Jadavpur University

র‌্যাগিং বন্ধ করতে চাই কড়া পদক্ষেপ, দাবি তুলে মিছিল যাদবপুরের পড়ুয়াদের

রাজ্য কলকাতা

স্বপ্নদ্বীপের মৃত্যুর প্রতিবাদে এবং ক্যাম্পাসে র‌্যাগিং বন্ধ করার দাবি তুলে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে মিছিল করলেন পড়ুয়ারা। তাদের দাবি এই ঘটনার সাথে যারা যুক্ত তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। তার সাথে সাথে র‌্যাগিং যাতে বন্ধ হয় তার জন্য উপযুক্ত পদক্ষেপ নিতে হবে কর্তৃপক্ষকে। এই দাবি তুলে শুক্রবার বিভিন্ন বিভাগের পড়ুয়ারা মিছিলে সামিল হন। গোটা ক্যাম্পাস ঘোরে এই মিছিল।

বুধবার রাতে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেইন হোস্টেলে র‌্যাগিংয়ের শিকার হন বাংলা অনার্সের প্রথম বর্ষের পড়ুয়া স্বপ্নদ্বীপ কুণ্ডু। বগুলা হাই স্কুলের মেধাবী এই ছাত্র বারান্দা থেকে পড়ে গিয়ে মারা যান। তার মৃত্যু ঘিরে ইতিমধ্যে একাধিক প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে নির্দেশিকা জারি করে বলা হয়েছে যে এ-১ এবং এ-২ ব্লকের ছাত্রদের নতুন বয়েজ হোস্টেলে স্থানান্তরিত হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে, কোন প্রাক্তন ছাত্র বা বাইরের কোন ব্যাক্তি হোস্টেলে থাকতে পারবে না। পড়ুয়া বাদে হোস্টেলে যাতে কেউ থাকতে না পারে তার জন্য হোস্টেল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া মৃত্যুর ঘটনায় পুলিশ যেমন তদন্তে নেমেছে, পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফেও একটি অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। স্নাতক স্তরের প্রথম বর্ষের পড়ুয়া স্বপ্নদীপ কুণ্ডুর সঙ্গে গতরাতে মেন হস্টেলে ঠিক কী হয়েছিল, তা খতিয়ে দেখবে বিশ্ববিদ্যালয়ের এই কমিটি। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগের ডিন অধ্যাপক সুবিনয় চক্রবর্তীর নেতৃত্বে এই কমিটি গঠন করা হয়েছে।

পুলিশের পক্ষ থেকে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে খুনের মামলা দায়ের করা হয়েছে। পরিবারের পক্ষ থেকেও দাবি তোলা হয়েছে যে স্বপ্নদ্বীপ র‌্যাগিঙয়ের শিকার।

বুধবার গভীর রাতে হস্টেলে থাকা ছাত্র-ছাত্রীরা নিচে ভারী কিছু পড়ার আওয়াজ পান। ছাত্র-ছাত্রীরা কাছে গিয়ে দেখেন রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছেন স্বপ্নদীপ। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে কেপিসি মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করানো হয়। এদিন সকালে ওই পড়ুয়ার মৃত্যু হয়। কীভাবে এই মৃত্যু তা খতিয়ে দেখছে যাদবপুর থানার পুলিশ। মানসিক অবসাদে ঝাঁপ নাকি কেউ তাঁকে ঠেলে ফেলেছে, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। ইতিমধ্যে কয়েক জনকে জিঞ্জাসাবাদ করা হয়েছে লাল বাজারের পক্ষ থেকে। 

রবিবার ছেলেকে হস্টেলে রেখে গিয়েছিলেন স্বপ্নদীপের বাবা রামপ্রসাদ কুণ্ডু ও মা স্বপ্না কুণ্ডু। হাসিখুশি মুখে বাবা, মার সঙ্গে নদীয়ার বগুলা থেকে যাদবপুরে পড়তে এসেছিল স্বপ্নদীপ। চোখে স্বপ্ন ছিল কিছু করে দেখানোর। কিন্তু মাত্র তিনদিনেই সেই স্বপ্ন হস্টেল বিল্ডিং থেকে পড়ে শেষ হয়ে গেল।

পরিবারের দাবি স্বপ্নদীপ নাকি বারবার ফোনে বলছিল, ‘চাপে আছি বাবা, তোমরা এসে আমাকে বাঁচাও।’ বুধবার রাত ন’টা থেকে সাড়ে ন’টা পর্যন্ত বার কয়েক বাবা-মার কাছে ফোন এসেছিল স্বপ্নদীপের। স্বপ্নদীপের বাবা, মায়ের দাবি, ঘটনার উপযুক্ত তদন্ত হোক।

 

Comments :0

Login to leave a comment