‘‘পঞ্চায়েতই আসলে দুয়ারে সরকার। আর এই পঞ্চায়েতকে চোরেদের হাতে তুলে দিয়েছে তৃণমূল। এবার মানুষ লুঠেরাদের হারিয়ে পঞ্চায়েত নিজেদের হাতে তুলে নেবেন।’’ পশ্চিম মেদিনীপুরে পদযাত্রা চলাকালিন একটি সভায় একথা বললেন সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। তিনি বলেন, ‘‘জ্যোতি বসু ১৯৭৭ সালে যখন সরকার হয় তখন বলেছিল গ্রামে গ্রামে সরকার হবে। তারপর তৈরি হয় পঞ্চায়েত। সেই পঞ্চায়েতকে তৃণমূল চোরেদের হাতে তুলে দিয়েছে। আর বলছে দুয়ারে সরকার। এই পঞ্চায়েত ব্যবস্থা আসলে দুয়ারে সরকার।’’
এখানেই থেমে না থেকে সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক তৃণমূলকে নিশানা করে বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত থেকে চাল, তাল, ত্রিপল সব কিছু চুরি করার ব্যবস্থা করেছে তৃণমূল। কিন্তু মানুষ এবার ঐক্যবদ্ধ লুঠেরাদের হাত থেকে পঞ্চায়েত ছিনিয়ে নিয়ে নিজেদের ক্ষমতা প্রতিষ্ঠা করতে।’’
ঘাটালের দেওয়ানচক জিপি, নলগেড়িয়া থেকে শোলাগেড়িয়া, চক নছিপুর, কুঠিঘাট, কিসমতকতুলপুর দীর্ঘ সাত কিলোমিটার পদযাত্রার নেতৃত্বদেন মহম্মদ সেলিম। তৃণমূলের সন্ত্রাসের কারণে একটা সময় এই এলাকায় বার বার আক্রান্ত হয়েছেন বামপন্থী কর্মী সমর্থকরা। কিন্তু এদিন সেলিমকে কাছে পেয়ে সব ভয় ভেঙে রাস্তায় নেমে আসেন সাধারণ মানুষ। কোথাও মালা পড়িয়ে বা ফুল ছুঁড়ে সেলিম এবং সিপিআই(এম) প্রার্থীদের বরণ করে নেন গ্রামের মহিলারা।
কর্মী সমর্থকদের উদেশ্যে মহম্মদ সেলিম বলেন, ‘‘মানুষ যাতে ভোটের দিন নিজের ভোট নিজে দিতে পারে তা সুনিশ্চিত করতে হবে আমাদের কর্মীদের। কোন পুলিশ, নির্বাচন কমিশন নয় আমাদের দায়িত্ব নিতে যাতে মানুষ ভোট দিতে পারেন। মিথ্যা মামলা দিয়ে যাদের আটকে রাখা হয়েছিল তাদের যেমন লড়াই করে ছাড়িয়ে আনা হয়েছে, ঠিক তেমন ভাবে লড়াই করে বুথ আগলাতে হবে যাতে ভোট লুঠ না হয়।’’
এই পশ্চিম মেদিনীপুরেই মনোনয়ন প্রত্যাহারের দিন দাসপুরে সিপিআই(এম) প্রার্থীকে জোড় করে তুলে নিয়ে গিয়ে মনোনয়ন প্রত্যাহার করায় পুলিশ। সাদা কাগজে তাকে দিয়ে সই করানো হয়। সেই ছবি সংবাদমাধ্যমের ক্যামেরায় ধরা পড়েছে। এদিন ওই জেলায় দাঁড়িয়ে পুলিশকে নিশানা করে সেলিম বলেন, ‘‘পুলিশকে বলবো আইন মেনে কাজ করতে। অনেক পুলিশ অফিসারের গায়ের উর্দি খুললে তৃণমূলের পোস্টার দেখা যাবে। নিজেদের উর্দিকে সম্মান দিয়ে কাজ করুন তাতে ভালো হবে।’’ মনোনয়ন পর্বের সন্ত্রাসকে কেন্দ্র করে তিনি বলেন, ‘‘চোপড়ায় মনসুরকে খুন করা হয়েছে। আমরা ঘাম ঝরাচ্ছি যাতে মানুষ তার ঘামের দাম পান। আমরা ঘাম ঝরাচ্ছি যাতে কোন রক্ত না ঝরে। আর কোন মনসুর, মইদুল, আনিস খানদের প্রান হারাতে না হয় তার জন্য আমাদের লড়াই।’’
এদিন বিজেপিকেও নিশানা করেছেন সেলিম। তিনি বলেন, ‘‘অনেকে ভেবেছিল নবান্নকে হাড়াবে ছাপান্ন। কিন্তু ২০১৪ সালের পর থেকে বিজেপি তৃণমূলের চোরদের কোন শাস্তি দেয়নি। সারদা, নারদায় দোষীদের কোন শাস্তি হয়নি।’’
অন্যদিকে পূর্ব মেদিনীপুরে শহীদ মাতঙ্গিনী ব্লকে মিছিলে অংশ নিয়েছেন সুজন চক্রবর্তী। সেখানেও বহু মানুষ পা মিলিয়েছেন।
Comments :0