সরকার ও মালিক পক্ষের বোঝাপড়ায় একের পর এক বাগান বন্ধ হয়ে পড়ায় চা শ্রমিকদের সঙ্কট ক্রমশ বেড়েই চলেছে। এবার বন্ধ হয়ে গেল আলিপুরদুয়ার জেলার কালচিনি চা বলয়ের মেচপাড়া চা বাগান। ইতিমধ্যেই ঝোলানো হয়েছে লকআউট নোটিশ। বৃহস্পতিবার সাসপেনশন অফ ওয়ার্কের নোটিশ দেওয়া হয় চা বাগান কর্তৃপক্ষের তরফে। এর ফলে বাগানে প্রায় ১৩০০ শ্রমিক কর্মহীন হয়ে পড়লেন।
এদিন শ্রমিকরা কাজে যোগ দিতে গিয়ে দেখেন ফ্যাক্টরি বন্ধ গেটে বাগান সাসপেন্সসনের নোটিশ ঝুলছে। আলিপুরদুয়ার জেলায় এই নিয়ে দুটি ব্লকে দশটি বাগান বন্ধ হয়ে গেলো। কালচিনি ব্লকে ছয়টি এবং মাদারিহাট ব্লকে চারটি।
বাগান বন্ধ, একশো দিনের কাজ নেই, নেই পঞ্চায়েতেও কাজ। কাজ হারানো শ্রমিক পরিবার হতাশায় দিশেহারা। গাছে নতুন পাতা আসতে শুরু করলে আবার মালিক আসবে শ্রমিকদের উপর অন্যায়ভাবে কাজের বোঝা চাপিয়ে বাধ্য করবে কাজ করতে। কি ভাবে সংসার চলবে শ্রমিকরা দিশেহারা। দীর্ঘদিন থেকে রাজ্যে নতুন কলকারখানা তো হচ্ছেই না, ক্রমশ ধ্বংসের পথে চালু শিল্পও। যে শিল্পগুলি বেঁচে আছে সেখানে কোনও স্থায়ী শ্রমিক নিয়োগ করা হচ্ছে না, ঠিকা শ্রমিকদেরকে দিয়ে কাজ করানো হচ্ছে এমন অভিযোগ চা শ্রমিকরা দীর্ঘদিন ধরেই করে আসছেন। উত্তরবঙ্গের চিত্র যেমন। একদিকে চা বাগান বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, চা বাগানে স্থায়ী শ্রমিক ছাঁটাই হয়ে যাচ্ছে, অস্থায়ী শ্রমিকদেরকে কম বেতনে কাজ করতে বাধ্য করা হচ্ছে। তার মধ্যেই বাগান বন্ধ হচ্ছে অসহায় হয়ে পড়েছেন শ্রমিকরা।
শ্রম দপ্তরের বীরপাড়া সহকারি শ্রম কমিশনার অমিত দাস জানান,‘‘ আগামী সোমবার আলিপুরদুয়ারের ডুয়ার্সকন্যায় বাগান খোলা নিয়ে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক হবে। তাতেই ঠিক হবে ১৩০০ শ্রমিকের রুটি রুজির ভবিষ্যৎ।’’
আলিপুরদুয়ার কোচবিহার চা বাগান মজদুর ইউনিয়নের শ্রমিক নেতা বিদ্যুৎ গুন দাবি করেছেন অবিলম্বে সরকারকে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করে বাগান খুলতে হবে। অসহায় শ্রমিকদের পাশে দাঁড়াতে হবে।
আলিপুরদুয়ার জেলা সিআইটিইউ জেলা সম্পাদক বিকাশ মাহালী জানান, ‘‘একের পর এক বাগান বন্ধ হলেও দুই সরকার মালিক পক্ষের বিরুদ্ধে কোনো রকম পদক্ষেপ নিচ্ছে না। পরিকল্পনা করে মালিক পক্ষের সাথে এক হয়ে বাগান বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। সরকার ও মালিক পক্ষের বোঝাপড়ায় মুলত আগামীতে চা বাগান শ্রমিক সঙ্কটের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।’’
Tea Garden Closed
ফের বন্ধ চা বাগান, আলিপুরদুয়ারে কর্মহীন বহু শ্রমিক
×
Comments :0