প্রবীর দাস
খোদাবক্স গাজি। পিতা গোপাল গাজি। দুজনেই মৃত।প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় উপভোক্তা তালিকায় নাম রয়েছে খোদাবক্স গাজির। আছমা বিবি। বিবাহ সূত্রে পাটলিখানপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের মহিষপুকুর গ্রামে বসবাস করেন। বাবা আকসেদ সেখ মৃত। মা সায়েমা বেওয়া মনোহরপুকুর গ্রামে বাস করেন কংক্রিটের ছাদ দেওয়া বাড়িতে। আছমার নাম রয়েছে মনোহরপুকুর গ্রামের আবাসের তালিকায়। বিড়ির বড় ব্যবসায়ী মিজানুর গাজি। পেল্লাই দোতলা বাড়ি। তার স্ত্রী রহিমা বিবিরও নাম রয়েছে আবাসের তালিকায়। ধান, পাট, সরিষার বড় ব্যবসা করেন জিয়ারুল গাজি। বিডিও অফিসে তার নিবিড় যাতায়াত ঘনিষ্ঠতা সর্বজনবিদিত। হাসনাবাদ পঞ্চায়েতের ২৬ নম্বর বুথের বাসিন্দা জিয়ারুলের নামও তালিকায় রয়েছে। জনশ্রুতি, সামনের পঞ্চায়েত নির্বাচনে ওই বুথের তৃণমূলের সম্ভাব্য প্রার্থী সে। হাসনাবাদ থানার সিভিক ভলান্টিয়ার দীন ইসলাম। বাবা হাফিজুল গাজি বিড়ির বড় ব্যবসায়ী। বাড়িতে ট্রাক্টর, ইঞ্জিন ভ্যান সবই আছে। বাবা সহ তিন ছেলের নাম তুলে নিয়েছেন আবাসের তালিকায়। চমকে দেওয়ার মতো ঘটনা খোদ পঞ্চায়েত সদস্য মালেক গাজির পরিবার পরিজনদের।
অভিযোগ, পঞ্চায়েত সদস্যের পরিবারের ৫ জন সদস্যের নাম উপভোক্তার তালিকায় রেখেছেন সযত্নে। যাদের প্রত্যেকে পাকা ছাদ দেওয়া বাড়িতে বাস করেন। আবার অনেকে গীতাঞ্জলি আবাস যোজনায় ঘরের টাকা পাওয়ার পর ফের প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা তালিকায় জায়গা করে নিয়েছেন সফিক গাজি, খলিল গাজি ইত্যাদিরা। এমনই অভিযোগের লম্বা ফিরিস্তি দিলেন মনোহরপুকুর, পূর্বচক এলাকার মানুষ। অন্যদিকে স্বজন পোষনের গেরোয় পড়ে টালি, পেপারের ছাউনি দেওয়া ঘরে বাস করেও ঘরের তালিকায় জায়গা পেলেন না ইউনুস গাজি, হজরত গাজি, রহিম গাজি, সামাদ গাজিদের মতো ২৫-৩০ টি পরিবার। কংক্রিটের ছাদ আঁটা একতলা, দোতলা বাড়ি থাকা সত্ত্বেও প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা উপভোক্তার তালিকায় নাম রয়েছে ১৯০ জনের। এমন অভিযোগ ভুরিভুরি। যা নিয়ে শোরগোল পড়ে গেছে উত্তর ২৪ পরগনার হাসনাবাদ ব্লকের হাসনাবাদ গ্রাম পঞ্চায়েতের ২৫নং বুথের মনোহরপুকুর,পূর্বচক এলাকায়। এই বুথের বাসিন্দা মালেক গাজি তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য।অভিযোগ, তিনি অনেক অঙ্ক করেই দুটি বিষয়ে হিসাব কষে এগিয়েছেন সামনে পঞ্চায়েত নির্বাচনকে মাথায় রেখে। লুটের ভোট হলে অন্য কথা। আর যদি ভোটের মতো ভোট হয় সেক্ষেত্রেও নিশ্চিত মালেক।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বুথের এক বাসিন্দা জানালেন দুটি কথা। ১.এই বুথের ভোটার সংখ্যা ৮৮৯। আবাস যোজনায় উপভোক্তার সংখ্যা ১৯০ জন। গড়ে ৩ টি করে ভোট হিসাব করলে দাঁড়ায় ৫৭০ টি ভোট। যা কিনা মালেকের ঝোলায় নিশ্চিত। ২.কম করে প্রতি ঘর বাবদ ৫-১০ হাজার টাকা করে নিলে দশ লক্ষ থেকে কুড়ি লক্ষ টাকা তার কাটমানি বাবদ নিশ্চিত আয়। যা নিয়ে ইতোমধ্যে সরব হতে দেখা গেছে গ্রামবাসীদের।
অন্যদিকে বিডিও মোস্তাক আহমেদ জানান, অভিযোগ এলে তদন্ত করে দেখা হবে। যে সমস্ত অভিযোগ ইতোমধ্যে এসেছে সেগুলি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। অভিযোগের সত্যতা থাকলে নিশ্চিতভাবে তালিকা থেকে নাম বাদ যাবে।সংশোধনের কাজ চলছে। প্রকৃত উপভোক্তারাই ঘর পাবে।
Comments :0