শ্রম অর্থনীতিবিদরা বলেছেন যে তাঁরা কেন্দ্রীয় সরকারের জাতীয় পরিসংখ্যান অফিস (এনএসও) এর পর্যায়ক্রমিক শ্রম শক্তি সমীক্ষা (পিএলএফএস) রিপোর্টের সঙ্গে একমত নন। পিএলএফএস দেখিয়েছে যে বেকারির হার কমছে।
সিপিআই(এম) সাধারণ সম্পাদক বলেছেন, ‘‘দেশের যুবসম্পদ ধ্বংসের অপরাধ চলছে।’’
২০২১-২২’র শ্রম শক্তি সমীক্ষা রিপোর্ট গত মার্চে প্রকাশিত হয়েছে। বেকারির হারকে ৪.১ শতাংশ দেখানো হয়েছে। ২০২০-২১’এ হার ছিল ৪.২ শতাংশ। শ্রম অর্থনীতিবিদ সন্তোষ মেহরোত্রা সংবাদমাধ্যমে বলেছেন, বেকারত্বের হার সম্পর্কে সিএমআইই’র অনুমান পিএলএফএস-এর তুলনায় বেশি নির্ভরযোগ্য। তিনি বলেছেন পিএলএফএস-এর মতো, সিএমআইই বেতনহীন পারিবারিক শ্রমে নিযুক্ত লোকদেরকে চাকরিরত হিসেবে গণনা করে না। যেমন মহিলারা দোকান চালানো বা পারিবারিক চাষের কাজে সাহায্য করেন। কিন্তু এই কাজ তাঁর স্বনির্ভর রোজগার নয়।
২০১৭-১৮ নাগাদ, পিএলএফএস অনুসারে ভারতে বেকারত্বের হার ৬.১ শতাংশ হয়, চার দশকের মধ্যে এটি সর্বোচ্চ- সেই আর্থিক বছরের। শ্রমিক স্বার্থে আন্দোলনের কর্মীরা বলছেন যে স্নাতক এবং দ্বাদশ শ্রেণি পাশ করে স্থায়ী চাকরি খুঁজেও পাচ্ছেন না, অস্থায়ী চাকরি নিতে বাধ্য হচ্ছেন বিরাট অংশ।
অস্থায়ী এবং অনিশ্চিত শ্রম নিযুক্তির ‘গিগ’ অর্থনীতি প্রসারিত হচ্ছে। যুবকরা ডেলিভারি কর্মী বা উবর ট্যাক্সির চালক হিসাবে কাজ করছেন। একাংশ মেরামত কর্মীর ঠিকা কাজ করছেন, এজেন্ট, ইলেকট্রিশিয়ান বা বিউটিশিয়ান হিসাবে কোম্পানিগুলির সাথে চুক্তিবদ্ধ হচ্ছে। তাঁদের কোনো নির্দিষ্ট বেতন নেই। একদিকে কর্পোরেট সংস্থাগুলি ধীরে ধীরে স্থায়ী চাকরিগুলোকে ‘গিগ’ কাজে রূপান্তরিত করছে। যুবকরা বেঁচে থাকার জন্য চুক্তি করতে বাধ্য হচ্ছে। তারা জানেন চাকরির নিরাপত্তা বা সামাজিক নিরাপত্তা নেই।
{ad]
অথচ একটি উন্নয়নশীল অর্থনীতিতে উৎপাদন এবং পরিষেবা খাতে আরও স্থায়ী চাকরি সৃষ্টির দিকে মনোনিবেশ করা প্রয়োজন যা কেন্দ্রের বর্তমান শাসকদল গুরুত্ব দিতে নারাজ। এই বিষয় কেন্দ্রকে নিশানা করেছেন সিপিআই(এম) সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি। সোশ্যাল মিডিয়ায় তিনি কেন্দ্রকে কটাক্ষ করে বলেন, ‘‘প্রায় প্রায় ৫ দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ বেকারত্বের হার! ভারতের জনসম্পদের অপরাধমূলক ধ্বংস চলছে!’’ তিনি বলেছেন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে এবং বৃদ্ধির চাহিদা বাড়াতে আমাদের সরকারি বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। পরিকাঠামো নির্মাণে সরকারি উদ্যোগ নিতে হবে। কর্মহীনতা কমাতে হবে।’’
Comments :0