Siliguri corporation

পৌরসভার ব্যর্থতা, আন্দোলনের প্রস্তুতিতে ঐক্যবদ্ধ শিলিগুড়িবাসী

জেলা

নির্বাচনের আগে দেওয়া পানীয় জল সমস্যার সমাধানে নতুন পরিশ্রুত পানীয় জল প্রকল্প কোথায় গেলো জবাব চাইছেন শিলিগুড়িবাসী। শহরবাসী জানতে চাইছেন গরীবের স্বার্থবাহী সামাজিক প্রকল্পগুলি বন্ধ করা হয়েছে কেন? তৃণমূলীদের প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের তালিকা ক্রমশই দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত শিলিগুড়ি পৌর কর্পোরেশনের এক বছর পূর্তিকে সামনে রেখে একদিকে যখন তৃণমূলীরা শোভাযাত্রা করছে শহরের রাস্তায়, উন্নয়নের মিথ্যে ফিরিস্তির রিপোর্ট কার্ড প্রকাশের নাটকীয় অনুষ্ঠান চলছে, ঠিক সেই সময়ে পৌর পরিষেবা না পেয়ে শহরবাসীরা তৃণমূল পরিচালিত পৌর বোর্ডের বিরুদ্ধে বড় ধরনের আন্দোলনে নামার প্রস্তুতিতে ঐক্যবদ্ধ হচ্ছেন। 


শুধু পৌর পরিষেবার মান নিয়ে নয়, পৌর কর্পোরেশনের অন্তর্ভুক্ত এলাকার সাধারণ মানুষ ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন উত্তরবঙ্গের অন্যতম প্রধান শহর শিলিগুড়ির উন্নয়ন স্তব্ধতা, গরীব মানুষের জন্য প্রদেয় সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পের বরাদ্দ, আইনশৃঙ্খলা সহ নাগরিক জীবনের নানা সমস্যা নিয়ে। তৃণমূলী বোর্ডের পরিচালনার এক বছরে শহর সবদিক থেকে পিছিয়ে গেছে। এই সময়ে শহরের বস্তি ও কলোনি এলাকাগুলির দুর্বিসহ অবস্থা একেবারেই প্রকাশ্যে এসেছে। ডেঙ্গু মোকাবিলায় কর্পোরেশনের ব্যর্থতায় বহু মানুষের মৃত্যু পর্যন্ত হয়েছে। স্বাস্থ্য ব্যবস্থার দিকে আঙুল উঠেছে। তবুও হুঁশ ফেরেনি তৃণমূলী বোর্ডের। এখনও শহরের জঞ্জাল অপসারন ব্যবস্থা অনিয়মিত। শহরের বস্তি কলোনির গলির রাস্তা ড্রেন সংষ্কারের অভাবে ধুঁকছে। নাগরিক পরিষেবা বেহাল কেন? শহরের যানজট সমস্যার সমাধান সূত্রে আদৌও মিলবে কিনা সহ নানা প্রশ্নে তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত শিলিগুড়ি পৌর বোর্ডের শপথ গ্রহণের এবং ব্যর্থতার এক বছরে প্রতিবাদে শহর জুড়ে হাতে লেখা পোষ্টারিং সাঁটানোর কাজ চলছে।


গত বছর থেকে চলতি বছরের এই সময় পর্যন্ত তৃণমূল বোর্ডের সার্বিক ব্যর্থতার বিরুদ্ধে জনজীবনের সমস্যা সমাধানে কার্যকরী উদ্যোগ ও পদক্ষেপ গ্রহণের দাবিতে সর্বস্তরের নাগরিকদের সংগঠিত করে সিপিআই(এম) সমগ্র দার্জিলিঙ জেলা জুড়ে ধারাবাহিকভাবে রাস্তার লড়াই আন্দোলন সংগঠিত করে আসছে। শিলিগুড়ি সিপিআই(এম) ২নং এরিয়া কমিটির উদ্যোগে নিয়মিতভাবে স্বাক্ষর সংগ্রহ অভিযান চলছে। জনগনের দাবিতে ছাত্র, যুব মহিলা, সহ সমাজের সর্বস্তরের সাধারন মানুষ এগিয়ে এসেছেন সিপিআই(এম)'র কর্মসূচিতে। ইতোমধ্যেই পৌর কর্পোরেশনের ৪৭টি ওয়ার্ড জুড়ে প্রায় এক লক্ষ স্বাক্ষর করা হয়েছে। সরকারি খাস জমিতে বসবাসকারীদের পাট্টা দাবিতে, বস্তি এলাকার রাস্তা সংষ্কার, ৪নং ওয়ার্ডে শিশুদের খেলার জন্য পার্কের দাবিতে মহিলারা নিজেরাই এগিয়ে এসে নিজেদের হাতে লেখা পোষ্টার সাটাচ্ছেন পাড়ায়, গলির মোড়ে, রাস্তার দেওয়াল, বিদ্যুতের খুঁটি সহ নানা জায়গায়। কর্মসূচিকে ঘিরে ব্যাপক সাড়া মিলছে।

 


সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পের আওতায় গরীব মানুষকে সমস্ত সুযোগ সুবিধা পাওয়া থেকে বঞ্চিত করে রেখেছে কর্পোরেশনের বর্তমান বোর্ড। কোন কারণ ছাড়াই বিগত বাম বোর্ডের তরফে গরীব মানুষের হাতে তুলে দেওয়া ১০ কেজি পরিমান চাল দেওয়াও এই সময়কালে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তৃণমূলী বোর্ডের মেয়র পারিষদ তথা দলীয় কাউন্সিলারদের মাথা পিছু সাত হাজার টাকা ব্যয়ে ব্লেজার দেওয়া হলেও, গরীবের ভাতার প্রশ্নে মেয়রের বক্তব্য আর্থিক প্রতিকূলতা রয়েছে। ট্রেড লাইসেন্স, জন্ম মৃত্যুর শংসাপত্র সহ নানা কাজে হয়রানির মুখে পড়তে হচ্ছে দূর দূরান্ত থেকে আসা সাধারণ মানুষদের। কর্পোরেশনের প্রশাধনী উন্নয়নে মেয়র খুবই গুরুত্ব দিয়ে কাজ করিয়েছেন। কিন্তু সংস্থাটির সঠিক পরিচালনার অভাব রয়েছে। উপযুক্ত পৌর পরিষেবার দাবিতে আগামীদিনে জোরদার আন্দোলনে সামিল হতে চলেছে শহরবাসী।

Comments :0

Login to leave a comment