BANGLADESH ROHINGYA CAMP

শরনার্থী শিবিরে আগুন লাগায় দুষ্কৃতিরা, রিপোর্টে জানাল বাংলাদেশ

আন্তর্জাতিক

rohingya camp cox bazar bangladesh bengali news

চলতি মাসের প্রথম দিকে বাংলাদেশের কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শরনার্থীদের ত্রাণ শিবিরে আগুন লাগে। আগুনে ভস্মীভূত হয় কয়েক হাজার অস্থায়ী ছাউনি। মঙ্গলবার সেই ঘটনার তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ করল বাংলাদেশ প্রশাসন। সেই রিপোর্টে অগ্নীকান্ডের জন্য অন্তর্ঘাতকে দায়ী করা হয়েছে। 

২০২৩ সালের ৫ মার্চ কক্সবাজারের ত্রাণ শিবিরে আগুন লাগে। প্রত্যক্ষদর্শীদের বিবরণ অনুযায়ী, দুপুর আড়াইটে নাগাদ ত্রাণ শিবিরের একাধিক জায়গায় একসঙ্গে আগুন লাগে। ত্রাণ শিবিরের মধ্যে বহু রান্নাঘর ছিল। আগুন লাগার ফলে সেই রান্নাঘরগুলিতে মজুদ গ্যাস সিলিন্ডারগুলিতে বিস্ফোরণ ঘটে। তারফলে আরও দ্রুত ছড়াতে শুরু করে আগুনের শিখা। 

এই ঘটনায় প্রাণহানীর কোনও ঘটনা না ঘটলেও অগ্নিকান্ডের জেরে ২৮০০’র বেশি অস্থায়ী ছাউনি পুড়ে যায়। আশ্রয়হীন অবস্থায় অন্যত্র সরানো হয় ১২ হাজারের বেশি শরনার্থীকে। ঘটনার গুরুত্ব বিবেচনা করে তদন্তের নির্দেশ দেয় বাংলাদেশ সরকার। তদন্তের জন্য গঠিত হয় ৭ সদস্যের একটি কমিটি। মঙ্গলবার কমিটির তরফে প্রাথমিক রিপোর্ট জমা দেওয়া হয়েছে। 

কমিটির তরফে আবু সুফিয়ান সংবাদসংস্থা রয়েটার্সকে জানিয়েছেন, ক্যাম্পের দখল নিতেই দুষ্কৃতি গোষ্ঠীরা এই কান্ড ঘটিয়েছে। এই সন্দেহ আরও জোরালো হয়েছে ঘটনার দিন একইসঙ্গে পাঁচ জায়গায় আগুন লাগায়। কক্সবাজার ক্যাম্পের দখল নিয়ে এর আগেও নিজেদের মধ্যে সংঘাতে জড়িয়েছিল বিভিন্ন দুষ্কৃতি গোষ্ঠী। 

রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, আগুন ছড়িয়ে পড়ার পরে ক্যাম্পের বাসিন্দাদের আগুন নেভাতে বাধা দেয় দুষ্কৃতিরা। পুলিশ এবং দমকলকে ঢুকতেও বাধা দেওয়া হয়। তারফলেই বিপুল ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। 

এই ঘটনাকে অন্তর্ঘাত বললেও, অগ্নিকান্ডের জন্য নির্দিষ্ট কোনও দুষ্কৃতি দলকে চিহ্নিত করতে পারেনি তদন্তকারী কমিটি। এই বিষয়ে তদন্তের জন্য যদিও সরকারকে সুপারিশ করেছে তাঁরা। 

২০১৭ সাল থেকে মায়ানমার থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসতে শুরু করেন রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর মানুষ। তাঁদের অভিযোগ, মুসলমান ধর্মাবলম্বী হওয়ার জন্য মায়ানমারের উগ্র সাম্প্রদায়িক বৌদ্ধদের হাতে নিপিড়ীত হতে হচ্ছে তাঁদের। একের পর এক রোহিঙ্গা প্রধান গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়ারও অভিযোগ উঠেছে মায়ানমারের উগ্র সাম্প্রদায়িক বৌদ্ধ সংগঠনগুলির বিরুদ্ধে। 

শরনার্থীদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য দক্ষিণ পূর্ব বাংলাদেশের কক্সবাজারে বিশ্বের বৃহত্তম ত্রাণ শিবির তৈরি করে বাংলাদেশ সরকার। সেখানে ১০ লক্ষের কাছে রোহিঙ্গা শরনার্থী আশ্রয় নেন। কিন্তু দুষ্কৃতিদের দৌরাত্বে ২০২১ এবং ২০২২ সালের মধ্যেই এই ক্যাম্পে ২২২ বার আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। 

Comments :0

Login to leave a comment