People Protest

যুবককে মন্ত্রীর বাড়িতে আটকে মার, রায়নায় তুমুল বিক্ষোভ

রাজ্য

পার্থপ্রতিম কোঙার - রায়না


মন্ত্রীর পারিবারিক পুকুরে মাছ ধরতে নেমেছিলেন আদিবাসী যুবক। তার জন্য তাঁকে ধরে মন্ত্রীর বাড়িতে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। বন্ধ ঘরে তাঁর ওপর চালানো হয় অকথ্য অত্যাচার। এমনই অভিযোগ তুলে মন্ত্রীর বাড়ি ঘিরে তুমুল বিক্ষোভ দেখালেন গ্রামবাসীরা। 
রাজ্যের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদারের রায়নার বাড়িতে এই কাণ্ড ঘিরে উত্তাপ ছিল মঙ্গলবারও। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, পূর্ব বর্ধমান জেলার রায়নার ২ নম্বর ব্লকের কামারহাটি গ্রামে পুকুরে মাছ ধরার জন্য রাজ্যের পঞ্চায়েত মন্ত্রীর বাড়িতে তুলে ওই আদিবাসী যুবককে মারধর করা হয়েছে। তাঁদের অভিযোগ তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধেই। সোমবার যুবককে আহত অবস্থায় উদ্ধারের পরই ক্ষোভের আগুন ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। মঙ্গলবারও মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদারের বাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ দেখান গ্রামবাসীরা। এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে পুলিশবাহিনী।  
গ্রামের মানুষ জানিয়েছেন, গ্রামের পুকুর লিজ নেওয়া রয়েছে পঞ্চায়েত মন্ত্রীর। সেই পুকুরে শোল মাছের ঝাঁক ধরতে গিয়ে ছিলেন গ্রামের যুবক মহেন্দ্র হেমব্রম। তাঁকে তুলে নিয়ে যায় তৃণমূলের কর্মী ও পঞ্চায়েত মন্ত্রীর অনুগামীরা। অভিযোগ, মাছ ধরার জন্য ওই যুবককে মন্ত্রীর বাড়িতে নিয়ে গিয়ে মারধর করা হয়। রড ও লাঠি দিয়ে মারধরের কারণে সারা শরীরে ক্ষত স্পষ্ট দেখা যায়। ঘটনাস্থলে বেহুঁশ হয়ে পড়েন মহেন্দ্র হেমব্রম। 
এই খবর জানাজানি হতেই গ্রামের মানুষ এককট্টা হতে থাকেন। পঞ্চায়েত মন্ত্রীর অনুগামীরা সেই পেয়ে আহত অবস্থায় মহেন্দ্র হেমব্রমকে তাঁর বাড়িতে দিয়ে আসে। জানানো হয় তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করা হবে। সোমবার তাঁকে নিয়ে চলে যায় আলমপুর মাধবডিহি হাসপাতালে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সোমবার সন্ধ্যায় গ্রামের মানুষ একত্রিত হয়ে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। 


 

অভিযোগ, মন্ত্রীর অনুগামী নোটে হাজারির নির্দেশে মারধর করা হয় মহেন্দ্র হেমব্রমকে। হাজারির বাড়িতে বিক্ষোভ দেখাতে গেলে ঘটনাস্থলে হাজির হয় কয়েকশো পুলিশ। শাসকদলের অনুগামীদের গ্রামবাসীদের বিক্ষোভের থেকে পুলিশ বাঁচাতে নামলেও পরিস্থিতি সামলাতে পারেনি। 
সোমবার রাত দেড়টা নাগাদ, যখন গোটা গ্রামের মানুষ ঘুমে আচ্ছন্ন তখন হাসপাতাল থেকে মহেন্দ্র হেমব্রমকে বাড়িতে ফিরিয়ে দিয়ে যায় তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা। যাতে গ্রামের মানুষ বুঝতে না পারে। মঙ্গলবার সকালে দেখা যায় সঙ্কটজনক অবস্থায় রয়েছেন মহেন্দ্র হেমব্রম। ঘটনাস্থলে সিপিআই(এম) নেতা কর্মীরা গিয়ে সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে আরামবাগ নার্সিংহোমে ভর্তি করে। অভিযুক্তদের শাস্তির দাবিতে সরব গ্রামের মানুষ।
সংবাদমাধ্যমে প্রদীপ মজুমদারের দাবি, ঘটনার দু’দিন তিনি রায়নার বাড়িতে ছিলেন না। তাঁর অভিযোগ, সিপিআই(এম)’র উসকানিতে এই বিক্ষোভ হয়েছে। গ্রামবাসীরা মন্ত্রীর বক্তব্য উড়িয়ে দিয়েছেন। একজন যুবককে সামান্য কারণে তাঁরই বাড়িতে তুলে নিয়ে ভয়াবহ নির্যাতন কিভাবে চলতে পারে, এই প্রশ্ন তুলছে গোটা গ্রাম। তৃণমূলের ঔদ্ধত্য এবং অত্যাচার কী ভয়াবহ মাত্রায় বেড়েছে, রায়নার কামারহাটি তার নমুনা, বলছেন গ্রামবাসীরা।

Comments :0

Login to leave a comment