MANIPUR CENTRAL FORCES

আইনের শাসন উধাও, মণিপুরে আরও বাহিনী পাঠাচ্ছে কেন্দ্র

জাতীয়

শান্তি এবং বিচারের দাবিতে নাগরিকরা।

আইনের শাসন কার্যত উধাও মণিপুরে। একের পর এক মন্ত্রীর বাড়ির সামনে হয়েছে বিক্ষোভ। এক মন্ত্রী বাড়ির সামনে বাঙ্কার পর্যন্ত বানিয়েছেন।  
পরিস্থিতির চাপে কেন্দ্র আরও ৫০ কোম্পানি বাহিনী পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। দ্বিতীয় দফায় প্রায় কেন্দ্রীয় বাহিনীর প্রায় ৫ হাজার জওয়ানকে পাঠানো হচ্ছে মণিপুরে। 
সোমবার মণিপুর প্রশাসন সাত জেলায় ইন্টারনেট পরিষেবা আরও দু’দিন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে হিংসায় বিদীর্ণ জিরিবামকে তার আওতার বাইরে রাখা হয়েছে বলে জানাচ্ছে কোনও কোনও সংবাদমাধ্যম। ইম্ফল পূর্ব এবং পশ্চিম সহ মোট পাঁচ জেলায় জারি রয়েছে অনির্দিষ্ট মেয়াদের কারফিউ। 
মণিপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা সোমবার ব্যাপক বিক্ষোভ দেখিয়েছে। পুলিশের গুলিতে এক যুবক নিহত হয়েচিলেন। গুলিচলনার বিরুদ্ধে নেমে মুখ্যমন্ত্রীর কুশপুতুল পুড়িয়েছেন ছাত্ররা। বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের সামনে লকডাউনের পোস্টার ঝুলিয়েছেন প্রতিবাদীরা।
সোমবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের দপ্তর, দিল্লির নর্থ ব্লকে, উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে দ্রুত শান্তি ফেরানোর মত পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন শাহ। 
এর আগে ১২ নভেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক ২০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠিয়েছিল মণিপুরে। 
রাজ্যের প্রায় সব স্তরের অনাস্থা মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিংয়ের ওপর। কিন্তু কেন্দ্রের বিজেপি’র সরকার রাজ্যের তাদেরই সরকারের মুখ্যমন্ত্রীকে বদলাতে নারাজ। মেইতেই এবং কুকি জনগোষ্ঠীর সংঘর্ষ ভয়াবহ চেহারা নিয়েছে মণিপুরে। বারবার বিজেপি এবং আরএসএস’র বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে ভোটের জন্য বিবাদে মদত দেওয়ার। সংখ্যাগুরু মেইতেইদের মদত দেয় বিজেপি। কুকি জনগোষ্ঠী কোণঠাসা হতে থাকে পাহাড়ি এলাকায় জমি চলে যাওয়ার কারণেও। কিন্তু এখন মেইতেই বা কুকি, কোনও জনগোষ্ঠীর কোনও অংশ বা সংগঠনকে মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিংয়ের পাশে দাঁড়াতে দেখা যাচ্ছে না। কার্যত মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনও কতটা নিরাপদ তা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে রবিবার বিক্ষোভের পর। 
গত সপ্তাহে মেইতেই জনগোষ্ঠীর ৩ শিশু এবং ৩ মহিলার দেহ পাওয়া যায় আসাম লাগোয়া জিরিবাম জেলায়। তারপর ক্ষোভের আগুন হু-হু করে ছড়াচ্ছে। 
জিরিবামে অপহরণ এবং হত্যার আগে সিআরপিএফ’র সঙ্গে গুলির লড়াইয়ে ১১ জনের মৃত্যু হয়। নিহতেরা কুকি জনগোষ্ঠীর। নিহতদের উগ্রপন্থী বলে চিহ্নিত করে প্রশাসন। কিন্তু কুকি-জো জনগোষ্ঠীর বিভিন্ন সংগঠনের দাবি নিহতেরা গ্রাম পাহারায় যুক্ত স্বেস্ছাসেবকের বাইরে কিছু নয়। প্রশাসনের একের পর এক পদক্ষেপে রাজ্যবাসীর ন্যূনতম আস্থাও উবে গিয়েছে। 
বিজেপি যদিও মহারাষ্ট্র এবং বিশেষ করে ঝাড়খণ্ডের নির্বাচনে সেই বিভাজনের জাজনীতিতেই মেতে রয়েছে। দলের জাতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা ঝাড়খণ্ডে প্রচারে মুসলিমদের লক্ষ্য বানিয়ে বলে এসেছেন যে ‘এই অনুপ্রবেশকারীরা আদিবাসীদের জমি কেড়ে নিচ্ছে।’ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী থেকে অমিত শাহ, এই প্রচারই চালিয়েছেন। মণিপুর জ্বললেও বিজেপি অটল রয়েছে বিভাজনে।

Comments :0

Login to leave a comment