TMCP DA College

বেআব্রু তোলাবাজি, ক্যাম্পাসে দখলদারি, এন্ডরুজ কলেজে তৃণমূলের গোষ্ঠীসংঘর্ষে

জেলা কলকাতা

গড়িয়ার দীনবন্ধু এন্ড্রুজ কলেজে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ। সূত্রের খবর যাদবপুরের বিধায়ক দেবব্রত মজুমদার এবং কলকাতা পৌরসভার ১০১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বাপ্পাদিত্য দাশগুপ্তর গোষ্ঠীর মধ্যে এই সংঘর্ষ। সোনারপুরের কয়েকজন তৃণমূল কর্মীও এর সাথে যুক্ত বলে খবর। দুই পক্ষের মধ্যে টাকার বখরা নিয়ে ঝামেলার সূত্রপাত বলে জানা গিয়েছে।
এই ঘটনায় দুই পক্ষের বেশ করয়েকজন আহত হয়েছেন। গড়িয়া মোড় থেকে ৪৫ নম্বর বাস স্ট্যান্ড পর্যন্ত রাস্তা বন্ধ করে দুই পক্ষের মধ্যে এই সংঘর্ষ চলে।

অভিযোগ, ছাত্র ভর্তিতে টাকা তোলা ঘিরে বিবাদের জেরে এই সংঘর্ষ। তৃণমূলেরই এক অংশ অন্য অংশের বিরুদ্ধে ছাত্র ভর্তির নামে টাকা তোলার অভিযোগ তুলেছে। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের বিরুদ্ধে বারবার ছাত্র ভর্তির নামে টাকা তোলার অভিযোগ উঠেছে। রাজ্যে ২০১১’তে তৃণমূল কংগ্রেস রাজ্যের সরকারে আসীন হওয়ার পর থেকে এই পরিস্থিতি। অন্য কলেজের মতো এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও বন্ধ গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ছাত্র সংসদের নির্বাচন। 

ঘটনায় বামপন্থী ছাত্র সংগঠন এসএফআই ছাত্র ভর্তির অভিযোগের তদন্ত দাবি করেছে। এসএফআই’র দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা সভাপতি ঋজুরেখ দাশগুপ্ত এবং সম্পাদক অনিরুদ্ধ চক্রবর্তী বলেছেন, ‘‘টাকা তোলা ঘিরে এই গোষ্ঠী সংঘর্ষে দায়ী কারা তা চিহ্নিত করে দোষীদের শাস্তি দিতে হবে। কলেজে বহিরাগতদের প্রবেশ ও মাতব্বরি আটকাতে কড়া পদক্ষেপ নিতে হবে কলেজ কর্তৃপক্ষকে।’’ 

এসএফআই’কে এই কলেজে ঢুকতে দেওয়া হয় না। গত দশ বছরে বহুবার এসএফআইঁ কর্মী ও নেতাদের মারাত্মক আক্রমণের মুখে পড়তে হয়েছে এই ক্যাম্পাসে। এসএফআই’র দাবি, অবিলমবে নির্বাচন ঘোষণা করতে হবে। ছাত্রছাত্রীদের গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে। 

এদিন গণ্ডগোলের জেরে দীর্ঘক্ষণ স্তব্ধ হয়ে যায় রাজা সুবোধ মল্লিক রোডে যান চলাচল। যাদবপুর-গড়িয়ার রাস্তা আটকে পড়ে। পরিস্থিতিতে আতঙ্ক ছড়িয়েছে ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে। আতঙ্কিত অভিভাবকরা। এমনকি স্থানীয় বাসিন্দারা শিউড়ে উঠেছেন তৃণমূলের এক পক্ষের অপর সংগঠনেরই অপর পক্ষের আক্রমণে। 

কলেজ গেটের পাশেই এক পক্ষ মাটিতে বসে প্রতিবাদ জানাচ্ছিলেন। তাঁদের বলতে শোনা যায় যে বারবার ছাত্রীদেরও মারধর করা হয়েছে। বাড়ি ফিরতে সমস্যা হবে- হুমকি দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যেই অন্য পক্ষ দলবল নিয়ে এসে পড়ে কলেজ ক্যাম্পাসে। অপর পক্ষ ছুটে কলেজ ভবনের ভেতরে ঢুকে কোলাপসিবল গেট বন্ধ করার চেষ্টা করে। পুলিশকেও দেখা যায় তৃণমূল দু’পক্ষের সংঘাত ঠেকানোর জন্য লাঠি হাতে ক্যাম্পাসে। 

তৃণমূল নেত্রী এবং মুখ্যমন্ত্রী আবার কয়েকদিন পালা করে এসএফআই এবং সিপিআই(এম)’কে আক্রমণ করে চলেছেন যাদবপুরে ছাত্রমৃত্যুর জন্য। কোনও প্রমাণ ছাড়াই রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান প্রকাশ্যে বিষ উগরে দিচ্ছেন। তার পিঠোপিঠি ঘটনা দীনবন্ধু এন্ড্রুজ কলেজের। সংগঠনেরই আরেক অংশের বিরুদ্ধে কীভাবে তেড়ে যাওয়া যায়, কলেজে ছাত্র সংসদ বন্ধ করে তোলাবাজির আখড়া কিভাবে গড়ে তোলা হয়, ছাত্রছাত্রীদের গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নেওয়া হয় কীভাবে- সবই তুলে এনেছে মঙ্গলবারের ঘটনা। তৃণমূল কংগ্রেস এবং তাদের ছাত্র সংগঠনের চেহারাও ফের সামনে এসেছে। 

Comments :0

Login to leave a comment