদের শাস্তি চাই।’’
Comments :0