Bandh revoked in hill

পাহাড়ে বন্‌ধ স্থগিত

রাজ্য



আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারি পৃথক রাজ্যের দাবিতে পাহাড়ে বন্‌ধ করা থেকে পিছিয়ে আসলেন হামরো পার্টির অজয় এডওয়ার্ড, জন মুক্তি মোর্চার বিনয় তামাঙ’রা। বৃহস্পতিবার পাহাড়ে বন্‌ধ প্রত্যাহার করা হয়েছে। শিলিগুড়িতে মঙ্গলবারের মুখ্যমন্ত্রীর কড়া হুঁশিয়ারি পরেই আপাপত বন্‌ধ স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে গোর্খাল্যান্ডের (Gorkhaland) দাবিতে আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে। সাংবাদিক বৈঠক করে আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে বন্‌ধ প্রত্যাহারের এই সিদ্ধান্ত জানানো হয়েছে। 

হামরো পার্টির অজয় এডওয়ার্ড জানিয়েছেন, কাল থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হচ্ছে। তাই সাধারণ মানুষের কথা চিন্তায় রেখেই নিজেদের অবস্থান থেকে সরে এসেছেন তারা। দার্জিলিঙের গোর্খা রাঙা মঞ্চ ভবনে বঙ্গভঙ্গ বিরোধী প্রস্তাবের বিরুদ্ধে ২৪ ঘন্টার প্রতীকি অনশনও প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। প্রসঙ্গত রাজ্য বিধান সভায় পাশ হওয়া বঙ্গভঙ্গ বিরোধী প্রস্তাবের বিরুদ্ধে জিটিএ’র নয়জন সদস্য শিলিগুড়িতে মুখ্যমন্ত্রীর সফরকালে পাহাড়ে ফের আন্দোলনে সামিল হন মঙ্গলবারই। দীর্ঘ বছর পরে পাহাড়ে ফের পাহাড়ে বাংলা ভাগের দাবিতে বন্‌ধ ও আন্দোলনের জেরে পাহাড়ের রাজনৈতিক পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠার প্রবল আশঙ্কা দেখা দেয়। মুখ্যমন্ত্রীর শিলিগুড়ি সফররত অবস্থায় হামরো পার্টির অজয় এডওয়ার্ড, জন মুক্তি মোর্চার বিনয় তামাঙরা ২৪ঘন্টার জন্য দার্জিলিঙের গোর্খা রাঙা মঞ্চ ভবনে বঙ্গভঙ্গ বিরোধী প্রস্তাবের বিরুদ্ধে প্রতীকি অনশনে বসে পড়ে। এই পরিপ্রেক্ষিতেই আগামী ২৩ফেব্রুয়ারি সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যে ৬টা পর্যন্ত দীর্ঘ ১২ঘন্টার বন্‌ধেরও ডাক দেওয়া হয়। গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে এই বন্‌ধকে সফল করার জন্য পাহাড়বাসীদের যোগ দেবার আবেদন জানান আন্দোলনকারীরা। 

যদিও পৃথক রাজ্য গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে আন্দোলনমুখী হামরো পার্টি ও গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার উদ্দেশ্যে শিলিগুড়ির সভামঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রীর হুঁশিয়ারি ছিলো ‘আমরা বন্‌ধের সমর্থন করি না। বাংলায় আর বন্‌ধ হবে না। আর যদি কেউ বন্‌ধ করে তাহলে প্রশাসন রেয়াত করবে না’। এরপরেই পাহাড়ের রাজনৈতিক পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ প্রশাসনে তৎপরতা লক্ষ্য করা যায়। মাধ্যমিক পরীক্ষার দিনে বন্‌ধ মোকাবিলায় জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রশাসনিক উচ্চ পদস্থ আধিকারিক সহ পাহাড় অভিমুখে বিপুল সংখ্যায় পুলিশ প্রহরার জোর প্রস্তুতি শুরু হয়ে যায়। এরপরই নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করতে জরুরী বৈঠকে বসেন জিটিএ’র নয়জন সদস্য। বৈঠকে যোগ দেবার আগেই গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে আন্দোলনকারীদের গলার সুর অনেকটাই নমনীয় হয়ে পড়ে। বিনয় তামাঙ জানান, আমরা বন্‌ধ ডাকিনি। বন্‌ধ পালনের আবেদন জানিয়েছিলাম। পরীক্ষার্থীদের কথা মাথায় রেখে ছাড় দেওয়া হয়েছিলো। পিকেটিং করা হবে না বলা হয়েছিলো। ভুল বার্তা পৌঁছেছে। জরুরী বৈঠক থেকেই আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারি ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নেবার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। যদিও আন্দোলনকারী বিনয় তামাঙদের বক্তব্য সাধারণ মানুষের কাছে বন্‌ধ পালন করার আবেদন জানানো হয়েছিলো। আমরা বন্‌ধ ডাকিনি। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সাথে যোগাযোগ হয়েছে। আলোচনা সাপেক্ষে পরবর্তী আন্দোলনের নীতি গ্রহন করা হবে। আপাততভাবে বন্‌ধ স্থগিত রাখা হয়েছে। কিন্তু বাতিল করা হয়নি। 

গোটা রাজ্যের পাশাপাশি ২৩ফেব্রুয়ারি পাহাড়েও মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হতে চলেছে। মাধ্যমিক পরীক্ষার দিন বন্‌ধ ডাকা নিয়ে ইতোমধ্যে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করায় প্রবল চাপের মুখে পড়ে গোর্খাল্যান্ড সমর্থনকারীরা বুধবারই নিজেদের সিদ্ধান্ত পুর্নবিবেচনা করে আপাততভাবে বন্‌ধ থেকে সরে আসার কথা ঘোষণা করেন।
 

Comments :0

Login to leave a comment